হাতিরঝিলের মামলায় বিএনপির সাত নেতার আগাম জামিন
উসকানিমূলক বক্তব্য এবং পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে হাতিরঝিল থানায় করা মামলায় আগাম জামিন পেয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির সাত নেতা। মামলাটিতে পুলিশের প্রতিবেদন দেয়ার আগ পর্যন্ত তাদের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ফখরুল ছাড়া যারা জামিন পেয়েছেন তারা হলেন- ড. আব্দুল মইন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আমান উল্লাহ আমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।
বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুল হাফিজ ও বিচারপতি কাশেফা হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
বিএনপি নেতাদের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘সরকার শেষ সময়ে মৃত্যু মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে, বিদেশে থাকলেও মামলা দেয়। একের পর এক ভৌতিক মামলা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। ঘটনা ঘটে নাই, ঘটনার বাস্তবতা নাই মামলা দিয়ে যাচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, সরকার একদিকে বলছে তারা নির্বাচনে বিরোধীদলকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। অন্যদিকে শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে যাচ্ছে।
জয়নুল আবেদীন বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন মামলা নেই, ভারতেও আমরা দেখি নাই। পাকিস্তানেও নাই। এমনকি স্বৈরাতান্ত্রিক দেশেও নাই। কিন্তু এখানে ভৌতিক মামলা দেয়া হচ্ছে।
‘এটা ভৌতিক মামলার একটি। একটা জনসভা চলছিল, বিশাল জনসভা, সরকার দেখে ভীত স্বন্ত্রস্ত হয়ে গেছে। জনগণের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য, শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে, হাজার হাজার মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে।
জয়নুল বলেন, নিম্ন আদালতগুলো সরকারের করায়ত্বে রয়েছে। তবে আমাদের বিশ্বাস সর্বোচ্চ আদালতে আমরা বিচার পাব। সেই লক্ষে আমরা শীর্ষ নেতাদের সর্বোচ্চ আদালতে সারেন্ডার করিয়েছি। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনেছে। আদালত প্রতিবেদন জমা দেয়ার চার সপ্তাহ পর আত্মসমার্পণ করতে বলেছেন।’
গত ১ অক্টোবর হাতিরঝিল থানায় সরকারবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য এবং পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মির্জা ফখরুলসহ ৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করে পুলিশ।
মামলায় দলটির কেন্দ্রীয় নেতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী ও যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমানকেও আসামি করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই এই মামলায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছেন।
মামলায় পুলিশ বলছে, বিএনপি কারাবন্দী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করে। সেখানে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সরকারবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য দেন।
মামলায় বলা হয়, বিএনপির এসব নেতার এমন বক্তব্যের পর গতকাল রাত আটটার দিকে হাতিরঝিল থানার মগবাজার রেলগেট এলাকায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং জামায়াতের ছাত্রশিবিরের ৭০ থেকে ৮০ জন নেতা–কর্মী জড়ো হন। তাঁরা রাস্তায় যান চলাচলে বাধা দেন। পুলিশ জড়ো হওয়া নেতা–কর্মীদের সড়ক অবরোধ না করতে অনুরোধ করে। কিন্তু পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করে তাঁরা পুলিশকেই হত্যার উদ্দ্যেশ্যে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। সেখানে দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং একটি বাস ভাঙচুর করেন। প্রতিরোধের চেষ্টা করলে তাঁরা লাঠি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মারধর শুরু করেন, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। মামলায় বলা হয়, ভাঙচুর করা গাড়িগুলো আত্মরক্ষার্থে দ্রুত চলে যাওয়ায় গাড়ির নম্বর সংগ্রহ করতে পারেনি পুলিশ।
ঢাকাটাইমস/০৩অক্টোবর/এমএবি/এমআর