শাঁখারীবাজারে রনক হত্যা: ১১ কিশোরের বিরুদ্ধে চার্জশিট

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০১৮, ২৩:৪৯ | প্রকাশিত : ০১ নভেম্বর ২০১৮, ২৩:৩৮

পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারে হোলি উৎসব থেকে কলেজছাত্র রওনক (১৮)কে ডেকে নিয়ে হত্যার মামলায় ১১ কিশোরসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জানে আলম মুনশী ঢাকা সিএমএম আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন।

চার্জশিটভূক্ত আসামিরা হলেন- হত্যার পরিকল্পনাকারী ইয়াছিন আহম্মেদ ইমন (১৭), সহযোগী লিজা আক্তার ওরফে মাইসা আলম (১৬), রিয়াজ আলম ফারহান (১৯), আব্দুল ওয়াহিদ (১৩), ওমর ফারুক (১৬), ফাহিম আহম্মেদ এ্যাফ্রো (১৭), আল আমিন ওরফে ফারাবি খান (১৪), বোরহান উদ্দিন রাব্বানী ওরফে জিসান (১৬), তাহসীন হোসেন বিজয় (১৫), মো. ইয়াছিন ইমন (২০), সজিব মাহমুদ (১৭), আবেদুর রহমান উৎসব (১২), ইয়াছিন আলী (১৭) ও আসিফ। আসামিদের মধ্যে ওমর ফারুক পলাতক রয়েছেন।

হত্যার কারণ সম্পর্কে চার্জশিটে বলা হয়, নিহত রনক ও অভিযুক্তরা পরষ্পর বন্ধু। তাদের একে অপরের সাথে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। এদের কেউ ছাত্র, কেউ গ্যারেজ মিস্ত্রী, কেউ দোকানের কর্মচারী। মামলার ঘটনার প্রায় ১ বছর পূর্বে এ মামলার সাক্ষী পলি আক্তার তুহুর সঙ্গে নিহত রনকের সম্পর্ক ছিল। তুহুর সঙ্গে রনকের সঙ্গে সম্পর্কের কথা তার মা জেনে গেলে সে তুহুকে রনকের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এ বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সালিশ বৈঠকও হয়। রনকের সঙ্গে তুহুর সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর তুহুর সঙ্গে আসামি ইয়াছিন আহমেদ ইমনের প্রেমের সম্পর্ক হয়। এই সম্পর্কের কথা জানার পর ইমনের সঙ্গে রনকের বিভিন্ন সময় ফেসবুকে, ওয়াটর্স অ্যাপে ও মোবাইল ফোনে একে অপরকে হুমকি প্রদান করে। এ নিয়ে ইমন রনককে হত্যার পরিকল্পনা শুরু করে।

চার্জশিটে আরো বলা হয়, গত ১ মার্চ ইয়াছিন আহমেদ ইমন আসামি লিজা আক্তার মাইসার মাধ্যমে রনককে শাঁখারীবাজার হলি খেলা দেখার নাম করে ডেকে আনে। ঘটনার দিন সকাল ১০ টার সময় ইমন সূত্রাপুর থানাধীন লক্ষ¥ীবাজার কেএফসির সামনে একত্রিত হয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে। কার কি কাজ সে বিষয়ে ব্রিফ করে পলাতক ওমর ফারুক। ছুরি সরবরাহ করে আব্দুল ওয়াহিদ, ছুরি বহন করে ওয়াহিদ, ওমর ফারুক, ফারহান ও জিসান। এ্যাফ্রো, আল আমিন, ইয়াছিন, উৎসব, সজিব, বিজয় এবং আসিফ উপস্থিত থেকে কেএফসির সামনে পরামর্শ করে।

তারপর একে একে শাঁখারীবাজার শনি মন্দিরের সামনে আসে। এরপর মাইসার মাধ্যমে নিশ্চিত হয় রনক হলিতে আসছে। মন্দিরের সামনে ইমনের সাথে রনকের দেখা হলে ইমন তার সাথে কোলাকুলি করে। এরপর ফারহান এ্যাফ্রো রনককে ঘাড় ধরে এক পাশে ডেকে আনে। আল আমিন বলে- এটাই কি রনক? ওয়াহিদ বলে- শালারে মারস না কেন? তাহসীন বলে- হাত থাকতে মুখ দিয়া কি? তখন পরিকল্পনাকারী ইমন বলে- তুই বলছিলি না আমার মতো ১০/১২ টা ইমন ডেইলি পয়দা করস। এরপর শুরু হয় মারপিট। প্রথমে এ্যাফ্রো একটা চড় মারে।

তারপর উৎসব, সজিব, আসিফ, জিসান .পল্ল একে এক সবাই চড়-থাপ্পক, কিল-ঘুষি মারা শুরু করে। ফাহান প্রথমে চাকু দিয়ে রনককে কোপ দেয়। ওমরও চাকু দিয়ে কোপ দেয়। ওমরের কোপ লাগে এ্যাপ্রোর পায়ে। জিসান, ওয়াহিদও চাকু দিয়ে কোপ দেয় কিন্তু রনকের গায়ে লাগে না। এরপর রনক মারাত্মক রক্তাক্ত জখম অবস্থায় দৌড়ে একজন উকিলের চেম্বারে আশ্রয় নেয়।সেখান থেকে তাকে তারা বের করে একটি চায়ের দোকানের ওপর ফেলে দেয়। চায়ের দোকান তখন বন্ধ ছিল। দোকানটি ভেঙে যায়। এরপর তারা পালিয়ে গেলে রনকের বন্ধু ফাহিম ও মাসুম রনককে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রনকতে মৃত ঘোষণা করেন।

রওনকের এ বছর নিউ পল্টন লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি বাণিজ্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। ঘটনার দিন সে তাঁতিবাজারে বন্ধুদের সঙ্গে হলি খেলবে বলে সকাল ৯টায় বাসা থেকে বের হয়।

ঢাকাটাইমস/০১নভেম্বর/ইএ

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যু: বিচার চায় সচেতন নাগরিক সমাজ

তীব্র তাপপ্রবাহে জনসাধারণের মাঝে পানি, খাবার স্যালাইন বিতরণ বিএনপির

মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেও নেতাকর্মীরা আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে: সালাম

ঢাকা মেডিকেলে এক কারাবন্দিকে মৃত ঘোষণা

ভাষানটেকে অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫, বাকি একজনও আশঙ্কাজনক

মুগদা-মান্ডা সড়কে অভিযান: ব্যক্তিগত সম্পত্তি ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ  

মোহাম্মদপুরে তিতাসের এমডির বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

রাজধানীতে থাকবে না ফিটনেসবিহীন বাস, জুন থেকে মাঠে নামছে বিআরটিএ

আজ ৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায়

গরমে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতা সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি ডিএমপির

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :