ছুরি দিয়ে নারীর চোখ উৎপাটন
নরসিংদীর শিবপুরে চুরির প্রতিবাদ করায় নাজমা বেগম নামের এক গৃহবধুর এক চোখ উপড়ে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
গত বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে উপজেলার সৈয়দনগর দড়িপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নাজমা বেগম সৈয়দনগর এলাকার বাসিন্দা। তিনি মতিন মিয়ার স্ত্রী।
এই ঘটনায় নাজমার বাবা আব্বাস আলী শিবপুর মডেল থানায় মামলা করেছেন। শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বজনরা জানান জানায়, গত মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) রাতে নাজমা বেগমের একটি ছাগল চুরি করে নিয়ে যায় স্থানীয় কয়েকজন। দুই দিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চুরির ঘটনাটি জানাজানি হলে নাজমা বেগমের স্বজনরা হৃদয় মিয়া নামে একজনকে এ বিষয়ে জেরা করেন। এ সময় সেখানে ছিলেন সজিব মিয়া নামে একজন।
ওইদিনই রাত আটটার দিকে সজিব মিয়া তাঁর নিজ বাড়ি ইটাখোলা ফেরার পথে তাঁর গতিরোধ করা হয়। পরে এলোপাতাড়ি মারধোর শুরু করলে চিৎকার শুনে নাজমা বেগম এগিয়ে যান। এ সময় ছুরি দিয়ে নাজমা বেগমের বাম চোখে আঘাত করে চোখ উপরে ফেলা হয়।
পরে নাজমার বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। এই ভুক্তভোগী নারীকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে শনিবার বিকেলে বাড়িতে আনা হয়।
এ সময় নাজমা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাঁরা আমার ছাগল চুরি করে খেয়ে ফেলেছে। আবার প্রতিবাদ করায় আমার চোখ তুলে নিয়েছে।’
গৃহবধূর স্বামী মতিন মিয়া বলেন, ‘এই সন্ত্রাসীরা এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করে। তারা এলাকায় অনেক প্রভাবশালী। তাই তাদের কোন অপরাধের বিচার হয় না। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বললে উল্টো তাকেই হয়রানি হতে হয়।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল বাশার খান বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত নৃশংস ও বর্বর। আমি এই ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’ নাজমার স্বজনরা জানিয়েছেন, মোরশেদ মিয়া নামে একজন তার চোখ তুলে নিয়েছে। কিন্তু তাকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি।
শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ছাগল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি মারামারি হয়েছে। ওই ঘটনায় নাজমা আক্তারের চোখে জখম হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা হত্যা চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করেছেন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’