নয়া পল্টনে সংঘর্ষ: তিন মামলা ডিবিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ২০:৪৭

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মনোনয়ন নেয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দায়ের করা তিনটি মামলা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবিতে) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (পূর্ব বিভাগ) কাছে মামলাগুলো হস্তান্তর করা হয়।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ পূর্ব বিভাগের উপ-কমিশনার খন্দকার নুরুন্নবী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আজকে মাত্র অর্ডার হয়েছে। আগামীকাল মামলার নথিপত্র আমাদের কাছে আসবে। পরে আমরা তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে তদন্ত কাজ শুরু করব।’

রাস্তা ফাঁকা করাকে কেন্দ্র করে বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ও নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশের ২১ জন, আনসারের দুই জন ও বিএনপির নেতাকর্মীরা আহত হন। এছাড়া কার্যালয়ের পাশে থাকা পুলিশের দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। এ ঘটনায় পল্টন থানায় তিনটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। তিন মামলায় আসামি করা হয়েছে ৪৮৮ জনকে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬৮ জন।

বুধবার রাতে পল্টন মডেল থানায় ২১ নম্বর মামলাটি দায়ের করা হয় বিস্ফোরক ও বাংলাদেশ দ-বিধি আইনে। ২১ নম্বর মামলার বাদী পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোমেন কুমার বড়ুয়া। মামলার এজহারে বলা হয়, নির্বাচনী আচরণ বিধির নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও প্রথমে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের নেতৃত্বে ব্যান্ডপার্টি ব্যানার-ফেস্টুনসহ শোডাউন নিয়ে বিএনপির পল্টন কার্যালয়ে আসে।

১৯২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত সহস্রধিক বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীকে ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় ইতোমধ্যে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বিশেষ আইনে করা ২২নম্বর মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৫৯ জনকে। এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৩ জনকে এবং বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনে করা ২৩ নম্বর মামলায় ১৩৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ২৬ জনকে।

এরপর নবীউল্লা নবী ও কফিল উদ্দিনের নেতৃত্বে পৃথক মিছিল শোডাউন নিয়ে আসে। পরে মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে ৮-১০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে মিছিল সহকারে কার্যালয়ে আসে। তারা নয়াপল্টনের ভিআইপি সড়ক বন্ধ করে মিছিল ও শোডাউনের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ তৈরি ও যানচলাচল বন্ধ করে। তাদের রাস্তার এক লেন ছেড়ে দিতে অনুরোধ করা হলে তারা ক্ষিপ্ত হয়। আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি রুহুল কবির রিজভীকেও জানানো হয়। মাইকেও বলা হয়। এরপর বেলা ১২টা ৫৫ মিনিটে মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে কার্যালয়ের পাশের সড়কে অবস্থান নেয়। তাদের পার্টি অফিস থেকে লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তায় দাঙ্গা করে পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। প্রায় একই ধরনের অভিযোগ বাকি দুই মামলার এজহারেও উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে ২২ নম্বর মামলায় উল্লেখ করা হয়, ১-৬ নম্বর আসামিসহ পার্টি অফিসে উপস্থিত অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রত্যক্ষ মদদ, নির্দেশ ও অর্থায়নে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল ও দেশে অস্থিতিশীল এবং নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরির অসৎ ও অভিন্ন উদ্দেশ্যে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাস্তায় দাঙ্গা করে পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে ইচ্ছেকৃতভাবে আক্রমণ, সরকারি কাজে বাধা, লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল দিয়ে পুলিশকে আক্রমণ করে মারাত্মক জখম, পুলিশের যানবাহন পুড়িয়ে কার্যক্ষমতা ব্যাহতের চেষ্টা করা হয়।

আর ২৩ নম্বর মামলায় উল্লেখ করা হয়, তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করে যে, তারা ওই ছয়জনসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে ও মদদে পলাতক এজহার নামীয় আসামিসহ আরও অনেককে নিয়ে পুলিশের মনোবল ভেঙে আসন্ন সংসদ নির্বাচন বানচাল এবং অস্থিতিশীল ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরির অসৎ ও অভিন্ন উদ্দেশ্যে এসব ঘটনা ঘটানো হয়।

আসামিদের নিক্ষিপ্ত ইটের আঘাতে মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) শিবলি নোমান, পল্টন জোনের সহকারী কমিশনার মিশু বিশ্বাস, পল্টন থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবু সিদ্দিকসহ ২৩ সদস্য আহত হন।

ঢাকাটাইমস/১৫ নভেম্বর/এএ/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :