একনেকে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন

প্রকাশ | ০৭ নভেম্বর ২০১৮, ২২:২৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

নেত্রকোণায় শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ ৩০ হাজার ২৩৪ কোটি টাকার ২৮টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি।
বুধবার কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদেরকে এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, গত রবিবার একনেক অনুমোদন দিয়েছে ৩৯টি উন্নয়ন প্রকল্প। দুইদিন পরই আজ বুধবার একনেকে অনুমোদিত হয়েছে আরও ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্প। তাই বলে এটাকে নির্বাচনী একনেক বলা যাবে না। কেননা অর্থবছরের এই সময়টাতে এমনিতেই প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণ একটু বেশি হয়ে থাকে। এ সময়টাকে বলা যায় প্রকল্পের মৌসুম।

মন্ত্রী বলেন, তবে অন্যান্য বছর যে সংখ্যক প্রকল্প প্রস্তুত হয়, তার চেয়ে এ বছর একটু বেশি স্পিডে প্রক্রিয়াকরণ হচ্ছে। কারণ যদি নির্বাচনের সময়টাতে একনেক না হয় তাহলে এগুলো আবার পিছিয়ে যাবে। আমরা পুংখানুঙ্খভাবে দেখে দেখে প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণ করছি। সুতরাং গুণগত মান না থাকার কোনো মানে নেই।

গত রবিবার একনেকে ৪০টি প্রকল্প উপস্থাপন করা হলেও ৩৯টি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। একটি প্রকল্প আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বলা হয়েছে। এর মধ্য দিয়েই বোঝা যায় প্রকল্পগুলো কতটা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

একনেক জানায়, বুধবার উপস্থাপিত ২৮টি (নতুন ও সংশোধিত) প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩০ হাজার ২৩৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবি ২৪ হাজার ৮৫৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ৫৩৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক প্রকল্প সাহায্য ৪ হাজার ৫০৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে নেত্রকোনায় শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে ব্যয় হবে ২ হাজার ৬৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণে (প্রথম পর্যায়) ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩০৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। ২৬২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে জয়িতা ফাউন্ডশনের সক্ষমতা বিনির্মাণ প্রকল্প। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জয়িতা ফাউন্ডেশন।

এছাড়া সংশোধন করা হচ্ছে শহীদ কামরুজ্জামান টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট, মান্দা নামের প্রকল্পটি। এক্ষেত্রে মূল ব্যয় ৭৪ কোটি ৬২ লাখ থেকে ৮২ কোটি ১৪ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ব্যয় ধরা হচ্ছে ১৫৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। মেয়াদও বাড়ছে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। দ্বিতীয়বারের মতো সংশোধন করা হচ্ছে ভোলা টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট প্রকল্পটি। প্রথম সংশোধিত ব্যয় ৭২ কোটি ৯২ লাখ থেকে ৩২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বাড়িয়ে এখন মোট ব্যয় ধরা হচ্ছে ১০৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। মেয়াদ বাড়ছে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত এক বছর।

একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ ব্যবস্থাপনা, বহাদ্দারহাট বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্তখাল খনন, চা বাগান কর্মীদের জন্য নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন, উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ (ষষ্ঠ পর্ব), বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভবন নির্মাণ, ১১টি আধুনিক ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্থাপন, মাদারীপুরে সরকারি অফিসগুলোর জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ, নির্বাচিত ৯টি সরকারি কলেজের উন্নয়ন, গোপালগঞ্জের শেখ রাসেল উচ্চ বিদ্যালয় ও ঢাকা সূত্রাপুরের শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন, চট্টগ্রাম-খুলনা-রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন, র‌্যাব ফোর্সের আভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ, ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন, সোনাগাজী ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, বীজ প্রত্যয়ন কার্যক্রম জোরদারকরণ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ বিশেষ ধরনের পন্টুন নির্মাণ ও স্থাপন, বৃহত্তর রাজশাহী ও নোয়াখারীর গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী ড্রেজিং ও তীর সংরক্ষণ, বৃহত্তর রাজশাহী-নোয়াখালীর গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন, বাঙ্গালী-করতোয়া-ফুলজোর-হুরাসাগর নদী সিস্টেম ড্রেজিং/ পুনঃখনন ও তীর সংরক্ষণ এবং ইমারজেন্সি মাল্টি-সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপনস প্রকল্প।

ঢাকাটাইমস/০৭নভেম্বর/জেআর/ ইএস