মাহবুব তালুকদারের পাঁচ দফার বিরোধিতায় সহকর্মী

প্রকাশ | ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ২১:২০ | আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ২২:০৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার যে পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন তার বিরোধিতা করছেন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম। বলেছেন, এগুলো সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন কবিতা। বলেন, ‘নির্বাচনের সময় জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসি অধীনে নিয়ে আসার প্রস্তাব সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’

‘এছাড়া নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। এছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসার বিষয়টি ইসির এজেন্ডায় আসার মতো প্রস্তাব নয়। সুতরাং তার প্রস্তাবগুলো অযৌক্তিক।’

সম্প্রতি মাহবুব তালুকদার নির্বাচন কমিশনে আলোচিত হয়ে উঠেছেন দুটি কমিশন সভা বর্জন করে। ভোটে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করে গত ৩০ আগস্ট তিনি নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলেন। সম্প্রতি কমিশন সভায় কথা বলতে না পারাসহ চারটি কারণ দেখিয়ে আবার নোট অব ডিসেন্ট দেন তিনি, বর্জন করেন কমিশন সভা।

এরপর বিএনপি এই নির্বাচন কমিশনারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। যদিও গোপনীয়তার শপথ ভঙ্গ করার অভিযোগ এনে তাকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে ১৪ দল।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ দিতে আচরণবিধি কঠোরভাবে প্রয়োগেরও আশ্বাস দিয়েছেন  কবিতা। সংসদ বহাল থেকে নির্বাচন হবে যেক্ষেত্রে সংসদ সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে প্রভাব বিস্তার করলে কী পদেক্ষপে নেবেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ দেয়ার জন্য আচরণবিধি সুশ্চিতভাবে পতিপালন করব।’

‘আচরণবিধি কেউ না মানলে অবশ্যই জবাবদিহিতার মধ্যে আনা হবে। যদি আচরণবিধি সঠিকভাবে আমরা প্রয়োগ করি, প্রার্থীরা ফলো করি, তাহলে সমস্যা হবে না। আর কেউ যদি তা ভঙ্গ করে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থার সুযোগ থাকবে কমিশনের।’

‘আইন সবার জন্য সমান। তাই আচরণবিধির বাইরে কেউ কিছু করলে নির্বাচন কমিশন অবশ্যই পদেক্ষেপ নেবে।’

তফসিলের আগেই ফিরব: মাহবুব তালুকদার

বাক স্বাধীনতা ‘কেড়ে নেয়ার’ অভিযোগ তুলে কমিশন সভা বর্জন করা নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ভোটের তফসিল ঘোষণার আগেই দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন।

হঠাৎ করেই যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই নির্বাচন কমিশনার। আগামী ২০ অক্টোবর ১০ দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন তিনি।

নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন এই নির্বাচন কমিশনার। বলেন, ‘আমার ছেলে কানাডা থেকে আমেরিকায় আসবে। আমি ঢাকা থেকে আমার মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছি, আমার ভাইও সেখানে আসবে। পরিবারের সবাই সেখানে একত্রিত হব। একমাস আগেই আমি টিকিট কেটে রেখেছি।’

তফসিল ঘোষণার আগেই দেশে ফিরবেন জানিয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমি তফসিলের আগেই চলে আসব। সে জন্যই আমি এই সময়ে যাচ্ছি।’

আগামী সপ্তাহে আরেকটি সভা করবে নির্বাচন কমিশন। এই বৈঠকে তফসিলের তারিখ চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে। সে সময়ও দেশের বাইরে থাকবেন মাহবুব তালুকদার। ফলে সভায় অংশ নিতে পারছেন না এই নির্বাচন কমিশনার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘সে সময়তো আমি দেশের বাইরে থাকব। এটা কোন বিষয় নয়।’

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে জবাব আসে, ‘আমি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতটা মিস করব। তবে দেশে এসে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আবার দেখা করার চেষ্টা করব। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ঢাবির সমাবর্তনের দিনও দেখা হয়েছে।’

আগামী ২০ অক্টোবর যু্ক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে মাহবুব তালুকদারের ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে। ব্যক্তিগত সফরে ২০ থেকে ৩০ অক্টোবর সেখানে থাকবেন তিনি। ৩১ অক্টোবর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

গত ১১ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব শাহ আলম মাহবুব তালুকদারের বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে একটি চিঠি প্রধান হিসাব কর্মকর্তা, কেবিনেট সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সব দপ্তরে পাঠান।

(ঢাকাটাইমস/১৭অক্টোবর/জেআর/ডব্লিউবি)