বিরোধ মিটুক, সবাই ভোটে আসুক

তানিম আহমেদ
ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ১২:৫০ | প্রকাশিত : ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ১০:১৩

রাজনীতিতে হঠাৎ চমক। অপ্রত্যাশিতভাবেই সংলাপে বসতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির নতুন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ। কী হয়, বিরোধ মিটিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে দেশ কতটা এগিয়ে যায়।

সাধারণ মানুষদের মতোই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও আশাবাদী। রাজনীতি নিয়ে যে বিরোধ, তা মিটবে, দেশে ফিরবে সুবাতাস।

ঢাকাটাইমস এ নিয়ে কথা বলেছে চারজন বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে, তারা আশাবাদী এই সংলাপ নিয়ে। তবে দুই পক্ষই যেন অনড় মনোভাব ছেড়ে খোলা মন নিয়ে সংলাপে বসে, সেটাই প্রত্যাশা তাদের।

‘ইতিবাচক হলে ভোটে সংঘাত হবে না’

শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘সংলাপের বিষয়টা খুবই ইতিবাচক । সংলাপ যে সব সমাধান করে ফেলবে তা আমি কখনই মনে করি না। সংলাপ অত্যন্ত কয়েকটা কাজ করবে বলে আমি মনে করি। প্রথম নির্বাচনী পরিবেশটা শান্ত করবে । যদি সংলাপ কিছুটা ইতিবাচক হয়, তাহলে নির্বাচনে সংঘাত হবে না।

যদি সরকারে পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কয়েকটা দাবি মেনে নেয়া হয়, তাহলে আরও ভালো হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যদি তাদের অনমনীয় মনোভাব নিয়ে সংলাপে যায় তাহলে সংলাপ স্বার্থক হবে না।

দুই দলই যাতে ইতিবাচকভাবেই সংলাপে বসে। চাদরের আড়ালে যাতে মুগুর নিয়ে না বসে। যেন খোলা মন নিয়ে বসেন। যদি খোলা মন নিয়ে বসেন তাহলে আমরা অনেক কিছুই পাব।’

‘মনে হচ্ছিল কোনো আশা নেই’

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মিজানুর রহমান শেলী বলেন, সংলাপের এই উদ্যোগ অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক কথা । বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতি পরিস্থিতিতে একটা অস্থিতিশীলতা রয়েছে। সন্দেহ, সংশয়, ভীতি এবং অনিশ্চয়তা দুইপক্ষের মধ্যেই। যেখানে কোন কিছুর আশা নাই বলে মনে হচ্ছিল। এর মধ্যে হঠাৎ সংলাপের প্রসঙ্গ আসায় দমবন্ধ করা রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের আশা আমরা করতেই পারি।

তবে এর আগেও সংলাপ হয়েছে, প্রত্যাশিত ফল আসেনি। এবার সেই ‍বৃত্ত ভেঙে রাজনৈতিক নেতারা দেশকে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথে আরও এগিয়ে নেবেন বলে আশা করতেই পারি। তবে সেখানে সংলাপ শুরু হচ্ছে, এটা পরে কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা জানি না।

‘পারস্পরিক সহনশীলতা দেখতে চাই’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এটা ইতিবাচক সংবাদ। সেখানে কি হবে সেটার জন্য দেশবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। কীভাবে সংলাপটি হয়। কী তার রেজাল্ট হয়। তার উপরই নির্ভর হবে এ সংলাপ কতখানি অর্থবহ।

যেকোন রাজনৈতিক সংলাপই একটা ইতিবাচক বার্তার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। তবে আমরা আশা করব নূন্যতম রেজাল্ট যাই হোক না কেন তাঁরা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, পারস্পরিক সহনশীলতা এবং সন্মানসূচক পরিবেশে এ সংলাপটি হয়।

সংলাপে প্রমাণ করে রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছুই নাই। রাজনীতি একটি চলমান প্রক্রিয়া এখানে যেকোন সময়, যেকোন প্রেক্ষিতে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক পরিবর্তন হওয়াটা খুব অস্বাভাবিক কিছুই নয়।

দুইদিন আগেও যেখানে বলা হয়েছিল কোন সংলাপের কোন সুযোগ নাই। আজ বলা হলো সংলাপ হবে। এই সংলাপ সফল হোক।

‘সংলাপ সফল হলে সবারই মঙ্গল’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক গোবিন্দ চক্রবর্তী বলেন, রাজনৈতিক বিরোধ নিয়ে সংলাপ অবশ্যই একটি ইতিবাচক উদ্যোগ। সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতিতে সকল রাজনৈতিক যে কোন ইস্যুতে যেকোন সময়ই আলোচনা বসতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেনের চিঠির উত্তর দিয়েছেন তা আমাদের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটা বড় রকমের ইতিবাচক ঘটনা।

অতীতের নানা সংলাপ সফল না হলেও আমরা এবার আশা করি, দুই পক্ষ এক হয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দিকে দেশকে নিয়ে যাবে। এতে সবারই মঙ্গল।

ঢাকাটাইমস/৩১অক্টোবর/ডিএম

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :