ট্রাম্পের ভরাডুবি হতে পারে মধ্যবর্তী নির্বাচনে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:৩২ | প্রকাশিত : ০৪ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:২৭

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন হতে যাচ্ছে ৬ নভেম্বর। এই নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ক্রমান্বয়ে তলানির দিকে যাচ্ছে। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটদের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে মার্কিন নাগরিকদের মধ্যে। নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা বিজয়ী হলে বিপদ বাড়তে পারে ট্রাম্প প্রশাসনের।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন দু’বছর হলো। ৬ নভেম্বর মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। চার বছর অন্তর অন্তর নভেম্বরে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কথিত এই নির্বাচন মার্কিন প্রেসিডেন্টের চার বছর মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

এই নির্বাচনে মার্কিনিরা কংগ্রেসের নতুন সদস্য নির্বাচিত করবে। কিন্তু এই ভোট প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্ষমতার বাকি সময়টাতে কিভাবে প্রভাব ফেলবে। কংগ্রেস মার্কিন সরকারের জন্য আইন তৈরি করে। যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং সিনেট নামে দুটি কক্ষ আছে।

কারা নির্বাচিত হবেন?

৬ নভেম্বর নির্বাচনে মার্কিন ভোটাররা মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ) এবং সিনেট সদস্যরা নির্বাচিত করবেন। এই দুই কক্ষকে সম্মিলিতভাবে কংগ্রেস বলে।

হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং সিনেট সদস্যরা আইন প্রণয়ন ও পাশ করতে একসঙ্গে কাজ করে। সিনেট সদস্যদের সিনেটর বলে। প্রেসিডেন্টের পছন্দের সরকারি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও বিচারকদের নিয়োগ নিশ্চিত করার ক্ষমতাও সিনেটরদের থাকে।

কংগ্রেসের দুই কক্ষেই ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান পার্টির দখলে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থিতরাই কংগ্রেসের অধিকাংশ সদস্য।

তবে এবার ডেমোক্র্যাট দল মনে করছে, নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে তাদের দল হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের নিয়ন্ত্রণ পাবে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে। এমনটা হলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের যেসব পরিকল্পনা রয়েছে তা বাতিল বা বিলম্বিত হতে পারে।

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ) ৪৩৫টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইলে ডেমোক্র্যাটদের অধিকাংশ সিটে জয়লাভ করতে হবে। এর জন্য রিপাবলিকানদের কাছ থেকে কমপক্ষে ২৩টি আসন কেড়ে নিতে হবে ডেমোক্র্যাটদের।

তবে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে জয়ী হওয়াটা ডেমোক্র্যাটদের জন্য খুব একটি কঠিন হবে না। কারণ চলতি বছর রিপাবলিকানদের বৃহৎ একটি অংশ হাউস ত্যাগ করছেন। তাই ডেমোক্র্যাটদের জন্য একটি বিশাল সুযোগ রয়েছে।

হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের প্রতিনিধিরা নানা কারণে পদত্যাগ করছেন। কেউ রাজনীতি থেকে অবসরে যাচ্ছেন, কেউ বা আরো উচ্চ পদে যাচ্ছেন। তাদের কেউ ট্রাম্পবিরোধী, আবার কেউ কেউ তাকে সমর্থন করছেন। অনেকেই আছেন ভোট দেয়া এড়াতে অফিস ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

সিনেটেও রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণ। তাই এটি নজর দেয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ। সিনেটের ১০০টি আসনের মধ্যে ৩৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে। সিনেটের দখল নিতে হলে ডেমোক্র্যাটদের দুটি আসন রিপাবলিকানদের কাছ থেকে কেড়ে নিতে হবে। মাত্র নয়টি রিপাবলিকান সিনেট আসনে প্রতিযোগিতা হবে। বাকি আসনগুলো রিপাবলিকানদের দখলেই থেকে যাবে মনে করা হচ্ছে।

সিনেট রিপাবলিকানদের দখলে আর হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ ডেমোক্র্যাটদের দখলে থাকলে কি ঘটবে?

এক কথায় বলা যায় ‘গ্রিডলক’ বা জট সৃষ্টি হবে।সরকার অচল হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকবে অনেক বেশি।বিরোধীদের সঙ্গে সরকার মতের মিল হবে খুব কম ক্ষেত্রেই। সরকার তখনই অচল হবে যখন কংগ্রেস দেশ জুড়ে সরকারি কার্যক্রমে অর্থায়ন করতে ব্যর্থ হবে।

কে জিতবে?

যদি জরিপকে প্রাধান্য দেয়া হয় তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই ডেমোক্র্যাটরা এগিয়ে আছে। তবে কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, চলতি বছর ওয়েভ ইলেকশন বা কোনো দলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার দেখা মিলতে পারে। ডেমোক্র্যাটরা অধিকাংশ আসনে জয়ী হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ইতিহাস ইঙ্গিত দিচ্ছে, মধ্যবর্তী নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজয় হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধ(১৮৬১-৬৫) চলাকালীন সময় থেকে এখন পর্যন্ত যত হোয়াইট হাউসের ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্টের দল মধ্যবর্তী নির্বাচনে গড়ে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে ৩২ আসন এবং সিনেটে ২টি আসন খুইয়েছেন। জরিপে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কম পয়েন্ট রিপাবলিকান প্রার্থীদের সমর্থনে প্রভাব ফেলতে পারে এবং ডেমোক্র্যাটদের শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে।

আধুনিক সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প সবচেয়ে অজনপ্রিয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার পক্ষে সমর্থন রয়েছে মাত্র ৪০ শতাংশ মার্কিন নাগরিকের। তবে এবারের নির্বাচনে ‘পিঙ্ক ওয়েভ’ এর কথাও ভুলে গেলে চলবে না। চলতি বছর মার্কিন নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নারীরা প্রার্থী হওয়ার পিছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে।

কিছু প্রার্থী বলছেন, ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন পরাজিত হওয়ার ক্ষতিপূরণ হতে পারে। ট্রাম্পের নীতির প্রতি ক্ষুব্ধ হওয়া অন্যতম কারণ।

অন্য দিকে, রিপাবলিকানদের প্রতি ভোটারদের সমর্থন রয়ে যেতে পারে কারণ মার্কিন অর্থনীতি এখন ভালোর দিকে। গত বছর আমেরিকানদের পারিবারিক আয় ৩.২ শতাংশ বেড়েছে। বেকারত্বের হার কমছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টুইট বার্তায় বলেছিলেন, ‘এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি’।

(ঢাকাটাইমস/৪অক্টোবর/এসআই)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে বিস্ফোরক আতঙ্ক, সন্দেহভাজন আটক

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম পর্বের ভোটগ্রহণ শেষ 

ইরানে হামলায় অংশ নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র: ব্লিঙ্কেন

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এখনই প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা নেই: ইরানি কর্মকর্তা

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনায় বিশ্ববাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম

ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়ার প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো

ইরানে হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্কবার্তা দিয়েছিলো ইসরায়েল: মার্কিন কর্মকর্তা

পাকিস্তানের জাপানি নাগরিকদের গাড়ি লক্ষ্য করে আত্মঘাতি বোমা হামলা, হতাহত ৫

ইরানে প্রধান বিমানবন্দরে পুনরায় ফ্লাইট চালু

৩টি ইসরায়েলি ড্রোন ধ্বংস করল ইরান

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :