বর্ণাঢ্য আয়োজনে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০১৮’ উদযাপিত

ইসরাফিল হোসাইন, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২২ অক্টোবর ২০১৮, ২৩:১৯

‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: অদম্য তের বছর’ স্লোগানে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০১৮’ তথা ১৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে।

এ আয়োজনের মধ্যদিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি চতুর্দশ বছরে পদার্পণ করল। তবে প্রতি বছর ২০ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে আসছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা। এ বছর ২০অক্টোবর দুর্গাপূজা ও সাপ্তহিক ছুটি থাকায় দুইদিন পিছিয়ে ২২অক্টোবর দিবসটি পালন করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সোমবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণীর পেশাজীবীর মানুষ এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।

দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন উদ্যোগ পৃথক পৃথক ভাবে তুলে ধরা হলো।

বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্বোধন:

সকাল ৯:১০ মিনিটে মিনিটে শহীদ মিনার চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করা হয়। বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। এসময় ট্রেজারার অধ্যাপক মো. সেলিম ভূঁইয়া, ডিন, রেজিস্ট্রার, চেয়ারম্যান, পরিচালক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। শোভাযাত্রা:

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের নেতৃত্বে ব্যান্ডদলে সুসজ্জিত প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর শোভাযাত্রাটি শহীদ মিনার চত্বর হতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রায় সাহেব বাজার মোড় ঘুরে, ভিক্টোরিয়া পার্ক পরিক্রমণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সমাপ্ত হয়। এসময় ছাত্র-ছাত্রীরা নানা রঙ-বেরঙের টি-সার্ট ও শাড়ি পরে নেচে গেয়ে র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া প্রতিটি বিভাগের শিক্ষক-ছাত্রছাত্রী, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ নিজস্ব বিভাগীয় ব্যানারে র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করে। আলোচনা সভা:

সকাল সাড়ে ১০টায় সামাজিক বিজ্ঞান ভবন চত্বরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, “এবারের বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের আনন্দ বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে একনেকে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন: ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের আর্থিক অনুমোদনের ফলে। উপাচার্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তারিক ধন্যবাদ জানান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এই মাসেই ঢাকার কেরাণীগঞ্জে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে প্রায় ২০০ একর ভূমি বরাদ্দের চূড়ান্তÍ অনুমোদন প্রদান করে। ৪০ বছর স্বাধীনতার উত্তরকালে এত জমি একসাথে কোন বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রদান করা হয়নি।”

তিনি বলেন, “একনেকে এই প্রকল্পে প্রায় ১ হাজার ৯২০ কোটি বরাদ্দ করা হয়। আর মেগাপ্রকল্পে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ পাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। কেরাণীগঞ্জে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসে মাস্টারপ্লান অনুযায়ী নতুন ক্যাম্পাসে একাধিক একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, নতুন আরো কয়েকটি অনুষদ, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য হল, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবাসন ব্যবস্থা, চিকিৎসা কেন্দ্র, ক্যাফেটেরিয়া, খেলার মাঠ, সুইমিং পুল, মসজিদ এবং পরিবহণ ও আধুনিক বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এখন গবেষণা ও উচ্চশিক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রেখে রাখছে। এখানকার শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশে তাদের কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলছে। আরো অধিকতর মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য যেসব শর্তের প্রয়োজন আমরা শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই মিলে তা পূরণ করছি। এক্ষেত্রে সরকার আমাদের যথেষ্ট সাহায্য-সহযোগিতা করছে, আগামীতেও সবার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি। ” আলোচনা সভায় ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০১৮’ উদ্যাপন কমিটির সদস্য-সচিব ও রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ ওহিদুজ্জামান-এর সঞ্চালনায় ট্রেজারার অধ্যাপক মোঃ সেলিম ভূঁইয়া, বিভিন্ন অনুষদের অনুষদের ডিন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. মনিরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোঃ তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেল, জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি, কর্মচারী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান:

আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সামাজিক বিজ্ঞান ভবন চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দের অংশগ্রহণে সংগীতানুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। শিল্পীরা মনোমুগ্ধকর গান পরিবেশন করে দর্শকদের মাতিয়ে রাখে। এদিকে, নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে যাত্রাপাত্রা পরিবেশিত হয়। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সকলে উদ্বেলিত ও উৎফুল্ল হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম বর্ষ পূর্তি উদযাপন করে। শিল্পকলা প্রদর্শনী:

‘শিল্প-সৃজনে আলোকিত হই’ স্লোগানকে সামনে রেখে বেলা ১২টায় নতুন একাডেমিক ভবনের নিচতলায় ‘১ম বার্ষিক শিল্পকলা প্রদর্শনী’র উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের তৈরি করা ছবি ও অন্যান্য শিল্প কর্ম স্থান পায়। এই বার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলবে। উল্লেখ্য, এবারই প্রথম বারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে বার্ষিক শিল্পকলা প্রদর্শনীর আয়োজন করে।

প্রকাশনা প্রদর্শনী:

‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০১৮’ উপলক্ষে ভাষা শহীদ রফিক ভবন প্রাঙ্গণে জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকশনা দপ্তরের সার্বিক সহযোগিতায় দিনব্যাপী ‘প্রকাশনা প্রদর্শনী’র আয়োজন করা হয়। ১৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ বার্তা প্রকাশ করা হয়। এতে বিগত তের বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরা হয়। প্রকাশনা প্রদর্শনীতে অন্যান্য প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এছাড়াও প্রদর্শনীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণাধর্মী পুস্তক, জার্নাল ও অন্যান্য প্রকাশনা প্রদর্শনীতে স্থান পায়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০১৮ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনসমূহ আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২২অক্টোবর/আইএইচ/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :