তিন মেয়ে হওয়ায় স্ত্রীকে তালাক, নবাজাতক বিক্রি

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ২২:২৬

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পরপর তিন কন্যা সন্তানকে জন্ম দেয়ায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে মাত্র নয়দিনের কন্যা শিশুকে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি পাইকপাড়া এলাকায়।

উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের রবিউল ইসলাম একই এলাকার জেসমিনের সাথে গত ১০ বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে সুখেই ছিল তাদের সংসার। পরে তাদের দুটি কন্যা সন্তান হয়। তারপর সাত নভেম্বর আরেকটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন জেসমিন। এই নিয়ে তিনটি সন্তানের জন্য দেন তিনি। এই অপরাধে নয় দিনের শিশুসহ তাকে তালাক দেন তার স্বামী রবিউল। পরে স্থানীয় মাতব্বররা মিলে দর কষাকষি করে ওই শিশুকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। শিশুটিকে একই এলাকার ঈদগাহপাড়ার আয়ূব আলীর কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়।

জেসমিন অভিযোগ করেন, তিনটা বাচ্চা হওয়ায় আমাকে আমার স্বামী জোর করে স্থানীয়দের সহায়তায় তালাক দিয়েছে। সেই সঙ্গে আমার নয় দিনের মেয়েকে মণ্ডলরা বিক্রি করে দিয়েছে।

জেসমিনের বাবা রেজাউল হক জানান, বিয়ের পর আমার মেয়ের দুইটা মেয়ে হয়। কিছুদিন আগে আবার একটি মেয়ে জন্ম দেয়। এই জন্য আমার মেয়েকে তালাক দেয় তার স্বামী। তিন দিন আগে স্থানীয় মেম্বার শরিফুল, মণ্ডল শহিদুল ইসলাম, খলিসাকুণ্ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান আসলাম টাকার বিনিময়ে আমার মেয়েকে তালাকের ব্যবস্থা করে। আমার নাতনিকে বেচে দেয়। আমার মেয়ে বাচ্চা না দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে ভয় দেখিয়ে তারা কেড়ে নিয়ে যায়। পরে শুনছি, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তারা বাচ্চাটি বিক্রি করে দিয়েছে। এরপর আমি বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানাই।

এদিকে একাধিকবার রবিউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। বিচারে আমি ছিলাম না।

খলিসাকুণ্ডি ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি তবে কারা বিচার করেছে বা কি হয়েছে সেটা জানি না।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমিও শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ করেনি। লিখিতভাবে অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৯নভেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)