প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:৪৮

চারদিকে ঢাকের বাজনার সঙ্গে নাচছিলেন হাজারো মানুষ। কেউ কেউ দেবীর উদ্দেশে দিচ্ছিলেন উলুধ্বনি। আবার কেউ কেউ মায়ের বিসর্জনে অশ্রুসিক্ত। এমন উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন দিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এই বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হলো হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় আয়োজন শারদীয় দুর্গোৎসব।

শুক্রবার বিকেল চারটা থেকে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ওয়াইজঘাটের বিনা স্মৃতি স্নানঘাটে ঢাকা মহানগর পূজা কমিটির নেতৃত্বে প্রতিমা বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। বিজয়া দশমীর সকালে মণ্ডপে মণ্ডপে সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার দর্পণ বিসর্জন দেওয়া হয়। হিন্দু নারীরা দেবীর প্রতিমায় সিঁদুর পরিয়ে দিয়ে নিজেরাও একে অন্যকে সিঁদুর পরান। এরপরই বেজে ওঠে বিষাদের সুর।

বিসর্জনের উদ্দেশ্যে ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে করে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিও মেলাঙ্গন থেকে কেন্দ্রীয় বিজয়া শোভাযাত্রা বের হয়ে প্রতিমা পলাশীর মোড়ে আসে। কেন্দ্রীয় বিজয়া শোভাযাত্রায় যোগ দিতে ঢাকার বিভিন্ন মন্দির ও পূজামণ্ডপ থেকে শোভাযাত্রাগুলো পলাশী মোড়ে এসে জড়ো হয়। এরপর গান-ঢাকের তালে তালে নাচতে থাকেন সবাই। বেলা তিনটায় শোভাযাত্রা সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা হয়। সেখান থেকে প্রতিমা নিয়ে ট্রাকে করে ঢাকের তালের পাশাপাশি ‘দুর্গা মা-ই কি, জয়’ সেøাগান দিতে দিতে ঘাটের দিকে এগিয়ে যান বিভিন্ন বয়সী মানুষ।

প্রতিমা বহনকারী ট্রাকগুলো বিকেল চারটার মধ্যেই সদরঘাটে এসে জমা হয়। এরপর ট্রাক থেকে একে একে ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিমা। প্রতিমা বিসর্জনের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী চারদিকে জল ছিটিয়ে এবং আরও কিছু নিয়ম মেনে কাঁধে করে প্রতিমা নৌকায় তোলা হয়। নৌকায় করে প্রতিমা মাঝ নদীতে নিয়ে গিয়ে বিসর্জন দেওয়া হয়। বিসর্জনের সময় ঘাটে দাঁড়ানো হাজারো ভক্ত দেবী দুর্গার উদ্দেশ্যে উচ্চস্বরে নানা ধ্বনি দিতে থাকেন।

ভক্ত বিপ্লব দাস ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মন ভালো নেই। মা আসলেন, আবার দ্রুত চলে গেলেন। মায়ের জন্য খুব খারাপ লাগছে। আবার এক বছর পর দেখা মিলবে।’

প্রতিমা বিসর্জনের কেন্দ্রীয় শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ। পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা জানান, দর্পণ বিসর্জনের মাধ্যমে মূলত সকালেই দেবীর শাস্ত্রীয় বিসর্জন সম্পন্ন হয়। বিকেলে শুধু আনুষ্ঠানিক শোভাযাত্রা সহকাওে দেবী দুর্গা ও অন্যান্য দেব-দেবীর বিসর্জন দেয়া হয়।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যমতে, এবার সারাদেশে ৩১ হাজার ২৭২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৬ হাজার ৮০৪টি, চট্টগ্রামে ৪ হাজার ৫০৬টি, সিলেটে ২ হাজার ৩৪১টি, খুলনায় ৪ হাজার ৮৮৩টি, রাজশাহীতে ৩ হাজার ৫৪২টি, রংপুরে ৫ হাজার ৩৭১টি, বরিশালে ১ হাজার ৭২৪টি ও ময়মনসিংহ বিভাগে ২ হাজার ১০১টি। আর রাজধানী ঢাকায় এবার পূজা হয়েছে ২৩৪টি মণ্ডপে। গত বছর সারা দেশে ২৯ হাজার ৭৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং রাজধানীতে মণ্ডপের সংখ্যা ছিল ২২৫টি।

ঢাকা মহানগরীর ২৩৪টি মণ্ডপের মধ্যে ৯টি ছিল সবচেয়ে বড় মণ্ডপ। এগুলো হলো- ঢাকেশ্বরী মন্দির, রামকৃষ্ণ মঠ, কলাবাগান পূজামণ্ডপ, বনানীর মণ্ডপ, সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির, রমনা কালীমন্দির, উত্তরা সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট সনাতন সমাজকল্যাণ সংঘ ও বসুন্ধরা সার্বজনীন পূজামণ্ডপ।

(ঢাকাটাইমস/১৯অক্টোবর/এনআই/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :