শেষ সিনেমা হলটিও রইল না রাজশাহীতে
একেক করে বন্ধ হয়ে গেল রাজশাহী মহানগরীর সবকটি সিনেমা হল। নগরীর চারটি সিনেমা হলের কোনটিই আর অবশিষ্ট রইলো না। নগরীর একমাত্র সিনেমা হল ‘উপহার’ বন্ধ হয় গত ১১ অক্টোবর মধ্যরাতে। সেসময় কর্তৃপক্ষ বলেছিলো, সিনেমা হল ভেঙে বাণিজ্যিক সুবিধা নিয়ে উপহার কমপ্লেক্স নির্মাণ হবে এখানে। রবিবার থেকে হলটি ভেঙে ফেলার কাজ করছেন শ্রমিবকরা।
সোমবার দেখা যায়, একদিনেই সিনেমা হলটির ওপরের টিনের ছাদ খুলে ফেলা হয়েছে। হাতুড়ি দিয়ে দেয়ালগুলোও ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। তবে হলের সামনের অংশ এখনো আছে। সেখানে টানানো ব্যানারে উল্লেখ করা হয়েছে, আধুনিক বাণিজ্যিক উপহার কমপ্লেক্স হচ্ছে এটি।
১৯৭৪ সালে স্নিগ্ধা নামে পর্দা ওঠে উপহারে। মাঝখানে কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর ১৯৮৫ সালে ‘অন্যায় অবিচার’ প্রদর্শনী দিয়ে ‘উপহার’ নামে এ সিনেমা হলটির যাত্রা শুরু হয়। সেই থেকে বহু সিনেমা প্রেমীর বিনোদন যুগিয়েছে এই হলটি। গত ১১ অক্টোবর রাত ১২টায় ‘নাকাব’ সিনেমার প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে উপহার বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
মালিকপক্ষের এই ঘোষণার পর হলটি চালু রাখার দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেন রাজশাহীর সাংস্কৃতিক কর্মী এবং সুধী সমাজের প্রতিনিধিরাও। তবে শেষপর্যন্ত হলটি রক্ষা করা গেল না। এতে হতাশ নগরীর সিনেমাপ্রেমিরা।
রাজশাহীর ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির উৎসব সমন্বয়কারী আহসান কবীর লিটন বলেন, যে শহরে ঋত্বিক ঘটকের মতো চলচ্চিত্রকার বেড়ে উঠেছেন, সেই শহরে একটাও সিনেমা হল রইলো না। এটা দুঃখের, কষ্টের, হতাশার এবং বেদনার। আমরা চাই শহরে সব শ্রেণির দর্শকদের কথা চিন্তা করে একটি সিনেমা হল নির্মাণ করা হোক।
এদিকে রবিবার সন্ধ্যায় ঋত্বিক ঘটক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহী শহরের চারটি সিনেমা হলের মধ্যে মাত্র একটি চালু ছিল। কিন্তু সেটিও কিছুদিন আগে বন্ধ হয়ে গেল। আগামীতে সিনেমা হল গড়ে তোলা এবং পরিচালনা করা যায় কিনা, সেটা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। আমি আলোচনা করে দেখবো।
ঢাকাটাইমস/০৫নভেম্বর/আরআর/ওআর