মাশরাফি: মাঠ থেকে মাঠে
ফেসবুকে চোখ রাখা যাচ্ছে না। সরগরম একটা ইস্যুতেই: মাশরাফি কেন রাজনীতিতে?
আমার পক্ষ জিজ্ঞাসা করবেন নিশ্চয়ই।উত্তর দেব। আজ কোনো বাধা মানবো না। তবে, একটু পর।
জ্বরের জন্য অফিস ছুটি নিয়েছেন কখনো? কিংবা একটু আঘাতে হাত-পা ছিলে গেলে কর্মক্ষেত্রে যাওয়া থেকে বিরত থেকেছেন?
আর পেটে ব্যথা হলে বা পেটে ব্যথার কথা বলে স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন কখনও?
যদি উত্তর হ্যাঁ হয়, তাহলে ভেবে দেখুন কত অল্পতেই থামতে জানি আমরা।
আর মাশরাফি? ভয়াল ইনজ্যুরি আর ঝুঁকি নিয়ে লড়ে গেছেন দিনের পর দিন।
এই কর্মনিষ্ঠা, এই দেশপ্রেম ভাবালো।
আমরা যখন বলি, দেশে কবে যে ইতিবাচক রাজনীতিবিদ আসবে? আমরা আসলে মন থেকে বলি না। আমাদের চাওয়াটা পদ্মপাতার পানির মতো। টলমল করে। কখনও চাই।কখনও চাই না।
স্বার্থ হাসিলে রাজনীতির প্রভাব প্রয়োজন হলে সব ঠিক আছে। আবার, অন্য আলোতে আমি রাজনীতির ব্যবচ্ছেদ করি নেতিবাচকভাবে।
তাহলে বলতে চাইছি কি? মাশরাফি রাজনীতিতে। ছি ছি করছেন অনেকে। কেউ জানিয়েছেন সাধুবাদ।
আমি এই সিদ্ধান্তে মাশরাফিকে বুকে জড়িয়ে ধরতে চাই।
মাঠের খেলায় বাঘের হৃদয় দেখিয়েছেন মাশরাফি। শার্দুলগুলোকেও লড়তে শিখিয়েছেন যে কোন পরিস্থিতিতে।
কিছুদিন পর হয়তো অবসরে যাবেন। তারপর?
ধীরে ধীরে হৃদয়ে বসানো মাশরাফি বিদায় নেবেন আপনার আলোচনার টেবিল থেকে, চায়ের কাপে ঝড় তোলা তর্ক থেকে।
এরপর হয়তো কোচিং বা কমেন্ট্রি!
এভাবে দেখতে চান মাঠের বাইরের মাশরাফিকে???
আমি চাই না। ক্রিকেট প্রাণের খেলা। সন্দেহ নেই। তা তো সেই দেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্যই,তাই না?
তাই যদি হয়, তবে দেশের এমপি হয়ে জনগনের সেবা করলে ছি ছি কেন?
কোনকিছুর লোভ কি দেখেছেন মাশরাফির?
আমি দেখেছি।
দেশকে আরও দেবার লোভ।
কজন পারে?
দেশের জন্য, জনগনের জন্য মাশরাফির সাহসটা, দেশপ্রেমটা, কলিজাটা বড় দরকার।
"এসো মাশরাফি, মাঠ থেকে মাঠে।
ক্রিকেট কিংবা কিষাণের।"
ভালোবাসি মাশরাফি। ভালোবাসি বাংলাদেশ।
মনদীপ ঘরাই: লেখক এবং সিনিয়র সহকারী সচিব, বাংলাদেশ সরকার