জয়পুরহাটে আগুন কেড়ে নিল একই পরিবারের ৮ প্রাণ

প্রকাশ | ০৮ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:৩৩ | আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:৪৯

জয়পুরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

জয়পুরহাট শহরের আরামনগর এলাকায় একটি বাড়িতে আগুন লেগে একই পরিবারের আটজন মারা গেছেন। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। বুধবার রাতের এই ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

নিহতরা হলেন আরামনগর এলাকার দুলাল হোসেন ও তার স্ত্রী মোমেনা বেগম, তার ছেলে মুমিন হোসেন, স্ত্রী পরিনা, মেয়ে বৃষ্টি, হাসি, খুশি ও ছেলে নুর। এদের মধ্যে ঘটনাস্থলেই মারা যান মোমেনা, ছেলে মোমিন এবং মোমিনের মেয়ে বৃষ্টি। বাকিরা ঢাকায় যাওয়ার পথে মারা যান। এদের মধ্যে বৃষ্টি জেএসসি পরীক্ষার্থী আর হাসি ও খুশি সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

নিহত দুলালের ছোট ভাই জাকির হোসেন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, এটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো বিষয় নয়। খবর পেয়ে আমি বাড়িতে ছুটে আসি এবং সেখানে তিনজনের লাশ দেখি। পরে হাসপাতালে ভাই ও নাতনিদের দেখতে যাই। মর্মান্তিক এই ঘটনায় তিনি ছাড়া আর কেউ বেঁচে নেই বলে জানান জাকির।

স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাত ৯টার দিকে ওই বাড়িতে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে। বাড়ির ভেতর থেকে আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পেয়ে লোকজন ছুটে আসেন। তবে আগুনের ভয়াবহতার কারণে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তাদের অভিযোগ ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে এলে এত ক্ষতি হতো না।

জয়পুরহাট ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, রাত ৯টা ৪০ মিনিটের সময় আরামনগরে দুলাল হোসেনের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এর আগেই স্থানীয়রা পাঁচজনকে উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করায়। এসময় ঘটনাস্থল তল্লাশি চালিয়ে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে তাদের ধারণা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।


পুলিশ সুপার রশিদুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। খবর পেয়ে পুলিশ ছুটে খোঁজ-খবর নেয়। তিনি জানান, এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উজ্জল কুমার রায়কে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে তাদের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জয়পুরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহুমদ স্বপন। তিনি বলেন, এধরনের ঘটনা কোথাও কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। তিনি এলাকাবাসীকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন।

এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, বাড়িতে দুটি কোরআন শরিফ ছাড়া অবশিষ্ট কোনো কিছুই অক্ষত নেই। বাড়ির সবকিছু সম্পূর্ণরূপে পুড়ে গেছে।  এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

(ঢাকাটাইমস/০৮নভেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)