বাড়িভাড়ার টাকা নেই নবনির্বাচিত কংগ্রেস প্রতিনিধির

প্রকাশ | ১১ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:৫৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

এক বছর আগেও তিনি কাজ করতেন এক পানশালায়। ম্যানহাটনে। থাকতেন নিউইয়র্ক সিটির শহরতলি পার্কচেস্টারে ছোট্ট এক কামরার ফ্ল্যাটে। এখনও সেখানে থাকেন, ভাগাভাগি করে। কিন্তু এ বার যে ঠিকানা বদলাতেই হবে।

সে দিনের সেই ‘বার টেন্ডার’ আলেকজ়ান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো-কোর্তেজ় এখন মার্কিন কংগ্রেসের নির্বাচিত প্রতিনিধি। নিউইয়র্ক থেকে ডেমোক্র্যাট দলের টিকিটে নির্বাচনে জয়লাভ করে মাত্র ২৯ বছর বয়সেই যাচ্ছেন ওয়াশিংটন ডিসির অফিসে। থাকতেও হবে সেখানে। কিন্তু পকেট যে ফাঁকা। নতুন কাজের প্রথম বেতন না পাওয়া পর্যন্ত ওয়াশিংটনে একটা অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নেয়ার ক্ষমতা তার নেই বলেই জানালেন কংগ্রেসের সবচেয়ে কমবয়সি এই সদস্য।

তাহলে? আলেকজ়ান্দ্রিয়া জানেন চাকা ঘুরছে। তাই হাল ছাড়তে নারাজ। ‘আপাতত বেকার’ আলেকজ়ান্দ্রিয়া টুইট করেছেন— ‘গত বছরও বার টেন্ডারের কাজ করেছি। আর এই দু’সপ্তাহ হলো নিজের জন্য একটা সোফা কিনেছি। স্বাস্থ্য বিমাও করিয়েছি। তাই বেশি ভেবে কাজ নেই। পরিস্থিতি বদলায়। বৃদ্ধি কখনও সরলরেখায় হয় না।’

আনন্দবাজার জানায়, আমেরিকার বিলাসবহুল শহরের তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েসে ওয়াশিংটন ডিসি। সেখানে এখন মাঝারি মানের অ্যাপার্টমেন্টেরই ভাড়া পড়ে প্রায় ২৭০০ ডলার। জানুয়ারিতে কংগ্রেসে যোগ দেয়ার আগে পর্যন্ত কোনও চাকরি নেই। তাই এই টাকা জোগাড় করাটাও অসম্ভব বলে জানিয়েছেন আলেকজ়ান্দ্রিয়া। এই সমস্যাটা দেশের একটা বড় অংশের বলে জানাচ্ছে হার্ভার্ড হাউসিংয়ের সাম্প্রতিক রিপোর্টও। সেখানে বলা হয়েছে, বাড়িভাড়া জোটাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন প্রায় ৪ কোটি মার্কিন নাগরিক। ২০০১ থেকে হিসাব করলে এখন আমেরিকার বড় বড় শহরে বাড়িভাড়া বেড়েছে প্রায় ১৪৬ শতাশ।

এর মধ্যে আবার মধ্যবর্তী নির্বাচনের প্রচারে আলেকজান্দ্রিয়া ও তার প্রেমিক খরচ করে ফেলেছেন তিল তিল করে নিজেদের জমিয়ে রাখা প্রায় দুই লাখ ডলার। কানাকড়িও কর্পোরেট সাহায্য নেননি এই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী। এ দিকে বিরোধী প্রার্থী জো ক্রাউলি যে প্রচারে প্রায় ৩০ লাখ ডলার খরচ করেছেন, তা নিয়েও বিশেষ মাথা ঘামাননি।

তার কথায়, ‘শুধুই একজন শ্রমজীবী হিসেবে আমেরিকার ভোটে দাঁড়ানোটা যে কঠিন, সেটা জেনেই মাঠে নেমেছি। তাই হাল ছাড়িনি কখনও।’ ২০০৮-এ ক্যানসারে বাবাকে হারিয়েছেন আলেকজ়ন্দ্রিয়া। তারপর থেকে শুধুই ল়ড়াই। একের পর এক রেস্তোরাঁয় কাজ করেছেন তিনি। পাশাপাশি, রাজনীতিও। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভারমন্টের ডেমোক্র্যাট সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্সের হয়ে প্রচারের কাজ করেছেন আলেকজ়ান্দ্রিয়া।

আর নিজের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন ওই পানশালার চাকরি করতে করতেই। বার-কাউন্টারের আড়ালে একেবারে নিজের মতো করে। আগামী দিনেও তাই বিস্তর লড়াইয়ে নামতে রাজি আলেকজ়ান্দ্রিয়া। তবে এ বার যুদ্ধটা নিজের রুটি-রুজি জোগাড়ের নয়।

তার কথায়, ‘কংগ্রেসের বেশির ভাগ সদস্যই তো সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্মেছেন। তাদের পক্ষে শ্রমজীবীদের লড়াইটা বোঝা সম্ভব নয়। পাক্কা তিনটে বছর স্বাস্থ্যবিমা ছাড়া কাটানোটা যে কেমন উদ্বেগের, সেটাই বা তারা বুঝবেন কী করে?’

(ঢাকাটাইমস/১১নভেম্বর/এসআই)