সৌদি প্রবাসীদের নির্বিচারে আটক ও ফেরত পাঠানো হচ্ছে

সীমান্ত খোকন, মধ্যপ্রাচ্য ব্যুরো
 | প্রকাশিত : ০৯ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:২৩

সৌদি আরবের পুলিশ নির্বিচারে বৈধ-অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার করে দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ১০ দিনে প্রায় ৫০০ বাংলাদেশিকে দেশে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় অনেকটা আতঙ্ক বিরাজ করছে সৌদি প্রবাসীদের মধ্যে। অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এমনিতেই দেশটিতে প্রবাসীদের বিশেষ করে নতুন আসা শ্রমিকদের কাজ পাওয়া কিংবা টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। কাজ না পেয়ে তাদের অনেকে মরুভূমিতে তাঁবু খাটিয়ে রাত কাটাচ্ছেন, অনাহার-অর্ধাহারে থাকছেন। এখন আবার গ্রেপ্তার আতঙ্ক।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক থেকে জানা গেছে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর ৮০ জন, ৩ অক্টোবর ১৪৪ জন ও ৪ অক্টোবর ফিরেছেন ১৭০ জন। এ ছাড়া বিভিন্ন ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন আরও শতাধিক শ্রমিক।

তারা সৌদি আরবে বৈধ ছিলেন দাবি করে ফেরত যাওয়া প্রবাসীদের অভিযোগ, কোনো ধরনের অভিযোগ ছাড়াই তাদের ধরে কারাগারে পাঠায় সৌদি পুলিশ। কিছুদিন জেল খাটিয়ে পরে দেশে পাঠানো হয় তাদের।

কিন্তু সৌদিতে বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের কোনো সাহায্য করেনি বলেও অভিযোগ শ্রমিকদের।

এভাবে দেশে ফেরত যাওয়ায় এখন দিশেহারা এসব শ্রমিক, বিশেষ করে যারা নতুন এসেছিল। তাদের ভাষ্য, ‘ধারদেনা করে সৌদি গিয়েছিলাম। এখন আমাকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়ায় আমি বড় বিপদে পড়েছি। পাওনাদারদের ভয়ে আমি বাড়িতে যেতে পারব না।’

পুরনো প্রবাসীরা বলছেন, হঠাৎ করে এভাবে তাদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়ায় তারা পরিবার ও সংসার সামলাতে হিমশিম খাবেন। কেন তাদের ফেরত পাঠানো হলো তা বুঝতে পারছেন না দীর্ঘদিন ধরে সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

নাসির উদ্দিন নামে কুমিল্লা জেলার এক প্রবাসী জানান, বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা ‘সফর’ জেলে গেলেও বন্দি বাংলাদেশি প্রবাসীদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। উল্টো প্রবাসীদের তিরস্কার করতেন। সফর জেল হলো আটক প্রবাসীদের দেশে পাঠানোর আগে যেখানে বন্দি রাখা হয়।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহকারী পরিচালক তানভীর আহমেদ বলেন, সৌদি পুলিশ কেন এভাবে বৈধ প্রবাসীদের ধরে দেশে পাঠাচ্ছে তা তাদের বোধগম্য নয়। এ বিষয়ে সৌদিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ভালো বলতে পারবে বলে জানান তিনি।

কিন্তু এই প্রতিবেদক সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সেখান থেকে কোনো সাড়া পাননি। দূতাবাসের প্রেস উইং, কনস্যুলার সার্ভিস ও ইনকেস ইমার্জেন্সি সেকশনে একাধিকবার ফোন করলেও কেউ ফোন ধরেননি।

অর্থনৈতিক মন্দায় পড়া মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশটি বেশ কিছুদিন ধরে চেষ্টা করছে এ থেকে উত্তরণের। এরই মধ্যে মন্দার ধাক্কায় বহু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। মন্দা কাটাতে সরকার একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে যার বেশ কটি প্রবাসীদের প্রতিক’ল। অভিবাসন ব্যয় বাড়িয়েছে। গত কয়েক মাসে একাধিক দফায় ৩৬টি কাজ প্রবাসীদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে দেশটিতে প্রবাসীদের কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে আসছে। এর সঙ্গে মড়ার ওপর খাঁড়া ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে গ্রেপ্তার ও দেশে ফেরত পাঠানো।

(ঢাকাটাইমস/৯অক্টোবর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রবাসের খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :