কষ্টের হারে এবারও ফসকে গেল শিরোপা
কষ্টের হারে এবারও ফসকে গেল শিরোপা। শিরোপা জয়ের একেবারে কাছাকাছি গিয়েও শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হতে পারল না বাংলাদেশ। শুক্রবার এশিয়া কাপের ফাইনাল ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে তিন উইকেটে হেরে গেল টাইগাররা। এশিয়া কাপে এবার তৃতীয়বারের মতো রানার্স আপ হলো বাংলাদেশ। আর সপ্তমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত। ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ছয়টি বহুজাতিক টুর্নামেন্টে ফাইনাল খেলে শিরোপা বঞ্চিত হলো বাংলাদেশ।
দুবাই ইন্টরান্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে এদিন বাংলাদেশের দেয়া ২২৩ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের একেবারে শেষ বলে জয় তুলে নেয় ভারত। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ছয় রান। তখন তাদের হাতে ছিল তিন উইকেট।
এমন সময় মাশরাফি বিন মুর্তজা বল তুলে দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে। ওভারের প্রথম বল থেকে এক রান নেন কুলদীপ যাদব। দ্বিতীয় বলে এক রান নেন কেদার যাদব। তৃতীয় বলে দুই রান নেন কুলদীপ যাদব। চতুর্থ বলটি ডট হয়। পঞ্চম বলে এক রান নেন কুলদীপ যাদব। শেষ বলে এক রান নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন কেদার যাদব।
ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন রোহিত শর্মা। ৩৭ রান করেন দিনেশ কার্তিক। ৩৬ রান করেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান ২টি, রুবেল হোসেন ২টি, মাশরাফি বিন মুর্তজা ১টি, নাজমুল ইসলাম অপু ১টি ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১টি করে উইকেট নেন।
এদিন ইনিংসের পঞ্চম ওভারে ভারতের ওপেনিং জুটি ভাঙে বাংলাদেশ। বোলিংয়ে এসেই শিখর ধাওয়ানকে ফেরান নাজমুল ইসলাম অপু। সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন শিখর ধাওয়ান। ১৪ বল খেলে ১৫ রান করেন তিনি। ইনিংসের অষ্টম ওভারে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ বানিয়ে আম্বাতি রায়ডুকে ফিরিয়ে দেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মুর্তজা।
ইনিংসের ১৭তম ওভারে রুবেল হোসেনের বলে নাজমুল ইসলাম অপুর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন রোহিত শর্মা। তিনি করেছেন ৪৮ রান। এরপর স্বস্তির ব্রেক থ্রু এনে দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৩১তম ওভারে দিনেশ কার্তিককে এলডিব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন তিনি। তিনি করেন ৩৭ রান। ৩৭তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ধোনি। তিনি করেন ৩৬ রান।
৪৮তম ওভারে রুবেল হোসেনের বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ হন রবীন্দ্র জাদেজা। অবশ্য প্রথমে আম্পায়ার আউট দেননি। কিন্তু রিভিউ নিয়ে সফল হয় বাংলাদেশ। ৪৯তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ হন ভুবনেশ্বর কুমার।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৮.৩ ওভারে ২২২ রান সংগ্রহ করে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১২১ রান করেন লিটন দাস। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে লিটন দাসের এটি প্রথম সেঞ্চুরি।
লিটন দাসের সঙ্গে ওপেনিংয়ে ১২০ রানের পার্টনারশিপ গড়েন মেহেদী হাসান মিরাজ। ব্যক্তিগত ৩২ রানে সাজঘরে ফেরেন মিরাজ। সৌম্য সরকার করেছেন ৩৩ রান। বাকি সব ব্যাটসম্যানের রান দুই অঙ্কের নিচে। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে কুলদীপ যাদব ৩টি, কেদার যাদব ২টি, যুজবেন্দ্র চাহাল ১টি ও জ্যাসপ্রীত বুমরাহ ১টি করে উইকেট ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: তিন উইকেটে জয়ী ভারত।
বাংলাদেশ ইনিংস: ২২২ (৪৮.৩ ওভার)
(লিটন দাস ১২১, মেহেদী হাসান মিরাজ ৩২, ইমরুল কায়েস ২, মুশফিকুর রহিম ৫, মোহাম্মদ মিথুন ২, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৪, সৌম্য সরকার, মাশরাফি বিন মুর্তজা ৭, নাজমুল ইসলাম অপু ৭, মোস্তাফিজুর রহমান ২, রুবেল হোসেন ০*; ভুবনেশ্বর কুমার ০/৩৩, জ্যাসপ্রীত বুমরাহ ১/৩৯, যুজবেন্দ্র চাহাল ১/৩১, কুলদীপ যাদব ৩/৪৫, রবীন্দ্র জাদেজা ০/৩১, কেদার যাদব ২/৪১)।
ভারত ইনিংস: ২২৩/৭ (৫০ ওভার)
(রোহিত শর্মা ৪৮, শিখর ধাওয়ান ১৫, আম্বাতি রায়ডু ২, দিনেশ কার্তিক ৩৭, মহেন্দ্র সিং ধোনি ৩৬, কেদার যাদব ২৩*, রবীন্দ্র জাদেজা ২৩, ভুবনেশ্বর কুমার ২১, কুলদীপ যাদব ৫*; মেহেদী হাসান মিরাজ ০/২৭, মোস্তাফিজুর রহমান ২/৩৮, নাজমুল ইসলাম অপু ১/৫৬, মাশরাফি বিন মুর্তজা ১/৩৫, রুবেল হোসেন ২/২৬, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১/৩৩)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: লিটন দাস (বাংলাদেশ)।
প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ: শিখর ধাওয়ান (ভারত)।
(ঢাকাটাইমস/২৯ সেপ্টেম্বর/এসইউএল)