নাজমুল হুদাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

প্রকাশ | ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ২২:৩৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ঘুষ গ্রহণের মামলায় সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদাকে বিচারিক আদালতের দেওয়া সাত বছরের কারাদণ্ডের সাজা কমিয়ে চার বছর করে হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হয়েছে। এতে তাকে ৪৫ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বেঁধে দেয়া সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের মন্ত্রী আত্মসমর্পণ না করলে তাকে গ্রেপ্তারের কথাও বলা হয়েছে।

এই আদেশের ফলে নাজমুল হুদার আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়া অনিশ্চিত হয়ে গেল। কারণ, নৈতিক স্খলনজনিত কারণে দুই বছরের সাজা হলে দণ্ড ভোগ করার পাঁচ বছর পর্যন্ত তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না।

নাজমুল হুদার এরই মধ্যে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্কচ্যুতি হয়েছে। এবার তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন ঢাকা-১৭ আসনের জন্য।

আলোচিত এই রাজনীতিক নির্বাচন করতে পারবেন কি না- জানতে চাইলে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘দণ্ড স্থগিত না হলে কীভাবে নির্বাচন করবেন?’

দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ২১ মার্চ ধানমন্ডি থানায় মামলাটি করে দুদক। একই বছরের ২৭ আগস্ট বিচারিক আদালতের রায়ে নাজমুল হুদার সাত বছর এবং সিগমা হুদাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়। রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে আপিল করেন। শুনানি শেষে ২০১১ সালের ২০ মার্চ হাইকোর্ট সাজার বাতিল ঘোষণা করে। খালাস পান নাজমুল হুদা দম্পতি।

এই আদেশের বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে। শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ নতুন করে শুনানির নির্দেশ দেয় হাই কোর্টকে।

২০১৭ সালের বছরের ৮ নভেম্বর বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ হুদা দম্পতির আপিল খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন।

এই আদেশের ফলে নাজমুল হুদার পক্ষে আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়া অনিশ্চিত হয়ে গেছে। কারণ, তার দণ্ড স্থগিত না হলে তার ভোটে আসার যোগ্যতা থাকবে না।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ‘দুর্নীতি একটি অভিশাপ। সমাজের সবক্ষেত্রে দুর্নীতি দেখা যায়। দুর্নীতির সমাজের নৈতিক অবস্থা নষ্ট করে এবং সরকারি কর্মচারীর দুর্নীতি কেবল নৈতিক অবস্থাই নষ্ট করে না বরং এটি জাতীয় অর্থনীতি ও জাতীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর।’

‘সরকারের উচ্চপর্যায়ে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি করা হলে তা জাতীয় স্বার্থ, অর্থনীতি ও দেশের ভাবমূর্তির জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।’

ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে নাজমুল হুদার সাত বছর এবং তার স্ত্রী সিগমা হুদার তিন বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা হয়। এর বিরুদ্ধে আপিল করেন তারা। কারাদণ্ড কমালেও নাজমুল হুদাকে দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ বহাল রেখেছে হাইকোর্ট।

তবে নাজমুল হুদা এবং তার স্ত্রী সিগমা হুদা কারাগারে ছিলেন, তা সাজাভোগ হিসেবে গণ্য হবে। বাকি সময় তাদেরকে থাকতে হবে কারাগারে।

নাজমুল হুদার আইনজীবী আশানুর রহমান বলেন, ‘এখেনো৪৫ দিন সময় আছে। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করা হবে।’

 (ঢাকাটাইমস/১৮নভেম্বর/এমএবি)