নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না ড. কামাল, সরকারে পদেরও ইচ্ছা নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০১৮, ২০:৪০ | প্রকাশিত : ২২ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:০০

আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন। জানিয়েছেন, তারা সরকারে গেলে সেখানেও তার কোনো পদ পাওয়ার আগ্রহ নেই।

গত ১৩ অক্টোবর ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন ডাকেন কামাল হোসেন। ফ্রন্ট গঠনের দিন সংবাদ সম্মেলন করে ঐক্যের ঘোষণা দিলেও সেদিন তারা কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ দেননি।

তবে ৯ দিনের মাথায় সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে করা সংবাদ সম্মেলনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন নেন ঐক্যফ্রন্ট নেতা। বলেন, ‘যারা ক্রমাগতভাবে আমার বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ, ভিত্তিহীন ব্যক্তিগত আক্রমণ করে চলছেন। আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বা কোনো রাষ্ট্রীয় পদ পাওয়ার কোনো ইচ্ছা আমার নেই। একটি গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও বহুমাত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আমি কাজ করে যাব।’

জামায়াতে ইসলামী বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ থাকা অবস্থাতে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য গড়া নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েন ড. কামাল।

গত ১৩ অক্টোবর বিএনপি, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য মিলিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেন ড. কামাল হোসেন। যদিও সেপ্টেম্বরের শেষে তিনি প্রকাশ্যেই বলেন, জামায়াত না ছাড়লে বিএনপির সঙ্গে তিনি ঐক্যে যাবেন না।

এ সময় তিনি জামায়াতের সমর্থনে বা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সমর্থনে জাতীয় যুক্তফ্রন্ট গঠন করা হয়নি বলেও জানান।

এই ঐক্য গঠনের পর ড. কামালের তীব্র সমালোচনা করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। বিশেষ করে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলা এবং দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমানের বিএনপির সঙ্গে ঐক্য গড়ার বিষয়টি মানতে পারছেন না ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।

এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, ‘তারেক রহমানের সঙ্গে আমার দলের কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপির সঙ্গে আমাদের ঐক্য আছে। এই ঐক্যে তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন এখনও হয় নাই।’

‘আমি আপনাদের এই বিষয়টি পরিষ্কার করতে চাই। জামায়াতে ইসলামী বা তারেক রহমানসহ অন্য কোনো বিশেষ নেতার প্রতি সমর্থন হিসেবে এই উদ্যোগ দেখার কোনো সুযোগ নেই। কোন বিশেষ ব্যক্তি গোষ্ঠীর জন্য এই ঐক্যফ্রন্ট নয়। দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য আমাদের এই ঐক্য। সুতরাং এই ঐক্যকে অন্যভাবে দেখার সুযোগ নেই।’

ঐক্যফ্রন্টের সাত দাবির কথা উল্লেখ করে কামাল হোসেন বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রট এই লক্ষ্যগুলোর প্রতি সংকল্পবদ্ধ। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে এই লক্ষ্যগুলো অর্জনে কাজ করে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে এ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত দলগুলোর মধ্যে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’

কামাল হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের ঐক্য বজায় রাখার লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কাজ করে যাবে। যাতে করে রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বত্র গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য একটি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়।’

দাবি আদায় না হলে আন্দোলনে যাবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ঐক্যফ্রন্ট নেতা বলেন,'জনমত গঠনের আন্দোলন আমাদের শুরু হয়েছে।কালকে আমরা সিলেট যাব। ধারাবাহিকভাবে আমাদের কাজ চলবে। তারপরও না মানলে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেব।’

‘ব্যক্তি তারেকের সঙ্গে কোনো ঐক্য হয়নি’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান, তারপরও বিএনপির সঙ্গে ঐক্য কীভাবে- এমন প্রশ্নে কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা দল হিসেবে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করেছি। কিন্তু ব্যক্তি তারেক রহমানের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা কয়েকটি দল নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে ঐক্য করেছি। আর সেই জন্য জনমত গঠনে কাজ করছি। আমাদের ঐক্য শুধু একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য।’

গতকাল জাতীয় সংসদে ড. কামাল হোসেনকে বিভিন্ন মন্তব্য করা হয়েছে এবং আজকেও সংসদে এ বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। এ সে বিষয়ে জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, ‘এসব নিয়ে মন্তব্য করার প্রয়োজন মনে করছি না। যদি কখনো প্রয়োজন মনে করি তখন বলব। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরে আরও কিছু জানার কিছু বাকি থাকে না। আমার বিষয়ে সংসদে আলোচনা হবে খুব ভালো, হোক। যেকোনো ব্যাপারে সংসদে তারা আলোচনা করতেই পারে।’

সংবিধানের বাইরে কোনো দাবি মানা হবে না আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘এই সংবিধান তো তারা সংশোধন করছে। আগের সংবিধানে আমাদের দাবিগুলো ছিল। আমরা আগের সংবিধানে যেগুলো ছিল সেগুলোই বলেছি। এই কারণে মনে করি জনমত গঠনের প্রয়োজন, এজন্য জনমত গঠন করতে থাকব।

দাবি মানা না হলে ঐক্যফ্রন্ট আন্দোলনে যাবে কি না? বা আপনাদের কর্মসূচি কেমন হবে জানতে চাইলে কামাল বলেন, ‘আমাদের জনমত গঠনের জন্য আন্দোলন শুরু হয়েছে, বুধবার সিলেটে কর্মসূচি আছে। আমরা আপাতত সারাদেশে যে জনমত গঠন করব তার মাধ্যমে আশা করি দাবি আদায় হবে। তারপরও যদি দাবি আদায় না হয়, তাহলে গভীরভাবে চিন্তা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’

সরকারি দলের অনেকে বলছে ঐক্যফ্রন্ট ষড়যন্ত্র করছে, বিষয়টি নিয়ে আপনি কী বলবেন? কামাল হোসেন বলেন, ‘সরকারে এই বক্তব্যকে স্বাগত জানাই। দেশের নির্বাচন সংবিধান মতো হবে, এটাইতো চাই। আর চক্রান্ত যেটা দেখছে, এই শব্দগুলো কম ব্যবহার করাই ভালো।’

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোস্তাক আহমেদ প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/২২অক্টোবর/জিএম/বিইউ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

বর্তমান সরকারই ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর 

বিএনপি নেতাদের বানোয়াট কথা শুনে জিয়াউর রহমান কবরে শুয়ে লজ্জা পায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আ.লীগ বিদেশিদের দাসত্ব করে না: ওবায়দুল কাদের 

বাংলাদেশে একদিন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবেই, তখন আ. লীগ থাকবে না: আমিনুল হক

উপজেলা নির্বাচন ঘিরে তৃণমূল আ.লীগে বাড়ছে দ্বন্দ্ব

সরকারের এমপিরা ঘোষণা দিয়ে লুটপাট শুরু করেছে: এবি পার্টি

বদরের চেতনায় লড়াই অব্যাহত রাখার আহ্বান ছাত্রশিবির সভাপতির

আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ফখরুলের

বিএনপির ভারত বিরোধিতা মানুষের কষ্ট বাড়ানোর নতুন সংস্করণ: নাছিম

ভোট ডাকাত সরকারকে সমর্থনকারী দেশের পণ্য বর্জন ন্যায়সঙ্গত: রিজভী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :