সেই হাওয়া ভবন এখন ‘অ্যাজোরা’

আশিক আহমেদ ও আউয়াল খাঁন, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৫ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:২৩

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তুমুল আলোচিত হাওয়া ভবনটি আর নেই। সেটি ভেঙে নির্মাণ করা হয়েছে বহুতল ভবন, নামও পাল্টে ফেলা হয়েছে এর।

ভবনটির নতুন নাম ‘অ্যজোরা’। এক সময়ের রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়ানো ভবনটি এখন পুরোপুরি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্ট। আর সেখানে রাজনীতিকদের ঢুকতেই এখন মানা।

বনানীর ১৩ নম্বর সড়কের ৫৩ নম্বর বাড়িটি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের পুরোটা সময় ছিল আলোচনার তুঙ্গে। সে সময় বিএনপির সংসদ সদস্য আলী আজগর লবির ভাড়া করা ভবনটিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমান বসতেন। আর প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি সমান্তরাল একটি সরকার সে সময় গড়ে উঠেছিল বলে সমালোচনা আছে।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট হামলা মামলার রায়েও হাওয়া ভবনের বিষয়টি উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, এই ভবনেই হয়েছে হামলার ছক। এখানে বসেই হয়েছে প্রথম পরিকল্পনা যে, শেখ হাসিনাকে মেরে ফেলতে হবে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে।

আদালতে জঙ্গি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানের বয়ানে এসেছে সেই বৈঠকের কথা। জানান হামলার তিন দিন আগে হাওয়া ভবনে তারেক রহমান, সে সময়ের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবার, শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি ও বেশ কয়েকজন জঙ্গি সদস্য। আর সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় গ্রেনেড হামলা চালানোর।

আর ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের জনসভায় চালানো হয় হামলা, নিহত হয় ২৩ জন, আহত হয় কয়েকশ। আর ১৪ বছর পর গত ১০ অক্টোবর এই রায়ে যে ৪৯ জনকে সাজা দেয়া হয়, তাদের মধ্যে বিএনপির নেতা সাত জন। এদের মধ্যে তারেক রহমানসহ বিএনপির চার নেতার যাবজ্জীবন কারাদ- এবং বাবর, পিন্টুসহ তিন জনকে দেয়া হয়েছে মৃত্যুদ-। সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউককেও দেয়া হয়েছে কারাদ-।

এই রায়ের পর আবারও হাওয়া ভবনের কথা সামনে এসেছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ অবশ্য বরাবরই হাওয়া ভবনের কথা বলে বিএনপিকে আক্রমণ করে। আর বিএনপি এই বিষয়টি নিয়ে সেভাবে কথাও বলতে চায় না।

রায়ের পরে বনানীর সেই বাড়ি দেখতে গিয়ে আগের রূপে তাকে পাওয়া যায়নি। সাড়ে পাঁচ কাঠা জমির ওপর দ্বিতল ভবন ভেঙে তৈরি করা হয়েছে নয়তলা ভবন।

ভবনটির মালিক আমেরিকা প্রবাসী হুয়ারুন আহমেদ ও আশেক আহমেদ। হুয়ারন থেকেই ‘হাওয়া’ নামকরণ করা হয়েছিল। নতুন ভবনটি নির্মাণ করেছে বিল্ডিং টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়াস লিমিটেড (বিটিআই)। তারা ভবনটির আগের নাম পাল্টে দিয়েছে।

বাড়িটি সম্পর্কে জানতে চাইলে এর নিরাপত্তাকর্মী ও কেয়ারটেকারারা হেসে বলেন, ‘মালিক এখন এই বাড়িতে আর কোনও রাজনৈতিক লোক ভাড়াও দেন না।’

নতুন ভবনটি নির্মাণ শুরু হয় ২০১১ সালের জানুয়ারিতে, শেষ হয় ২০১২ সালের ডিসেম্বরে। ভবনকর্মীদের একজন জানান, বাড়ির মালিক সেখানে থাকেন না। তবে তিনটি ফ্ল্যাট কখনও ভাড়াও দেন না। মালিকরা দেশে আসলে এখানে থাকেন।

বাকি ফ্ল্যাটগুলো ভাড়া দেয়া হয়েছে ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদের। ভবন তৈরির পর কোনো রাজনৈতিক নেতাকে ভাড়াও দেয়া হয়নি। একজন কর্মী জানান, ভবিষ্যতে ভাড়া দেয়ার সম্ভবনাও কম।

কারণ কী- জানতে চাইলে ওই কর্মী বলেন, ‘মালিক অনেক ভুগছে। বলেছে, আর না।’

আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কোনো নজরদারি আছে কি না- এমন প্রশ্নে ওই কর্মী বলেন, ‘আমি গত প্রায় চার বছর ধরে এখানে আছি, কখনও কাউকে দেখি না।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বনানী থানার বিএম ফরমান আলী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘হাওয়া ভবনের ব্যাপারে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই। শুনেছি বাড়িটির মালিক সেটি ভেঙে অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি করেছেন।’

ঢাকাটাইমস/১৫অক্টোবর/এএকে/এএ

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

চার অঞ্চলে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে

বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএনপির নিন্দা 

কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীদের গাবতলিতে স্থানান্তর করা হবে

বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগই পরাজিত হয়েছে: মজনু

বোনের পর চলে গেল শিশু তাওহিদও, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১

রাজধানীতে কিশোর গ্যাংয়ের লিডারসহ ২০ সদস্য আটক, অস্ত্র উদ্ধার

‘আর সহ্য করতে পারছি না’ বলেই সাত তলা থেকে লাফিয়ে তরুণের মৃত্যু

এনএসআই’র নতুন পরিচালক সালেহ মোহাম্মদ তানভীর

বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য ১৬৫০ টন পেঁয়াজ কিনবে ভারত সরকার

যারা আমার মায়ের হাতে খাবার খেত, তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে: প্রধানমন্ত্রী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :