গাজীপুরে শ্রমিক মৃত্যুর গুজবে কারখানায় হামলা, আনসার নিহত

শ্রমিক বিক্ষোভের ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের কাশিমপুরে শ্রমিক মৃত্যুর গুজবে কর্মবিরতি করে বিক্ষোভ ও কারখানা ভাঙচুর করেছেন শ্রমিকরা। শ্রমিকদের হামলায় আহত হয়ে এক আনসার সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় কাশিমপুর ও কোনাবাড়ি এলাকার অন্তত অর্ধশত কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় এ ভাঙচুর-বিক্ষোভ হয়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর থানার হাতিমারা এলাকায় মিতালী ফ্যাশন লিমিটেড কারখানায় মেহেদি হাসান নামে এক শ্রমিককে চুরির দায়ে হত্যা করা হয়েছে কারখানার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমন গুজব ওঠে। পরে ওই কারখানায় শ্রমিকরা বুধবার বিকেলে কারখানায় বিক্ষোভ করেন।

একপর্যায়ে পুলিশ ও কারখানার কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এবং বৃহস্পতিবার সকালে তাকে কারখানায় হাজির করা হবে বলে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের আশ^স্ত করেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে ওই শ্রমিককে হাসপাতাল থেকে কারখানায় আনতে দেরি হওয়ায় কারখানার শতশত শ্রমিক কর্মবিরতি করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় তারা মিতালি ফ্যাশন লিমিটেডসহ আশপাশের ডেলটা স্পিনিং, মুনটেক্স, মাল্টি ফেব্রিক্স, ডেলটা কম্পোজিটসহ অন্তত ১৫টি কারখানায় ভাঙচুর করে এবং ওইসব কারখানার শ্রমিকদের ডেকে আনে। পরে শ্রমিকরা মিছিল সহযোগে কোনাবাড়িতে এসে রাস্তায় অবস্থান নেন।

এক পর্যায়ে তারা কোনাবাড়ী এলাকায় যমুনা গার্মেন্টস, তুসুকা ও কেয়া স্পিনিং কারখানার গেট ও জানালা ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

তবে শ্রমিকদের আন্দোলন চলাকালে বেলা ১১টার দিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ মেহেদি হাসানকে তাদের কারখানায় নিয়ে আসেন।

এদিকে, উত্তেজিত শ্রমিকদের হামলায় গুরুতর আহত হন কাশিমপুর এলাকার ডেল্টা স্পিনিং কারখানার কর্তব্যরত আনসার সদস্য ভৈরব চন্দ্র সরকার। তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনসার সদস্য ভৈরব চন্দ্র সরকার মারা যান।

গাজীপুর আনসার ও ভিডিপির সার্কেল অ্যাডজুডেন্ট আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চত করে জানান, বহিরাগত শ্রমিকদের হামলায় গাইবান্ধ্যা জেলার বাসিন্দা ভৈরব চন্দ্র সরকার আহত হন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

তার মৃত্যুর পর গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার বেলালুর রহমানসহ পুলিশ হাসপাতালে আসেন এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরসহ আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

কোনাবাড়ি থানার ওসি এমদাদ হোসেন জানান, মিতালি গার্মেন্টেসের ঘটনায় উত্তেজিত শ্রমিকরা কাশিমপুর থেকে বিভিন্ন কারখানায় ঢিল ছুড়ে ভাঙচুর করে কোনাবাড়িতে এসে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা এখানেও কারখানায় ভাঙচুর চালান। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ করে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কোনাবাড়ির অন্তত ২০টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

ঢাকাটাইমস/০১নভেম্বর/প্রতিনিধি/ইএস