‘মইনুলকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে’

প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক প্রতিবাদ সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত নারী সাংবাদিকরা

সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক প্রতিবাদ সভায় এই হুঁশিয়ারি দেয় জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত নারী সাংবাদিকরা।

নারী সাংবাদিকদের পক্ষে বিবৃতি তুলে ধরেন নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু।

বলেন, ‘গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশনের একটি আলোচনায় অংশ নেন দৈনিক আমাদের অর্থনীতির জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সম্পাদক মাসুদা ভাট্টি এবং বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্ত।’

‘উপস্থাপক মিথিলা ফারজানা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনকে যুক্ত করার পর মাসুদা ভাট্টি তাকে একটি প্রশ্ন করতে চান এবং জানতে চান- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে আপনাকে শিবিরের একটি জনসভায় অংশ নিতে দেখা গেছে এবং সে কারণেই অনেকেই প্রশ্ন করেছেন যে, আপনি কি জামায়াতের প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে উপস্থিত থাকছেন কিনা?’

‘প্রশ্নটি শেষ করার আগেই ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে যান এবং বলেন- আপনার সাহসের প্রশংসা করতে হয়। তবে আমি আপনাকে একজন চরিত্রহীন বলতে চাই।’

কোনও রকম উস্কানি ছাড়াই তিনি মাসুদা ভাট্টিকে চরিত্রহীন বলেন এবং এর পরেই সাংবাদিক সমাজের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন যে, সাংবাদিকরা কি জিনিস সেটা তিনি জানেন। মাসুদা ভাট্টি অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে তাকে প্রশ্ন করেন এবং এরকম ন্যাক্কারজনক মন্তব্যের পরও তিনি এই ব্যক্তিকে কোনও কটূক্তি করেননি।’

নাসিমুন আরা আরও বলেন, ‘মাসুদা ভাট্টি একজন নারী বলেই সরাসরি তাকে চরিত্রহীন বলার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন মইনুল। মাসুদা ভাট্টিকে আক্রমণ করতে গিয়ে সব নারীকে অপমান করেছেন এবং এজন্য তার যথাযথ শাস্তি আমরা দাবি করছি।’

মঈনুল হোসেন ব্যক্তিগতভাবে মাসুদা ভাট্টির কাছে ক্ষমা চাইলেও সেই ক্ষমা যথেষ্ট নয় বলে উল্লেখ করে নাসিমুন আরা বলেন, ‘মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে তার অপরাধ স্বীকারপূর্বক নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে তিনি কখনও এরকম ব্যক্তি আক্রমণ থেকে বিরত থাকবেন। ’

প্রতিবাদ সভায় এক খোলা চিঠিতে মাসুদা ভাট্টি বলেন, ‘যুক্তিহীন মানুষই সাধারণত ব্যক্তিগত আক্রমণ করে এবং একজন নারীর ক্ষেত্রে বিষয়টি সব সময়ে তার চরিত্রকে নির্দেশ করে আক্রমণ করা হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য যে মইনুলও তার ব্যতিক্রম নন।’

তিনি আরো বলেন, ‘একটিটেলিভিশন টকশোতে লক্ষ লক্ষ দর্শকের সামনে করা মন্তব্য অগোচরে একটি ফোন করে ক্ষমা চাইলে হয় না। সেই বক্তব্য প্রত্যাহার করে ও অপরাধ স্বীকার করে সকল পক্ষের কাছে প্রকাশ্যে মার্জনা চাওয়াটা কাম্য। মইনুল প্রকাশ্যে মার্জনা প্রার্থনা করবেন সেটাই কাম্য।’

এসময় নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক পারভীন সুলতানা ঝুমা, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক সমিতির সভাপতি নাছিমা আক্তার সোমা, সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুমান আরা শিল্পী, মুন্নী সাহা, মিথিলা ফারজানা, নাসিমা খান মন্টি, শাহনাজ মুন্নী, ফারজানা রূপা, সুপ্রীতি ধর, আঙ্গুর নাহার মন্টি, ফারহানা মিলি, নাদিরা কিরণ, মুনমুন শারমিন শামস, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকাটাইমস/১৮অক্টোবর/এস/ডিএম