‘সংলাপ ব্যর্থ করার চেষ্টা করবেন এরশাদ’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০১৮, ১৪:৫৭ | প্রকাশিত : ০২ নভেম্বর ২০১৮, ১৪:৩১
চ্যানেল আইয়ের আজকের সংবাদপত্র অনুষ্ঠানে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ সফল হলে সেটি সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ক্ষতি বলে মনে করেন স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন। তিনি মনে করেন এ কারণেই দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সংলাপ নিয়ে নেতিবাচক কথা বলছেন।

বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপিসহ গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের। আর এই সংলাপের দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার পর বুধবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সময় চান এরশাদও। যদিও পাল্টা চিঠিতে তাকে সময় দেয়ার পর এরশাদ আবার বলছে, সংলাপে কিছু হবে না।

বৃহস্পতিবার রাতে চ্যানেল আইয়ে ‘আজকের সংবাদপত্র’ অনুষ্ঠানে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘উনি (এরশাদ) একটা দলের প্রধান হয়ে সংলাপ স্বার্থক হবে না, বলাটা ঠিক হয়নি। তিনি এই বিষয় নিয়ে চুপ থাকতে পারতেন।’

‘যদি আলোচনা সফলতার মুখ দেখে তাহলে সব থেকে বেশি লুজার হবে জাতীয় পার্টি। তাই এরশাদের বক্তব্য তার দিক থেকে ঠিকই আছে। আবার যাতে এটা ব্যর্থ হয় সেই প্রচেষ্টাও তিনি তার দিক থেকে চালাবেন একথাও তার অতীত থেকে আমরা বিশ্বাস করি।’

২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট অংশ না নেয়ায় জাতীয় পার্টি সংসদে প্রধান বিরোধী দল হতে পেরেছে। আবার বিরোধী দলের হয়েও মন্ত্রিসভাতেও আছেন দলটির বেশ কয়েকজন নেতা। আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি-দুই পক্ষই জানিয়েছে, এবার বিএনপি ভোটে এলে তারা ২০০৮ সালের মতোই জোট গড়বেন আবার। সে ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের মর্যাদা হারাবে।

মোবাশ্বের হোসেন মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী যে সংলাপ করতে যাচ্ছেন, সেখানে মুখ্য ঐক্যফ্রন্টই। বাকিরা গৌন।

সরকারে থাকা দলকে সংলাপে ডাকার বিষয়ে এই আলোচক বলেন, ‘এটা হলো কিছুটা ললিপপ দেয়ার মতো। এরশাদ সাহেব গৃহপালিত বিরোধী দল। আপনি ঐক্যফ্রন্টের সাথে কথা বলবেন আর বিরোধীদলের সাথে কথা বলবেন না এটা তো হয় না। এটা রাজনীতির আরেকটা খেলা।’

‘সংলাপ পুরোপুরি ব্যর্থ নয়’

বৃহস্পতিবারের সংলাপে ঐক্যফ্রন্ট স্পষ্টতই নাখোশ। কারণ, খালেদা জিয়ার মুক্তি, সংসদ ভেঙে দেয়া, ভোটে সেনা মোতায়েন, ইভিএম ব্যবহার না করার বিষয়ে তাদের প্রধান দাবিগুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

মোবাশ্বর অবশ্য সংলাপকে পুরোপুরি ব্যর্থ দেখছেন না। বলেন, ‘সংলাপে দেশের রাজনীতিতে বরফ গলার একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে। এখানে সব পক্ষ এসেছে। তর্কের খাতিরে যদি বলা হয়, সংলাপের সব দাবি আওয়ামী লীগ মেনে নিল। কিন্তু আইনের দৃষ্টিতে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিটা সরকারের পক্ষে মানা সম্ভব না। তাহলেও কি বিএনপি বলত আলোচনা স্বার্থক হয়েছে? সব মানার পরেও এটা বিএনপি বলতে পারত না; এখানে অনেকগুলো ঘটনা আছে।’

‘সংলাপের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী যে কথাগুলো বলেছে, সেগুলো প্রনিধানযোগ্য। ওটা ইমোশনাল বক্তব্য ছিল। তিনি বলেছেন, আসেন না এই দেশটা আমরা সবাই মিলে তৈরি করি। আমরা যদি অতীতের ভাষণ আর সংলাপের দিনের ভাষণ দেখি তাহলে সেটার মাঝে অনেক পার্থক্য রয়েছে। সাথে প্রধানমন্ত্রী এও বলেছেন, ‘গণভবন জনগণের ভবন।’

‘ঐক্যফ্রন্টের নেতারা আগে থেকে বলেছিলেন তারা খাবেন না, কিন্তু সেখানে খাওয়া দাওয়া হয়েছে। এছাড়া একে অপরের সামনাসামনি বসে হাসিমুখে কথা বলেছেন। এটা দেশের ইতিহাসে বিরাট প্রাপ্তি।’

মোবাশ্বের বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) হয়ত বুঝেছেন দেশের উন্নয়ন ধরে রাখতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষকে একতাবদ্ধ হতে হবে। যেমন ক্রিকেট খেলায় দেশের সকল রাজনৈতিক দল কিন্তু এক হয়ে যায়। তেমনি এখানেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সবাইকে এক হওয়ার অবস্থা আছে। কারণ, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বন্দিদের তালিকা দিলে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং জনসভায় তিনি বাধা দেবেন না।’

‘আলোচনা প্রথম দিনে কিছুই অর্জন হয়ে যায়, এমন কোন আলোচনা পৃথিবীর কোথাও ঘটে না। আবার প্রধানমন্ত্রীর এখন আর এমন কোন প্রাপ্তি নেই যেখানে তাকে জেদ ধরে থাকতে হবে। তবে ছোট ছোট কিছু জিনিস আমাদের সজাগ দৃষ্টিতে রাখতে হবে।’

“আওয়ামী লীগ একক ভাবে নির্বাচন করা চেষ্টা করছে না। তারা সব দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচনে আসতে চাচ্ছে। কারণ, প্রধানমন্ত্রী কয়েকদিন বলছেন, ‘আমরা এইসব উন্নয়ন করেছি। যদি আমাদের আবার ভোট দেন আমরা আরও উন্নয়ন করতে পারব’।”

‘আর রাজনীতিতে বিএনপির অবস্থান টিকিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই নির্বাচনে আসতে হবে। কারণ দেশের মানুষ দুটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব চাই সব সময়। তাই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জনগণের কাছে তাদেরকে পৌঁছাতে হবে। তারা ১০ সিট পেল কি ২০০ টা পেল সেটা পরের হিসাব।’

ঢাকাটাইমস/০২নভেম্বর/এসএস/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :