‘মসজিদে মসজিদে মারামারির জন্য তাবলিগ নয়’

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
| আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০১৮, ২২:৩৬ | প্রকাশিত : ০৯ অক্টোবর ২০১৮, ২২:৩৩

চার দিনের পথযাত্রা সম্পন্ন করে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতি বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান, শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম, শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। তাবলিগের চলমান দ্বন্দ্ব-সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার উদোগ্যে আলেম-জনতা ঐক্য গড়ার আহ্বানে, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতি বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ঐতিহাসিক পথযাত্রার সর্বশেষ দিন ৯ অক্টোবর মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ পুরান বাস স্ট্যান্ডের সমাপনী জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মাদক যুবসমাজকে নষ্ট করে দিচ্ছে মন্তব্য করে আল্লামা মাসঊদ বলেন, বাংলাদেশ একটি ধর্মপ্রাণ দেশ। এদেশের যুবকেরা ধর্মপ্রেমী। ইসলাম, ধর্ম ও দ্বীনের প্রতি এতো টান অন্যান্য দেশের যুবকদের মাঝে কমই দেখা যায়। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে কিছু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তি আমাদের দেশের উন্নতি সহ্য করতে না পেরে আমাদের যুব সমাজকে মদ-নেশার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মাদকাসক্ত করে তাদের জীবনকে নষ্ট করার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। যদি যুবকদের জীবন নষ্ট করে দিতে পারে, তাহলে বাংলাদেশ আর কখন বিশ্বেরদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।

দুর্নীতি দেশের উন্নতি নষ্ট করে দেয় দাবি করে আল্লামা মাসঊদ বলেন, দুর্নীতি একটি সামাজিক ব্যাধি। সমাজের সর্বত্র দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এদেশের এই উন্নয়নের ধারা আঁকড়ে রাখতে হলে আমাদেরকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের আওয়াজটা উঠাতে হবে, যাতে করে মানুষ সচেতন হতে পারে।

হজরত ইলিয়াস রহ. উম্মতের মধ্যে বিভক্তি করার জন্যে তাবলিগ জামাত তৈরি করেননি দাবি করে আল্লামা মাসঊদ বলেন, হজরত ইলিয়াস রহ. ইসলামের প্রচার-প্রসার, মানুষের দ্বীনের হেফাজত, জনসাধারণকে উলামায়ে কেরামের সাথে জুড়িয়ে দেয়ার জন্যে তাবলিগ জামাত তৈরি করেছেন। রাসুলুল্লাহ্ সা.-এর উম্মতের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করার জন্যে নয়। কাউকে নাস্তিক-মুরতাদ বলে ফতওয়া দেয়া জন্যে নয়। মসজিদে মসজিদে মারামারি জন্যে ইসলাম আসেনি। ইসলাম প্রেম ও ভালোবাসার ধর্ম। ইসলাম মানুষকে ভালোবাসতে শিখায়। দ্বীনকে মহব্বতের নামে মসজিদে মসজিদে মারামারি করে, মসজিদ থেকে কাউকে বের করে দেয়ার জন্যে ইসলাম আসেনি।

বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা চেয়ারম্যান বলেন, তাবলিগের মাধ্যমে সারাবিশ্বে সুন্দর একটা দাওয়াতি কাজ চলছিল। তাবলিগের সাথীরা পৃথিবীর সর্বত্রে দ্বীনের প্রচার-প্রসার করছিল। কিছুদিন আগে যারা একই দস্তরখানায়, এই প্লেইটে বসে একসাথে খানা খেয়েছে, এখন তাদের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি হওয়ার করণে তারা ইহুদি-খ্রিস্টানদের সহ্য করতে পারে কিন্তু তার অপর পক্ষের সাথীকে সহ্য করতে পারে না।

আল্লামা মাসঊদ বলেন, মানুষের মধ্যে পরস্পরের প্রেম-ভালোবাসাকে ইসলাম পছন্দ করে। বিভাজন-বিদ্বেষকে নয়। রাসুল সা. বলেছেন, ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে- ‘আল্লাহর জন্যে মানুষকে ভালোবাসা’। তাবলিগের মধ্যকার দ্বন্দ্ব ভুলে আলেম-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাবলিগের কাজকে বেগবান করার আহ্বান জানান তিনি।

কওমি মাদ্রাসা স্বীকৃতি প্রদান করায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে আল্লামা মাসঊদ বলেন, কওমি মাদরাসা শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি প্রদান করে শেখ হাসিনা প্রমাণ করে দিয়েছেন তিনি ইসলাম ও উলামায়ে কেরামকে ভালোবাসেন। শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি না থাকার কারণে আমাদের শিক্ষার্থীরা বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারছিল না, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে এখন বিশ্বের দরবারে শিক্ষিত হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছেন।

সমাপনী অনুষ্ঠান সভাপতিত্ব করেন সৈয়দ শামছুল ইসলাম। বক্তব্য দেন মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মাওলানা আব্দুর রহীম কাসেমী, মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাইফী, মাওলানা ইমদাদুল্লাহ কাসেমী, মাওলানা আবু সুফিয়ান যাকী, মুফতি তাজুল ইসলাম কাসেমী, মাওলানা সদরুদ্দিন মাকনুন, মাওলানা আইয়ুব আনসারী, মাওলানা আব্দুল আলীম ফরীদী, মাওলানা সাঈদ নিজামী, মাওলানা আনোয়ার হুসাইন, মাওলানা আবদুল্লাহ প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/০৯অক্টোবর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ইসলাম বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :