‘জাতীয় ঐক্য’ নিয়ে বিকল্পধারায় ভাঙন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:৫২ | প্রকাশিত : ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:২৪
ফাইল ছবি

বিএনপির সঙ্গে ঐক্যের আলোচনা চলার সময় এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্পধারায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। দলের সভাপতির সিদ্ধান্তের বাইরেই একটি অংশ এই ঐক্যের আলোচনায় থাকায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি। বহিষ্কার করেছেন দুইজন নেতাকে।

শনিবার দলের সহ সভাপতি শাহ আহাম্মেদ বাদল এবং কৃ‌ষি বিষয়ক সম্পাদক জানে আলম হাওলাদার‌কে দল‌বিরোধী কাযর্কলাপের জন্য পদ থেকে স্থায়ীভাবে ব‌হিষ্কার করা হয়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। এতে বলা হয়, গত ১৬ সেপ্টেম্বর দুই নেতার প্রাথ‌মিক সদস্যপদসহ সকল পদ স্থ‌গিত করা হয়। বিকল্পধারার মহাস‌চিব আবদুল মান্নান বিকল্পধারার গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ৫ এর ৫:২ গ ধারা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর আজ তাদের দুইজনকে চূড়ান্তভাবে দল থেকে ব‌হিষ্কার করা হয়।

এই বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের কারণ জানানো না হলেও দলের সূত্র জানায়, বিএনপির সঙ্গে ঐক্য নিয়ে বি. চৌধুরীর নানা শর্ত আছে। এসব শর্ত পূরণ না হলেও বহিষ্কার করা দুই নেতা ঐক্য গড়তে আগ্রহী। এ কারণেই দুই নেতাকে দল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।

বিকল্পধারার বহিষ্কৃত নেতা শাহ আহাম্মেদ বাদল গণমাধ্যমকর্মীদেরকে বলেন, ‘বি. চৌধুরী, মাহী বি. চৌধুরী যা করছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বিকল্পধারা থেকে বের হয়ে এসে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারাও আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। আমরা একমত আছি।’

মাহী বি. চৌধুরী অবশ্য সাংবাদিকদেরকে বলেন, দুই জনকে বহিষ্কারে দলে ভাঙন ধরার কারণ নেই। কারণ, তাদের দলে তিনি, তার বাবা বি. চৌধুরী ও মহাসচিব আবদুল মান্নান ছাড়া আর কেউ নেতা নন।’

বিএনপির সঙ্গে ঐক্যের আলোচনায় বি. চৌধুরী জামায়াত ত্যাগের শর্ত দিয়েছেন। বিএনপি এই শর্ত পূরণ না করলেও এই ঐক্যের আলোচনা এগিয়ে নিচ্ছেন ড. কামাল হোসেন এবং বি. চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের একাংশ।

এই আলোচনায় বি.চৌধুরীকে নিয়ে নানা গুঞ্জন ছিল আগে থেকেই। আর আজ শনিবার তা প্রকাশ হয়ে গেল। আলোচনার জন্য ড. কামাল হোসেন সবাইকে আমন্ত্রণ জানালেও বি. চৌধুরীকে না জানিয়ে বৈঠকস্থল পাল্টানো হয়। আর বি. চৌধুরী ও মাহী ড. কামালের বাসা থেকে ফিরে আসেন।

পরে কামাল হোসেন ও বি.চৌধুরীর পক্ষ থেকে আলাদা সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

বি. চৌধুরী ছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিব। ২০০১ সালে বিএনপি সরকারে আসার পর তিনি রাষ্ট্রপতি হন। আর তার ছেড়ে দেয়া আসনে সংসদ সদস্য হন ছেলে মাহী। তবে ২০০২ সালে বি. চৌধুরীকে অসম্মানজনকভাবে রাষ্ট্রপতির পদ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। আর ২০০৪ সালে বি. চৌধুরী গঠন করেন বিকল্পধারা।

২০০৭ সালের বাতিল হওয়া নবম সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্যে যায় বিকল্পধারা। তবে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ এই ঐক্য ভেঙে দেয়।

এর মধ্যে ২০১৬ সালের শেষে তৃতীয় শক্তি হওয়ার ঘোষণা দিয়ে বিকল্পধারার সঙ্গে আ স ম আবদুর রবের জেএসডি, আবদুল কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এবং মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠন হয়। যদিও পরে কাদের সিদ্দিকী সরে যান।

সে সময় দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে বিপজ্জনক আখ্যা দিয়েও পরে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য গড়ার আলোচনা চালায় যুক্তফ্রন্ট। এটা স্পষ্টত যে, তৃতীয় শক্তি হওয়ার বাসনা ত্যাগ করেছে যুক্তফ্রন্ট।

ঢাকাটাইমস/১৩অক্টোবর/টিএ/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :