ছাত্রদের কক্ষে তালা লাগিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ উধাও!

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:৩০

গাইবান্ধায় শাহিন স্কুল অ্যান্ড কোচিং সেন্টারে আবাসিক ছাত্রদের কক্ষে তালা লাগিয়ে আটকে রেখে পরিচালক ও স্কুল শিক্ষরা উধাও হয়ে গেছেন। প্রতিষ্ঠানটির ছাত্র-ছাত্রীরা রবিবার সকালে স্কুলে এসে তালা ঝুলানো দেখতে পায় এবং আবাসিক শিক্ষার্থীদের চিৎকার শুনতে পায়। পড়ে আশপাশের লোকজন এসে স্থানীয় প্রশাসনকে খবর দেয়। পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করে। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ওই প্রতিষ্ঠানের পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা শহরের মাস্টারপাড়ার একটি বহুতল ভবনে ২০১৫ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে শাহিন স্কুল অ্যান্ড কোচিং সেন্টারের পরিচালনা শুরু করে। স্কুলটি টাঙ্গাইল থেকে পরিচালিত করা হয় জেনে অভিভাবকরা উৎসাহ নিয়ে তাদের ছেলে-মেয়েদের ভর্তি করান এবং তারা নিয়মিত স্কুলের সব পাওনাদি পরিশোধ করেন। বছরের শেষে হঠাৎ করে স্কুল কর্তৃপক্ষ কেন এমনটা করলো তা তারা বুঝে উঠতে পারছেন না। উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন চিন্তিত।

উদ্বিগ্ন অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শরণাপন্ন হন উপজেলা ইউএনও অফিসে। সেখানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রওনক জাহান তাদের আশ্বস্ত করেন যে, বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে একটি ব্যবস্থা করবেন।

এ বিষয়ে ৪নং পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদ আহম্মেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, পুরো বিষয়টি ঘটেছে হঠাৎ করে। পরিচালকের দায়িত্বে থাকা মাজহারুল ইসলাম হিমেলকে আমি এবং আমার পৌর চেয়ারম্যান একাধিকবার ফোন করেছি, কিন্তু তিনি ফোন ধরছেন না। আমরা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে বিশেষ করে পিএসসি, জেএসসি ছাত্র-ছাত্রীর পরীক্ষার ব্যপারটি নিশ্চিত করবো এবং অন্য ছাত্র-ছাত্রীরাও যেন পরীক্ষা দিতে পারে সে বিষয়টি দেখবো।

জেএসসি পরিক্ষার ছাত্রী অভিভাবক সোনা মিয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমরা আমাদের মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। সামনে জেএসসি পরীক্ষা, এমন সময় স্কুলের এমন অবস্থায় আমার মেয়ের মনোবল নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

পিএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রের অভিভাবক লাভলু মিয়া বলেন, আমরা শিক্ষা নিয়ে সবসময় চিন্তিত থাকি যে, ছেলে আমার কেমন রেজাল্ট করবে। এর মধ্যে এমন একটি ঘটনা আমাদের ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবিয়ে তুলেছে। আমি প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, তারা যেন আমার মেয়েসহ সব ছাত্র-ছাত্রীর পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেয়।

এ ব্যাপারে স্কুলের পরিচালক মাজহারুল ইসলাম হিমেলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

জেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম মন্ডল ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমি নিজে মাস্টারপাড়ার শাহিন স্কুল অ্যান্ড কোচিং সেন্টারে গিয়েছি, সেখানকার শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের আশ্বস্ত করেছি। সেখানে পঞ্চম শ্রেণির সাতজন শিক্ষার্থী আছে। তাদের আমি পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করে দেব। আর বাকি অষ্টম শ্রেণি ছাড়া যারা রয়েছে তাদের অভিভাবকদের বলেছি তারা যেন শহরের যেকোনো প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি করিয়ে নেয়। এ ব্যাপারে প্রয়োজন হলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে বলেছি। আর অষ্টম শ্রেণির যারা আছে তারাও জেএসসি পরীক্ষা দিতে পারবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তিনি বলেন, আমি শাহিন স্কুল অ্যান্ড কোচিং সেন্টারের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাইবান্ধ সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আরশেদুল হক অভিযোগের বিষয়টি ঢাকাটাইমসকে নিশ্চিত করেন।

(ঢাকাটাইমস/১৪অক্টোবর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :