অজ্ঞাত স্থান থেকে প্রকাশ্যে এরশাদ
বেশ কিছুদিন বিশ্রাম শেষে অবশেষে প্রকাশ্যে এলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। জানান, তিনি কোন জোটে যাবেন, সেই সিদ্ধান্ত নিতি নিজে নেবেন।
চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার সিএমএইচ ভর্তি হন এরশাদ। শনিবার হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে নিজের বাসায় না গিয়ে অজ্ঞাতস্থানে স্থলে যান। পরে জানা যায় গুলশানের একটি বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছেন তিনি। এসময় তিনি নিজের পছন্দের লোক ছাড়া কারো সঙ্গে যোগাযোগও করেন নাই তিনি। এ নিয়ে শুরু হয় নানা গুঞ্জন।
সেই সব সবগুঞ্জনকে ছাপিয়ে প্রকাশ্যে আসলেন সাবেক এ রাষ্ট্রপতি। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে গুলশান-১ এর ইমানুয়েলস মিলনায়তনে আসেন। গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে কথা বলেন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে। বক্তব্য শেষে তিনি তার বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসভবনে ফিরেন। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে এরশাদকে হঠাৎ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সে সময় তিনি বিএনপি-জামায়াতের মতোই ভোটে না যাওয়ার কথা বলছিলেন। আর দলের একাংশের নেতারাও ভোট থেকে সরে দাঁড়ান, যদিও রওশন এরশাদের নেতৃত্বে আরেক অংশ আবার ভোটে যায়।
অনিচ্ছা সত্ত্বেও রংপুর-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এরশাদ। আর তিনি একা সংসদে দিয়ে শপথ নেন। দশম সংসদের পুরোটা সময় জাতীয় পার্টি ছিল বিরোধী দলে। যদিও মন্ত্রিসভাতেও তাদের সদস্য ছিল। আর এবার বিএনপি-জামায়াত জোট ভোটে এলে ২০০৮ সালের মতোই আওয়ামী লীগকে নিয়ে মহাজোট করার ঘোষণা আছে।
এরই মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর সময় চেয়ে চিঠি দিয়েছেন এরশাদ। তার দল ৭৬ আসনে মহাজোটের মনোনয়ন চেয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ এত বেশি দিতে রাজি নয়।
প্রত্যাশিত আসন না পেলে জাতীয় পার্টি বিএনপির নতুন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যেতে পারে বলেও গুঞ্জন রয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করার কথা জানিয়েছের এরশাদ। বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে অন্য জোটে যেতে হলে এর সিদ্ধান্ত আমি নেব।’
‘জাতীয় পার্টি বিলীন হয়ে যায়নি। এ জন্য ৩০০ আসনে প্রার্থী আছে কি না তা দেখতে চেয়েছি। আর আমরা সফল হয়েছি। সবাইকে প্রার্থী হিসেবে দিতে পারব না। আমি যাকে যোগ্য ভাবব সে মনোনয়ন পাবেন। আর এটা সবাইকে মেনে নিতে হবে।’
গত ১১ নভেম্বর থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়ে চলে পাঁচ দিন। বিক্রি হয় দুই হাজার ৮৬৫ টি। তবে তার মধ্যে প্রাথমিক বাছাই করে ৭৮০ জনের স্বাক্ষাৎকার নেয়া হচ্ছে। সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে এই প্রক্রিয়া।
এরশাদ বলেন, ‘এখান থেকে ৩০০ আসনের প্রার্থী নির্ধারণ হবে। তবে রাজনৈতিক কারণে দলের চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত নেবেন তা সবাই মেনে নেবেন।’