জাফরউল্লাহর হাসপাতালে অবহেলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:৪৫

জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ এবং চাঁদাবাজির মামলার পর এবার তার গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় হাসপাতালটির দুই প্যারামেডিক চিকিৎসককে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে আশুলিয়ায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের হাসপাতালে এই নবজাতক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। আটকরা হলেন প্যারামেডিক চিকিৎসক শিল্পী খাতুন ও মনি আক্তার।

নবজাতকের বাবা পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার ফার্মেসি ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান জানান, গত ১৩ অক্টোবর তার স্ত্রী লাইজু বেগমকে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি করেন। কয়েক দফা আল্ট্রাসাউন্ট ও নানা পরীক্ষার পর প্রসূতি ও তার শিশু সুস্থ আছে বলে জানায় চিকিৎসকরা। তারা সিজারে সন্তান প্রসবের কথা বললেও চিকিৎসকরা রাজি ছিলেন না। তারা জানান, জাফরুল্লাহর অনুমতি ছাড়া কোন অবস্থাতেই সিজার করা সম্ভব নয়।

গত রাতে প্রসব বেদনা প্রকট হলে আবার সিজার করানোর অনুরোধ করেন স্বজনরা। কিন্তু তখন গাইনি ওয়ার্ডে কর্তব্যরত শিক্ষানবিশ চিকিৎসক নাহিদ মোস্তাদির ও শাকিল তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন।

পরে শিল্পী খাতুন, মনি আক্তার, জুয়েনা ও তাসলিমা নামে চার প্যারামেডিক চিকিৎসকসহ ছয় নার্স প্রসবের জন্য লাইজুকে স্ত্রীকে নিয়ে যান। আর ভোরে নবজাতক মারা গেছে বলে মনিরুজ্জামানকে জানান নার্সরা।

লাইজু বেগমের অভিযোগ, স্বাভাবিক প্রসবের জন্য নার্স ও চিকিৎসকরা দীর্ঘক্ষণ তার পেটে চাপ দিতে থাকেন। তিনি প্রচ- ব্যথায় তিনি ছটফট করলেও তারা কান দেননি। এ সময় শিক্ষানবিশ ছাড়া কোন চিকিৎসক ছিলেন না।

নবজাতকের বাবার অভিযোগ, চিকিৎসকদের অবহেলার কারণেই তার সন্তান পৃথিবীর আলো দেখতে পারেনি। অভিযোগের সত্যতা জানতে গেলে পুলিশ ও সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ফটক ভেতর থেকে তালাবদ্ধ দেখা যায়। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও তালা খুলে না দেওয়ায় নিরাপত্তাকর্মী শফিকুলকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

হাসপাতালটির গাইনি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক তামান্না দিলরুবা নবজাতকের মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতাল কোন প্রাইভেট ক্লিনিক না যে এখানে বেশি টাকার বিনিময়ে রোগীদের জিম্মি করে সিজার করব। ঐ নারীর নরমাল ডেলিভারির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল। তবে দুর্ঘটনাবশত তার নবজাতক মারা গেছে। যার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

রোগীর মুমুর্ষূ সময়ে সিজার করানোর জন্য কেন ডা. জাফরউল্লাহর অনুমতি কেন লাগবে সে ব্যাপারে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি এই চিকিৎসক।

ঘটনার সময় গাইনি বিভাগে উপস্থিত দুই চিকিৎসক নাহিদ মোস্তাদির ও শাকিলকে হাসপাতালে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাবেদ মাসুদ জানান, ‘প্রাথমিক তদন্তে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও কর্তব্যরত চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। এ ঘটনায় দুই প্যারামেডিক চিকিৎসককে আটক করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের নাম উল্লেখসহ থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

ঢাকাটাইমস/১৭অক্টোবর/আইআর/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :