রাজশাহী সদরে প্রচারে শুধু বাদশা

প্রকাশ | ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ১১:৪১

রিমন রহমান, রাজশাহী

দেশ যখন ভোটের তফসিলের অপেক্ষায়, তখন রাজশাহী সদর (রাজশাহী-২) আসনটিতে নীরব বেশিরভাগ সম্ভাব্য প্রার্থী। উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে জনসংযোগ চালাচ্ছেন কেবল বর্তমান সংসদ সদস্য বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা।

সদর আসনে পরপর দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের শরিক দলটির সাধারণ সম্পাদক। জোটবদ্ধ নির্বাচন হলে এবারও ক্ষমতাসীন জোট থেকে তার মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত বলেই ধরে নিচ্ছেন নেতাকর্মীরা।

জনসংযোগে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা নেমেছেন উন্নয়নের বার্তা নিয়ে। নগরীর বিভিন্ন মোড় ও সড়কগুলোর পাশে ফেস্টুন আর বিলবোর্ড লাগিয়ে রাজশাহীসহ সারা দেশে বর্তমান সরকারের আমলে কী কী উন্নয়ন হয়েছে, আরও কী কী কাজ চলছে সেগুলো তুলে ধরছেন তিনি।

‘উন্নয়নের গতিশীলতায় গড়ে তুলি আমাদের রাজশাহী’ স্লোগানে ছবি সম্বলিত এসব বিলবোর্ড-ফেস্টুনে গত ১০ বছরে বাদশা রাজশাহীর জন্য কী করেছেন, আগামীতে রাজশাহীর জন্য তার স্বপ্ন কী তাও তুলে ধরা হয়েছে।

দলের নেতাকর্মীরাও পাড়া-মহল্লায় বাদশার পক্ষে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ শুরু করে দিয়েছেন। মাঠে সক্রিয় সংসদ সদস্যের স্ত্রী তসলিমা খাতুনও।
মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। এই চেতনাকে ধারণ করে আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ আছি। আগামী নির্বাচনে আবার বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে হলে  বিগত ১০ বছরে সরকার যেসব উন্নয়ন করেছে তা সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। আমরা সেই কাজটিই দীর্ঘদিন ধরে করে আসছি। রাজশাহীর মানুষ এখন জানেন, কারা ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়।’

জোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগের সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো বাদশার। নিজেদের প্রার্থী না থাকলেও তাকেই আপন করে নিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরাও।

রাজশাহী সদর আসনটির আওয়ামী লীগবিরোধী এলাকা হিসেবেই পরিচিতি ছিল। এমনকি ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে এখানে তৃতীয় হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটি। তবে এরপর থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে দলটি। ১৯৭৩ সালের পর ২০০৮ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রথমবারের মতো এখানে জয় পান আওয়ামী লীগের প্রার্থী। মেয়র হন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

এর ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনেও নৌকা প্রতীক নিয়ে বাজিমাত করেন বাদশা। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও আসনটি ধরে রাখেন বাদশা।

আগামীতে রাজশাহীকে নিয়ে নিজের উন্নয়ন পরিকল্পনা সম্পর্কে বাদশা ঢাকা টাইমসকে বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে রাজশাহী অনেক এগিয়েছে। তিনি নিজে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছেন। আগামীতে তিনি রাজশাহীকে শিল্পের উপযোগী শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চান। তখন রাজশাহীতে নতুন নতুন শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।

ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা বলেন, শিল্পায়নের জন্য উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার দরকার। সে জন্য বিএনপি সরকারের বন্ধ করে দেওয়া রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম বিমানবন্দর তিনি চালু করেছেন। এখন তিনি এই বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে চান, যেন কার্গো বিমান ওঠানামা করতে পারে।
পাশাপাশি আব্দুলপুর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত রেললাইনকে ডুয়েল গেজ করতে চান। এগুলো করতে পারলে বিমানবন্দর ও রেললাইন ব্যবহার করে এ অঞ্চলের পণ্য দেশ-বিদেশের যে কোনো প্রান্তে পাঠানো সম্ভব হবে। তখন এখানকার অর্থনীতি চাঙা হবে।