জাজিরায় কলেজছাত্রের মৃত্যু নিয়ে রহস্য

প্রকাশ | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২১:২৩

শরীয়তপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

 

শরীয়তপুরের জাজিরায় পুলিশের মারধরে পাভেল শেখ (১৯) নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তার স্বজনদের। তবে পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে,  তাকে কেউ মারেনি। মৃগী রোগ থেকে তার মৃত্যু হতে পারে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার বিকেনগর ইউনিয়নের আনন্দবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত পাভেল শেখ উপজেলার বিকেনগর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর পূর্ব কাজিকান্দি গ্রামের রব শেখের ছেলে। তিনি সরকারি বিকেনগর বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পাস করেন।

স্থানীয় ও নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাভেল শেখ ও তার চাচাতো ভাই শান্ত শেখ মোটরসাইকেল নিয়ে বিকেনগর ইউনিয়নের আনন্দবাজারের কাছে সড়কে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন। এ সময় জাজিরা থানার একটি গাড়ি এসে সেখানে থামে। গাড়ি থেকে কয়েকজন পুলিশ নেমে নুরজ্জামান পাভেল ও শান্তর প্যান্টের পকেটে হাত দিতে চাইলে বাধা দেন তারা। এতে পুলিশ পাভেল শেখকে মারধর করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

পুলিশ পাভেলকে তাদের গাড়িতে করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে  কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আজ সকালে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাভেলেরে মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়।

পাভেলের বাবা আব্দুর রব শেখ বলেন, ‘পুলিশ তাকে মেরেছে এমন সংবাদ পেয়ে ছুটে গিয়ে দেখি সে অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে আছে।’

পুলিশ বলছে পাভেলের মৃগী রোগ ছিল, সে কারণেই মারা গেছে- জানালে আব্দুর রব শেখ বলেন, ‘সব মিথ্যা কথা। পাভেলের কোনো মৃগী রোগ ছিল না। সে সুস্থ ছিল।’

পাভেলের মা ফাহিমা বেগম বলেন, ‘আমার কলেজ পড়–য়া ছেলে ভালো ছিল। পুলিশ তার কাছে গাড়ির কাগজপত্র চাইলে দিতে না পারায় মার দেয়। আমার ছেলেকে বুকে ধরে  থাপ্পড় দেয়। তখন অসুস্থ হয়ে মারা যায় সে।’ তিনি দোষী ব্যক্তিদের বিচারের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।

সরকারি বিকেনগর বঙ্গবন্ধু কলেজের ছাত্র ছিলেন পাভেল। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমাদের কলেজ থেকে ২০১৭ সালে এইচএসসি পাস করে পাভেল। ওর মৃত্যু যদি স্বাভাবিক না হয়ে থাকে তাহলে দোষীদের বিচার দাবি করছি।’

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে পাভেলের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।  মারধরের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তদন্তের রিপোর্ট ঢাকা পাঠানো হয়েছে।

পাভেলকে পুলিশের মারধরের অভিযোগ নাকচ করে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘শুনেছি ওর মৃগী রোগ ছিল। ওতেই তার মৃত্যু হতে পারে।’

শরীয়তপুর পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন জানান, পাভেলকে কেউ মারধর করেনি। পুলিশ তার পকেট তল্লাশি করতে গেলে হঠাৎ পাভেল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তার পরিবার  অভিযোগ করলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৮সেপ্টেম্বর/মোআ)