জেএসসি পরীক্ষা

বাংলায় ভালো করার সহজ উপায়

মো. মশিয়ার রহমান
 | প্রকাশিত : ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ১৩:৪৫

আসছে ১ নভেম্বর বাংলা পরীক্ষার মাধ্যমে তোমাদের জেএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। এই বছর থেকে বাংলা ১ম পত্র ও বাংলা ২য় পত্রের সমন্বয়ে বাংলা নামে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। শিক্ষার্থীদের চাপ কমানোর জন্যই মূলত সিলেবাস কমানো হয়েছে। বাংলা বিষয়ের সাজেসন্স ও পরামর্শ দেওয়া হল।

সৃজনশীল প্রশ্ন:

গদ্য, কবিতা থেকে মোট ০৬টি প্রশ্ন থাকবে। গদ্য থেকে ২টি, কবিতা থেকে ২টি করে মোট ৪টি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। প্রতিটিতে (ক-১, খ-২, গ-৩,ঘ-৪)=১০ নম্বর করে মোট নম্বর: ৪০।

ক. জ্ঞানমূলক অংশ: প্রদত্ত নম্বর-১ [পাঠ্যবই থেকে একবাক্যে সঠিক উত্তর দেবে; এখানে কোনো বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণের দরকার নেই]

খ. অনুধাবনমূলক অংশ: প্রদত্ত নম্বর-২ [এখানে ২টি প্যারা করা যেতে পারে। [প্রথম প্যারাটি হবে একবাক্যের। প্রশ্নে যা চাইবে এককথায় উত্তরের আসল বস্তু জ্ঞান আকারে লিখবে একবাক্যে আর ২য় প্যারায়/অংশে থাকবে সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ, যা সর্বোচ্চ ৩-৪ বাক্যে শেষ করতে হবে]। মনে রাখা প্রয়োজন, অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তরের ক্ষেত্রে সব মিলে সর্বোচ্চ ৫ বাক্যে শেষ করতে হবে।

গ. প্রয়োগমূলক অংশ: প্রদত্ত নম্বর-৩ [এখানে উত্তরের তিনটি প্যারা বা অংশ করা যেতে পারে। [এখানে তিনটি অংশ বা প্যারা করে লিখতে পার। অংশগুলো হলো। *উত্তরের শুরুতেই মূল উত্তরটুকু অর্থাৎ জ্ঞানমূলক আকারে একবাক্যে উত্তর লেখার চেষ্টা করবে। এরপর প্রশ্নে চাওয়া বিষয়ের সঙ্গে মূল পাঠ্যের সম্পর্ক নিরূপণ থাকবে, যা ব্যাখ্যায় অংশ বলা যেতে পারে। প্রয়োগের ৩য় অংশ অবশ্যই সম্পর্ক নিরূপণের ক্ষেত্রে প্রকৃত সমস্যা সমাধান করতে হবে। ১ম প্যারা ১ বাক্য: ২য় প্যারা ৩/৪ বাক্য আর ৩য় প্যারা- ৭/৮ বাক্য হতে পারে। এখানে সর্বোচ্চ ১২ বাক্য লিখতে পারবে।]

ঘ. উচ্চতর দক্ষতামূলক অংশ: প্রদত্ত নম্বর-৪ [এখানে তিনটি থেকে চারটি অংশ বা প্যারা করে লিখতে হবে। অংশগুলো হলো: উত্তরের শুরুতেই প্রশ্ন অনুযায়ী জ্ঞানমূলক অংশে একবাক্যে উত্তর লেখার চেষ্টা করবে।*দ্বিতীয় প্যারায় প্রশ্ন অনুযায়ী উদ্দীপক ধরে চিন্তন শক্তি ব্যাখ্যা করবে।*তৃতীয় প্যারায় উদ্দীপক ও মূলপাঠ্যের সম্পর্কগত আলোচনা করবে, সার্বিক বিশ্লেষণ করবে-সেক্ষেত্রে উদ্দীপক, মূলপাঠ্য বিষয় ও পারিপাশির্^ক ব্যবস্থার সঙ্গে মিল রেখে তোমার অনুভ‚তি/মতামত প্রকাশ করে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে। এখানে সর্বোচ্চ ১৫ বাক্য লিখতে পারবে।

** সৃজনশীলের ক্ষেত্রে প্যারা আকারে লেখা বাধ্যতামূলক নয়, তবে উত্তরের প্রাসঙ্গিকতা ঠিক রাখার জন্য প্যারা করা দোষের হবে না।

গুরুত্বপূর্ণ গদ্য

ক) বাংলা নববর্ষ খ) তৈলচিত্রের ভূত গ) এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম

ঘ) পড়ে পাওয়া ঙ) বাংলা নববর্ষ চ) ভাব ও কাজ

ছ) সুখী মানুষ

গুরুত্বপূর্ণ কবিতা

ক) দুই বিঘা জমি খ) আবার আসিব ফিরে গ) মানবধর্ম

ঘ) বঙ্গভূমির প্রতি ঙ) একুশের গান চ) রূপাই

ছ) নারী

রচনামূলক অংশ:

১.চিঠি/পত্র: পরীক্ষায় ২ টি পত্র থাকবে যে কোনো একটি লিখতে হবে। নির্ধারিত নম্বর ৫। এখানে সাধারণত ব্যক্তিগতপত্র এবং আবেদনপত্র থাকে। পত্র নিয়ম মেনে সুন্দর হাতের লেখায় লিখবে। তবে ব্যক্তিগত পত্রের চেয়ে আবেদন পত্র লেখাই বেশি সুবিধাজনক স্বল্পায়তনের হয়ে থাকে। চিঠি/ পত্রে যে নির্ধারিত নাম ও স্কুলের নাম উল্লেখ থাকবে তোমাকে অবশ্যই খাতায় সেটি ব্যবহার করতে হবে। চিঠি পত্রে নিজের নাম কিংবা স্কুলের নাম লেখা বাঞ্ছনীয় নয়।

# বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বন্ধুর নিকট একটি পত্র লেখ।

# কম্পিউটার শিক্ষার গুরুত্ব বর্ণনা করে ছোট বোনকে একটি পত্র লেখ।

# তোমার বন্ধুর মায়ের মৃত্যুতে সান্ত¡না জানিয়ে পত্র লেখ।

# ছাত্রকল্যাণ তহবিল থেকে সাহায্য চেয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট আবেদন।

# বিজ্ঞান ক্লাব গঠনের অনুমতি চেয়ে প্রধার শিক্ষকের নিকট আবেদন।

# শিক্ষা সফরে যাওয়ার অনুমতি চেয়েপ্রধার শিক্ষকের নিকট আবেদন।

# তোমার বিদ্যালয়ে নজরুল জন্মজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে একটি আমন্ত্রণ পত্র লেখ।

২.সারাংশ বা সারমর্ম: পরীক্ষায় ২ টি সারাংশ বা সারমর্ম থাকবে যে কোনো একটি লিখতে হবে। নির্ধারিত নম্বর ৫। গদ্যের আকারে সারাংশ আর কবিতার আকারে থাকে সারমর্ম। সারাংশ ও সারমর্ম সুন্দর হাতের লেখায় তিন থেকে চার বাক্যে শেষ করতে হয়। সারাংশ ও সারমর্ম মূলের এক তৃতীয় অংশ লিখতে হয়। কোনক্রমেই এটি বড় করে লেখা যাবে না।

# একজন মানুষ ভালো কি মন্দ..... মনুষত্বের।

# কোথা থেকে এসেছে .............. বাংলা ভাষার।

# আনন্দ প্রকাশ জীবনীশক্তির ........... মানুষের মনকে তৃপ্ত করে।

# বাঙ্গালী যেদিন ঐক্যবদ্ধ হয়ে .............. মৃত করে রাখে।

# সূর্যের আলোতে রাতের অন্ধকার কেটে যায় .............. আমরা মানুষ হয়ে উঠি।

# সাম্যের গান গাই .................... বিজয়-লক্ষী নারী।

# হে সূর্য! শীতের সূর্য .............. এক টুকরো সোনার চেয়েও মনে হয় দামি।

# এই যে বিটপী শ্রেণি হেরি হেরি সারি ........... নীচ প্রায় কার ঠাঁই নহে অবনত।

৩.ভাবসম্প্রসারণ: পরীক্ষায় ২ টি ভাবসম্প্রসারণ থাকবে যে কোনো একটি লিখতে হবে। নির্ধারিত নম্বর ৫। ভাবসম্প্রসারণ সাধারণত একটি গদ্য ও একটি কবিতা আকারে থাকে। কমপক্ষে তিনটি প্যারায় সুন্দর হাতের লেখায় লিখবে। ভাবসম্প্রসারণে কোন প্রকার ইংরেজিউদ্বৃতি ব্যবহার করা যাবে না। তবে প্রাসঙ্গিক উদাহরণ বা দৃষ্টান্ত প্রয়োগ করা যাবে। ভাবসম্প্রসারণে আয়তন নম্বর অনুপাতে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ধরাবাঁধা কোন নিয়ম নেই। তবে মূলভাব বজায় রেখে এবং সময়ের সাথে সঙ্গতি রেখে লেখার পরিধি নির্ধারণ করতে হবে।

# করিতে পারিনা কাজ........... পাছে লোকে কিছু বলে।

# জ্ঞানহীন মানুষ পশুর সমান।

# লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু।

# সঙ্গদোষে লোহা ভাসে।

# একতাই বল।

# বাংলার ইতিহাস এ দেশের মানুষের রক্তদিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস।

৪.প্রবন্ধ রচনা: ৩টি বিষয়ের মধ্যেযে কোন একটি বিষয় অবলম্বণে প্রবন্ধ রচনা করতে হবে। নির্ধারিত নম্বর ১৫। প্রবন্ধ রচনার কোন নির্ধারিত আকার আয়তন নেই। এখানে বিষয় সংশ্লিষ্ট উদ্বৃতি এবং কবিতার লাইন ব্যবহার রচনাকে আর বেশি আর্কষণীয় করে তোলে। অন্য সব প্রশ্নের উত্তর শেষে রচনাই লেখা ভাল।

# বাংলাদেশের ষড়ঋতু

# অধ্যবসায়

# দৈনন্দিন জীবনের বিজ্ঞান

# ছাত্র জীবনে দায়িত্ব ও কর্তব্য

# কর্মমুখী শিক্ষা

# বাংলাদেশের কৃষক

# মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর

বহুনির্বাচনী প্রশ্ন:

গদ্য ও কবিতা অংশ

গদ্য অংশ থেকে ৮টি, কবিতা অংশ থেকে ৮টি মোট ১৬ টি বহুনির্বাচনীপ্রশ্নের উত্তর করতে হবে। মূল বই বারবার পড়ে গুরুত্বপূর্ণ লাইনের নিচে দাগ দিয়ে রাখবে। গল্প, কবিতা, শব্দার্থ ও টীকা বারবার পড়বে। কবিতা, প্রবন্ধ বা লেখকের জন্মস্থান , জন্ম-মৃত্যু সাল, তার রচিত গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনার বা গ্রন্থের নাম মনে রাখবে। একটি গল্প বা কবিতার উৎস, প্রকাশ সাল, প্রকাশের পত্রিকা, কোন গল্প বা কবিতার মাঝে অন্য লেখক কবির উদ্ধৃতি, কোন মনীষীর নাম থাকলে তা গুরুত্বের সাথে মনে রাখতে হবে। বর্তমান ক্যাটগিরিতে যে তিনটি স্তর তোমাদের পার করতে হবে তা হলো:

ক) সাধারণ বহুনির্বাচনী অংশ: এ অংশ জ্ঞানভিত্তিক স্মৃতিনির্ভর। এ ক্ষেত্রে প্রশ্নগুলো কখনও প্রশ্ন আকারে আবার কখনও অসম্পূর্ণ বাক্য হিসেবে দেওয়া থাকে যা উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। বিকল্প উত্তর চারটি, যার মাত্র একটি সঠিক। এ বিভাগে জ্ঞান, অনুধাবন, প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতা এ চারটি উপবিভাগ বিদ্যমান থাকে। মূল বই বারবার পড়লে এখান থেকে ১০০% নম্বর পাওয়া সম্ভব।

খ) বহুপদী সমাপ্তিসূচক অংশ: এ ধরণের প্রশ্নের শুরুতে ৩ টি তথ্যভিত্তিক উপস্থাপন থাকে। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে পরে ৪টি প্রশ্ন তৈরি করা হয়, যার মান বর্ণে মুর্দ্রিত থাকে। এ প্রশ্নে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একাধিক উত্তর থাকে, যার উত্তর প্রদত্ত চারটি প্রশ্নে বিদ্যমান। অতি নিখুঁত ভাবে এখানে উত্তর করতে হবে তোমাদের। এই স্তরে অনুধাবন, প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতা যাচাই করা হয়।

গ) অভিন্ন তথ্যভিত্তিক অংশ: এখানে একটি উদ্দীপক পাবে, যার মাধ্যমে তোমাকে তথ্য সরবরাহ করা হবে। প্রশ্নগুলোর সঙ্গে এক অপরের মিল পাওয়া যাবে। ভয় পাবে না- ভাবলেই দেখবে এখানে সাধারণ বহুনির্বাচনী বা সমাপ্তিসূচক প্রশ্নই হয়ে থাকবে। এখান থেকে মূলত প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতাকে যাচাই করা হয়। উদ্দীপকটি ভালোভাবে পড়বে এবং মূল বইকে অনুসরণ করবে এ পর্বে নিশ্চিত ভালো পারবে।

ব্যাকরণ অংশ:

ব্যাকরণ অংশ থেকে ১৪টি বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটি প্রশ্নে সঠিক উত্তরে সরবরাহকৃত উত্তরপত্রে কালো কালির বল পয়েন্ট ভরাট করতে হবে। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১ করে সর্বমোট ১৪ নম্বর। ৮ম শ্রেণির “বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি” বই থেকে বহুনির্বাচনী প্রশ্ন আসবে। এ বইটি ভালভাবে অনুশীলন করলে এ অংশে ভালো করা সম্ভব।

মো. মশিয়ার রহমান: সহকারী শিক্ষক (বাংলা); বাংলাদেশ ব্যাংক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়; ফরিদাবাদ, ঢাকা।

ঢাকাটাইমস/১৮অক্টোবর/টিএমএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :