বিক্রি হয়ে গেছেন মোদি

প্রকাশ | ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ২১:৪২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

ফ্রান্সের কাছ থেকে ভারতের অত্যাধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমান কেনাবেচার প্রসঙ্গটি বেশ কিছুদিন ধরেই বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টে দাখিল হয়েছে একাধিক জনস্বার্থ মামলা। এই নিয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও।

বৃহস্পতিবার রাহুল গান্ধী বলেছেন, রাফাল যুদ্ধ বিমানের সর্বোচ্চ দাম প্রায় দেড় গুণ বাড়িয়েছেন। ফরাসি সরকারের কাছ থেকে ‘সার্বভৌম নিশ্চয়তা’ এবং ‘ব্যাংক গ্যারান্টি’ নেননি। ঠিক করেছেন যে কোনও মতান্তরের ক্ষেত্রে ভারতের বদলে সালিশি হবে সুইজারল্যান্ডে। আর এসবই করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী, আইন মন্ত্রণালয় এবং বিমান বাহিনীর আপত্তি উড়িয়ে। সরকারি নোট ফাঁস করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে এমনই এক গুচ্ছ অভিযোগ আনল কংগ্রেস। দলীয় সভাপতি রাহুল গান্ধী টুইট করলেন, ‘বিক গ্যায়া চৌকিদার।’

প্রশ্ন তুলেছেন রাফাল নিয়ে মামলাকারী আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণও। তার দাবি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নথি বলছে, রাফাল নিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। যদিও একমাত্র প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ইন্টারনাল নেগোশিয়েটিং টিম (আইএনটি)-এরই এই আলোচনা চালানোর এখতিয়ার রয়েছে।

কংগ্রেসের অভিযোগ, দোভালই ফ্রান্স সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের ‘সার্বভৌম নিশ্চয়তা’ দেওয়ার ব্যাপারে ছাড় দিয়েছেন। নেননি ব্যাংক গ্যারান্টিও। যদিও এ ব্যাপারে বারবার জোর দিয়েছিল আইন মন্ত্রণালয়। তাতে সায় ছিল তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর এবং বিমান বাহিনীরও।

কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, রাফালের দাম বাড়ানো নিয়েও পারিকর এবং প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণ পরিষদের আপত্তি ছিল। তা উপেক্ষা করে মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির বৈঠকে দাম দেড় গুণ বাড়িয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। ‘সার্বভৌম নিশ্চয়তা’ ও ব্যাংক গ্যারান্টি নিয়ে আপত্তিতেও কান দেননি।

কংগ্রেসের প্রশ্ন, ‘দাম বাড়ানো, দোভালকে দিয়ে রফা করানো— এ সব কার ফায়দার জন্য? একে তো রাফালে শিশু ভূমিষ্ঠের পর গর্ভধারণ হয়েছে! আর সে জন্য দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিলেন প্রধানমন্ত্রী।’

রাফাল মামলায় রায় স্থগিত রেখেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। কংগ্রেস অবশ্য মনে করছে, তদন্ত না-হলে সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট কী-ই বা করতে পারে? তদন্তের জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) দরকার। সংসদের আসন্ন অধিবেশনে এই দাবিতে জোট বেঁধে সরব হবে বিরোধীরা। সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে রাফালের তদন্ত চেয়েছেন। এনডিএ শরিকও মুখপত্রে বলেছে, বফর্সের থেকে বড় দুর্নীতি রাফাল।

তবে কংগ্রেস বলছে, সুপ্রিম কোর্টের রায় যা-ই হোক, রাফালের বিচার হবে মানুষের দরবারে। রোজ নতুন তথ্য আসছে। ভারতের ধনকুবের অনিল আম্বানি যে রাফালে ২৯ হাজার কোটি টাকার বরাত পেয়েছেন, তার ১১টি সাবসিডিয়ারিতেও যে অন্য বরাত পেয়েছেন, সেই নথিও হাতে এসেছে।

(ঢাকাটাইমস/১৬নভেম্বর/এসআই)