ট্রাম্পের অভিযোগ, ইমরানের ব্যাখ্যা

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ১৯:৫৫ | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ২০:০৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

পাকিস্তান কোটি কোটি টাকার সামরিক সহায়তা প্রদান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে গত রবিবার এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা পাওয়ার পরও পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কিছুই করেনি৷ উপরন্তু ওসামা বিন লাদেনকে গা ঢাকা দিতে সাহায্য করেছিল৷ খবর জিও নিউজ ও হিন্দুস্তান টাইমসের।

চলতি বছরের শুরুর দিকে জঙ্গি দমনে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে পাকিস্তানে ৩০ কোটি ডলার সহায়তা বন্ধ করে যুক্তরাষ্ট্র।

ফক্স নিউজকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘একটু ভাবুন, পাকিস্তানে সবাই জানত লাদেন কোথায় রয়েছে৷ প্রতি বছর আমরা  পাকিস্তানকে ১.৩ কোটি ডলার সহায়তা প্রদান করে আসছিলাম৷ অন্যদিকে পাকিস্তান আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দিয়েছিল৷ কিন্তু আর তাদের সেই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না৷ আমি এটি বন্ধ করেছি কারণ পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কিছুই করেনি।’

যুক্তরাষ্ট্রকে পাকিস্তানের মৈত্রী রাষ্ট্র বলা হয়ে থাকে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় নিজের ভূমিতে পাকিস্তান হাক্কানি নেটওয়ার্ক, আফগান তালেবানসহ জঙ্গি নেটওয়ার্কগুলোর কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে অভিযোগ তুলে কড়া সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জবাব

মার্কিন প্রেসিডেন্টের ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই মন্তব্যের জেরে মুখে খুলেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সোমবার তিনি বলেছেন, আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে ওয়াশিংটনের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা উচিত। তাদের ব্যর্থতার জন্য পাকিস্তানকে বলির পাঁঠা বানানোর চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। 

ইমরান খান ধারাবাহিক টুইট বার্তায় বলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কথা বলার আগে ট্রাম্পের এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানা উচিত:

১. নাইন এলিভেন হামলার সঙ্গে কোনো পাকিস্তান নাগরিক জড়িত ছিল না। তবুও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল পাকিস্তান। 

২. এই যুদ্ধে পাকিস্তান ৭৫ হাজার মানুষ হতাহত হয় এবং ১২৩ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য দিয়েছিল মাত্র ২০ বিলিয়ন ডলার।  

৩. পাকিস্তানের আদিবাসী এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আফগানিস্তান যুদ্ধে পাকিস্তানের সাধারণ নাগরিকদের জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

৪. পাকিস্তান স্থল ও আকাশপথে যোগাযোগ করার সুযোগ অব্যাহত রাখে।

ইমরান ট্রাম্পের কাছে প্রশ্ন রাখেন, যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কোনো মিত্র দেশ আছে- যারা এমন ত্যাগ স্বীকার করেছে? 

পাকিস্তানকে বলির পাঁঠা না বানাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইমরান খান বলেন, ‘এক লাখ ৪০ ন্যাটো বাহিনীর সদস্য, আড়াই লাখ আফগান সেনা এবং এক ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে আফগানিস্তান যুদ্ধে। তবুও যুক্তরাষ্ট্র জয় লাভ করতে পারছে না।তালেবান আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়েছে। এই বিষয়ে গুরুত্বসহকারে মূল্যায়ন দরকার।’

(ঢাকাটাইমস/১৯নভেম্বর/এসএই)