ছেঁউড়িয়ায় সাধু-ভক্তদের স্রোত

প্রকাশ | ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ১৩:৪৮ | আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ১৩:৫৫

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

সকালে বাল্যসেবার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় লালন আখড়াবাড়ীতে দ্বিতীয় দিনের সাধুদের কার্যক্রম। চলছে গ্রামীণ মেলাও।

লালন স্মরণোৎসবের প্রথম দিন মঙ্গলবার দুপুর থেকেই আখড়াবাড়ির বাউল আঙিনা কানায় কানায় ভরে উঠে।

পুরো এলাকার সবটুকু ফাঁকা স্থান ভরে গেছে। ছোট ছোট করে আস্তানা গেড়েছেন বাউল ও ভক্তরা। বুধবার সকালে ভিড় যেন জনস্রোতে পরিণত হয়েছে। এ এক সাধুদের মিলন মেলা।

সকালে রাখালসেবা বা বাল্যসেবা নিয়ে শুরু হয় গান। পুরো মাজার চত্বর একতারা আর ডুগির শব্দে মুখর হয়ে উঠে। সাধুসঙ্গের পর রাতে বাউলেরা অধিবাস শুরু করেন। সাঁইজির আরাধনায় মত্ত।

সাধুর হাটের সদাই কিনে পরমাত্মায় আত্মা মেলাবে সাঁইজি প্রেমের রসিকরা। ধূপের ধোঁয়ায় পবিত্র হচ্ছে সাঁইজির ধাম। ঢাকের বাড়িতে মন দোলাচ্ছে খ্যাপা-খ্যাপিরা।

১২৭ বছর আগে ধরা থেকে দেহলীলা সাঙ্গ করেছেন বাউলিয়ানার শুদ্ধ পুরুষ লালন ফকির। মানবধর্মের দিশারী ফকির লালনের দেহাবয়ব নেই দুনিয়ায়, তবে ভক্ত-অনুরাগীদের মননে আজও তিনি জীবিত।

গান, দর্শন আর সৃষ্টিতত্ত্বে লালন মানেই মানুষের জয়গান। মানুষ-ই লালন দর্শনের কেন্দ্র। ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ পাবি’ এমন ভজন তত্ত্ব অন্য সাধে মেলান ভার। মানুষেই সৃষ্টি, মানুষেই স্রষ্টা, তা লালনের মতো আর কেউ সহজ করতে বলতে পারেনি এ ধরায়।

বাউল আফজাল শাহ জানান, সাঁইজির দর্শন পেতে এখানে আসা। এখানে আসলে মনে প্রাণের তৃপ্তি পাওয়া যায়। আমরা গুরুদের মুখ থেকে শুনি সাঁইজির বানী।

রহমত আলী ফকির জানান, সাধু-বাউলদের নাড়ীর টানেই সবাই আসে। সাঁইজির ভক্তি করতে পারার সৌভাগ্য কজনের ভাগ্যে জোটে? তার প্রেমেই এখানে আসি।

লালন মাজারের খাদেম মহম্মদ আলী শাহ জানান, তিরোধান দিবসকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর ভক্তরা এ উৎসব পালন করতে সমবেত হয়ে থাকে। এবারো তার কোন ব্যতিক্রম হয়নি। এসময় আঁখড়া বাড়ি দেশ-বিদেশ থেকে আগত লক্ষ প্রানের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে।

 ঢাকাটাইমস/১৭অক্টোবর/প্রতিনিধি/ওআর