ফেনীতে কালভার্ট বন্ধে ফসলের ক্ষতি

আরিফ আজম, ফেনী
 | প্রকাশিত : ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১১:০৭

ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নের নিজকুঞ্জরা এলাকায় তিনটি কালভার্ট বন্ধ করে পিএইচপি কারখানা নির্মাণ করা হয়েছে। এতে পানিবদ্ধ হয়ে জলাশয়ে পরিণত হয়েছে প্রায় ১০ একর ফসলি জমি। বছরের পর বছর আবাদ করতে না পেরে জমির মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। রাস্তাঘাট ডুবে, বাড়ি পানি উঠে জনদুর্ভোগে পড়েছে এলাকার হাজার হাজার মানুষ। এনিয়ে তারা জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্থ হলেও কোনো ফল হয়নি।

এলাকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্তদের সূত্রে জানা যায়, নিজকুঞ্জরা এলাকায় বিশাল এলাকাজুড়ে পিএইচপি কারখানার নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বিকল্প ব্যবস্থা না করেই তিনটি কালভার্ট বন্ধ করে দেয়া হয়। পানি নিষ্কশিত হতে না পেরে নিজকুঞ্জরা পশ্চিমপাড়া এলাকার তিনটি মাঠে প্রায় ১০ একর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে পানি উপচিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তা-ঘাট ও বসতবাড়ি।

সূত্র আরও জানায়, পিএইচপি কারখানা তৈরি করতে গ্রামীণ সড়ক দখল করা হয়েছে। ওই সড়কে থাকা বনবিভাগের শত শত গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কারখানার সামনে ফেলা হচ্ছে সেন্ড ওয়াশিং প্লান্টের বর্জ্য। এসব ঘটনায় এলাকাবাসী প্রতিবাদ করতে চাইলে চাঁদাবাজি মামলায় জড়িয়ে পুলিশি হয়রানির হুমকি দেয়া হয়।

ওই এলাকার বাসিন্দা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আবদুর রহমান ঢাকাটাইমসকে জানান, তার ৫৫ শতক জমি পানিবদ্ধতার কারণে অনাবাদি পড়ে আছে। এতে বোরো ও রবিসহ সবধরনের ফসল উৎপাদনে ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয় শেখ কামাল নামের এক ব্যক্তি জানান, জমিগুলো সারা বছর হাঁটু পরিমাণ পানিতে নিমজ্জিত থাকে। সামান্য বৃষ্টি হলে বাড়ি ও সড়ক তলিয়ে যায়। মাঝে মধ্যে বাড়ির সামনে রাস্তা কেটে অন্য ফসলি জমিতে পানি সরাতে হয়। গোয়াল ঘর নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চারটি গরু নিয়ে পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে থাকতে হয়।

দিদারুল আলম জানান, পিএইচপি কারখানায় ফাইলিংয়ের কারণে তার নবনির্মিত বাড়িটিতে ফাটল ধরেছে। যেকোনো সময় ধসে পড়ার আশংকা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম রায়হান জানান, গত কয়েক মৌসুম এসব জমিতে ফসল হয় না। তিনি বিষয়টি জেনে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জুলফিকার নাঈম শিপন জানান, বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক মানিককে জানানো হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ পেলে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণ করা হবে।

তিনি আরও জানান, পিএইপি কারখানা তৈরি করতে স্থানীয় সরকারের একটি রাস্তা দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে।

ঘোপাল ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক মানিক ঢাকাটাইমসকে বলেন, পানি দ্রুত অপসারণে ড্রেন নির্মাণের জন্য পিএইচপি কর্তৃপক্ষের সাথে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি করছেন।

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে বক্তব্য জানতে চাইলে পিএইচপি কর্মকর্তা রেজাউল হায়াত বাবর গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে রাজি হননি।

ছাগলনাইয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল ঢাকাটাইমসকে বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই।

(ঢাকাটাইমস/২১অক্টোবর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :