মির্জাপুরে প্রতারণা করে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০১৮, ১১:০৮ | প্রকাশিত : ২৭ অক্টোবর ২০১৮, ১০:৪৫
মো. ইব্রাহিম মিয়া

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সরকারি সম্পত্তি নিজের নামে দেখিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ০.৫৮ একর ভূমির ক্ষতিপূরণ বাবদ বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন মির্জাপুর পৌর এলাকায় অবস্থিত মা সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিক মো. ইব্রাহিম মিয়া এই টাকা হাতিয়ে নেন বলে জানা গেছে। মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আজগর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগে জানা যায়, ১৯৯৫-৯৬ সালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস নির্মাণের জন্য সরকার এলএ ৫৪নং কেসের মাধ্যমে উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী মৌজার এসএ ৪২৪ নং দাগের ৩.১০ একর ভূমির মধ্যে ১.৫৪ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে।

অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিপূরণ বাবদ সরকার মূল্যও নির্ধারণ করেন। কিন্তু অধিগ্রহণকৃত দাগের ওই ভূমি অর্পিত সম্পতি হওয়ায় ক্ষতিপূরণের টাকা সরকারি তহবিলে আটকে থাকে।

২০১২ সালে সরকারি নির্বাহী আদেশে ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত অর্পিত সম্পত্তি অবমুক্তির আইন পাস হলে ইব্রাহিম মিয়া ২০১৩-১৪ সালে ৯০৩ (IX-I) নং মোকাদ্দমামূলে ওই দাগে ০.৯০ একর ভূমি নিজ নামে নামজারি ও জমাভাগ করে ২০০৮ নং হোল্ডিংয়ে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করেন।

০.৯০ একর ভূমি নামজারি ও জমা ভাগ করলেও একই হোল্ডিংমূলে ২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইল ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে তিনি ১.৪৮ একর ভূমির ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭ লাখ ৯৭ হাজার ৯৪০ টাকা উত্তোলন করেন। এ সময় তিনি অতিরিক্ত ০.৫৮ একর ভূমির ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩ লাখ ১২ হাজার ৭০৬ টাকা সরকারি তহবিল থেকে হাতিয়ে নেন।

এরপরও তথ্য গোপন রেখে ইব্রাহিম একই হোল্ডিং এ ০.৯০ একর ভূমির বাবদ প্রতিবছর ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে যাচ্ছেন। প্রতারণার মাধ্যমে অতিরিক্ত ০.৫৮ একর ভূমির ক্ষতিপূরণের টাকা হাতিয়ে নেয়া ও উত্তোলনকৃত ভূমির উন্নয়ন কর পরিশোধ করার বিষয়টি মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আজগর হোসেনের নজরে এলে তিনি ০.৯০ একর ভূমির নামজারি জমা ভাগ ও হোল্ডিং বাতিল করেন।

এছাড়া প্রতারণার মাধ্যমে অতিরিক্ত ০.৫৮ একর ভূমি টাকার বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে টাঙ্গাইল ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমানকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন বলে তিনি জানান।

এদিকে ইব্রাহিম মিয়ার নামে ০.৯০ একর ভূমির নামজারি ও জমাভাগ থাকলেও কীভাবে তিনি ১.৪৮ একর ভূমির ক্ষতিপূরণের টাকা ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে উত্তোলন করলেন এ বিষয়ে বিষ্ময় প্রকাশ করেন মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের সার্ভেয়ার মো. সাখাওয়াত হোসেন।

মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আজগর হোসেন বলেন, বাওয়ার কুমারজানী মৌজার ৪২৪ নং দাগে ০.৯০ একর ভূমি ইব্রাহিম মিয়ার নামে নামজারি জমাভাগ হোল্ডিং ছিল। ওই একই নামজারি জমাভাগ ও হোল্ডিং মূলে তিনি টাঙ্গাইল ভূমি শাখা থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা উত্তোলন করায় তা বাতিল করা হয়েছে।

এছাড়া নামজারি ও জমাভাগ ছাড়া ০.৫৮ একর অর্পিত সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ বাবদ কীভাবে তিনি সরকারি টাকা উত্তোলন করেছেন তা দেখে আইগত ব্যবস্থা নিতে টাঙ্গাইল ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন তদন্ত সাপেক্ষে অনিয়মের বিরুদ্ধে আইগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঢাকাটাইমস/২৭অক্টোবর/প্রতিনিধি/ওআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :