রাজশাহী-৪

এনামুল-হেনাকে নিয়ে আলোচনা

রিমন রহমান, রাজশাহী
 | প্রকাশিত : ২০ নভেম্বর ২০১৮, ১৫:১৯

বিশাল আয়তনের বাগমারা উপজেলা নিয়ে গঠিত রাজশাহী-৪ আসন। সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে বহুল আলোচিত এই উপজেলা। তবে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সন্ত্রাসবাদের জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে উন্নয়ন। তাই এবারও আসনটির মনোনয়নের ব্যাপারে আলোচনায় আছেন বর্তমান এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক।

অন্যদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে সংশ্লিষ্টতার বক্তব্য দিয়ে দল থেকে বহিষ্কৃত হন বিএনপির সাবেক এমপি আবু হেনা। তবে গত ২৫ অক্টোবর তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। নির্বাচনের আগে দলের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। নেতাকর্মীরা মনে করছেন, এই নির্বাচনে প্রার্থী করতেই তাকে ঘরে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বাগমারা আয়তনের দিক থেকে রাজশাহীর সবচেয়ে বড় উপজেলা। এর আয়তন ৩৬৬ বর্গ কিলোমিটার। ইউনিয়ন ১৬টি। বাগমারা আসনে ১৯৭০, ’৭৩ ও ’৮৬ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে এবং ’৮৮ ও ’৯১ সালে জাতীয় পার্টির টিকিটে এমপি নির্বাচিত হন প্রয়াত সরদার আমজাদ হোসেন। এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপির টিকেটে এমপি হন সাবেক সচিব আবু হেনা।

তবে বহিষ্কৃত হলে ২০০৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়েন আবু হেনা। সেখানে মনোনয়ন পান জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল গফুর। এ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হন। এমপি নির্বাচিত হন দেশের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘এনা গ্রুপের’ চেয়ারম্যান ও বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। পরে ২০১৪ সালের নির্বাচনেও তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দ্বিতীয়বারের মতো এমপি হন।

এবার এ আসনে নির্বাচন করতে আওয়ামী লীগের ছয়জন মনোনয়ন ফরম তুলে জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু ও তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদও আছেন। তবে এবার নির্বাচনে মেয়র-চেয়ারম্যানদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলেই ঘোষণা এসেছে। আর অন্য চারজনের মধ্যে শুধু এমপি এনামুলই শক্তিশালী অবস্থানে আছেন। দুই মেয়াদে এমপি থাকলেও এলাকায় তাকে ঘিরে তেমন বিতর্ক নেই। তাই এবার তিনি তৃতীয়বারের মতো মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে মনে করছেন বাগমারাবাসী।

এনামুলের সমর্থকদের দাবি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এ আসনে বর্তমান এমপি এনামুল হকের বিকল্প নেই। মাঠ পর্যায়ে রয়েছে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা। বিশেষ করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এলাকার হাজার হাজার গরিব অসহায় মানুষকে নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করে বাগমারার মানুষের কাছে বড় একটি জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। ফলে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটারদের কাছে এমপি এনামুল এখন অনেক জনপ্রিয় নেতা বলেই পরিচিত।

এমপি এনামুল হক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত এ আসনে যারা এমপি নির্বাচিত হয়েছেন তাদের সবার চেয়ে বেশি কাজ করেছি আমি। নেতাকর্মীরা আমাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি করেছেন। আমি দলকে শক্তিশালী করেছি। বাগমারায় এখন বিএনপি ঘাঁটি নয়। তাই বিশ্বাস করি দল আমাকে এর প্রতিদান দেবে। নৌকা প্রতীক আমিই পাব।’

এদিকে বাগমারা আসনে সাবেক এমপি আবু হেনা ছাড়াও আরও পাঁচজন বিএনপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তাদের মধ্যে আছেন জেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু, সহ-সভাপতি, অধ্যাপক আব্দুল গফুর, অধ্যাপক মকলেছুর রহমান, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডিএম জিয়াউর রহমান জিয়া ও আমেরিকা প্রবাসী বিএনপি নেতা ডা. জাহিদ দেওয়ান শামীম। তবে নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা চলছে শুধু আবু হেনাকে নিয়ে।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, আবু হেনা দল থেকে বহিষ্কারের পর এলাকায় তেমন আসতেন না। তিনি ঢাকায় থাকতেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গেও তার তেমন যোগাযোগ ছিল না। তারপরও এমপি থাকাকালীন সময়ে দলে এবং এলাকায় তার যে অবদান সে জন্য উপজেলা বিএনপির একটা বড় অংশ চাইছিল তাকে ফিরিয়ে এনে মনোনয়ন দেওয়া হোক। এ জন্য তাকে নির্বাচনের আগে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও মনে করছেন নেতাকর্মীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবু হেনা ঢাকা টাইমসকে বলেন, এলাকার এমপি ছিলাম। পিছিয়ে পড়া প্রত্যন্ত এলাকাকে আমি এগিয়ে নিয়েছিলাম। দল সেসব কথা যেমন ভুলবে না তেমনি এলাকার মানুষও ভোলেনি। তাই আশা করছি, দল মনোনয়ন দেবে। আর বিগত দিনের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে ভোটাররা আমাকে নির্বাচিতও করবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :