গ্রেনেড হামলায় আ.লীগ: বক্তব্যে অটল রিজভী

প্রকাশ | ১৬ অক্টোবর ২০১৮, ১৬:৪৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
মঙ্গলবার নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় জনসভায় গ্রেনেড হামলায় আবার আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। তিনি এই মামলার রায় বাতিল করে নতুন করে তদন্ত এবং বিচারের দাবিও জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।

বিএনপি সরকারের আমলে চালানো এই গ্রেনেড হামলা মামলায় দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ চার জনের যাবজ্জীবন এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ তিন নেতার ফাঁসির আদেশ এসেছে।

বিএনপি এই রায়কে সরকারের হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছে। আর রিজভীর অভিযোগ, ঘটনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তদন্ত না করেই রায় দেয়া হয়েছে। আর এই হামলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের সঙ্গে প্রকৃত ঘটনা মিলছে না।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভা হওয়ার কথা ছিল মুক্তাঙ্গনে। কিন্তু পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি না পাওয়ায় তা বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সরিয়ে নেয়া হয়। যদিও ২০ আগস্ট গভীর রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমতি দেয়ার কথা জানানো হয়।

তবে রিজভীর দাবি, পুলিশ ১৯ আগস্টই অনুমতি দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সাথে প্রকৃত ঘটনা মিলছে না।

মুক্তাঙ্গনে অনুমতি নিয়ে কেন বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ সমাবেশ করল- ১৪ বছর পর এই প্রশ্ন আবারও সামনে আনেন রিজভী।  বলেন, ‘মুক্তাঙ্গনে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগ তিন দিন ধরে প্রচার প্রচারণা চালাল, আর ২১ আগস্ট সমাবেশের দিন হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদল করে কেন দলীয় অফিসের সামনে গেল? এতে কারো বুঝতে বাকি থাকে না যে, এর মধ্যে কোন দূরভিসন্ধি কাজ করেছে।’

মামলার বিচারিক কার্যক্রমে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়নি উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘অথচ ফরমায়েসী রায় চাপিয়ে দেয়া হলো। আইন, বিচার ও প্রশাসনকে প্রতিহিংসা পূরণের হাতিয়ার করে আওয়ামী লীগের ক্রমান্বয়ে দানবীয় আত্মপ্রকাশ জাতির জীবনপ্রবাহ রুদ্ধ করার অভিঘাত।’

‘সুতরাং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় বাতিল করতে হবে এবং আওয়ামী লীগ নেতা ও নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী কাহার আকন্দকে বাদ দিয়ে নিরপেক্ষভাবে পুণঃতদন্ত করে পুনরায় বিচার কার্যক্রম শুরু করতে হবে।’

‘বিএনপি আমলে ছিল অবারিত গণতন্ত্র’

‘আওয়ামী দুঃশাসনের সরকার বাংলাদেশকে রিমান্ডে দিয়ে রেখেছে’- এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন দেশ পুলিশি রাষ্ট্র ছিল না। অবারিত ছিল গণতন্ত্র। সমুন্নিত ছিল মানুষের কথা বলার অধিকার।’

‘কিন্তু বর্তমানে ফ্যাসিবাদী সরকার বিভিন্ন কালো আইন করে ইতোমধ্যে জনগণের  কণ্ঠরোধের মাধ্যমে বাকশাল কায়েম করে  রেখেছেন। কি দু্ভাগ্য স্বাধীন এই বাংলাদেশের!’

আওয়ামী লীগ সত্যকে মিথ্যা করা আর মিথ্যাকে সত্য হিসেবে তুলে ধরে বলেও দাবি করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘জনগণকে তারা এতটাই অপাংক্তেয় মনে করে যে, তাদের ধোঁকাবাজি জনগণ টের পাবে না।’

বিএনপির যুগ্নমহাসচিব মোয়াজ্জম হোসেন আলাল, সালেমা রহমানসহ দলের অন্যান্য নেতারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকাটাইমস/১৬অক্টোবর /এসআর/ডব্লিউবি