হ্যাম রেডিও পরীক্ষার্থীদের নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত
৮ ডিসেম্বর ঢাকায় অ্যামেচার রেডিও সার্ভিস পরীক্ষা নিচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এবারের পরীক্ষায় চার শতাধিক পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। পরীক্ষার্থীদের নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় একটি কর্মশালার আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ অ্যামেচার রেডিও সোসাইটি অব বাংলাদেশ (এআরএসবি)। আয়োজনের সহযোগী ছিল ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
কর্মশালায় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন নিয়মাবলী, প্রশ্নব্যাংক নিয়ে আলোচনা এবং গাণিতিক সমস্যা সমাধানের উপায় নিয়ে অ্যামেচার রেডিও অপারেটররা দিক-নির্দেশনা দেন।
রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার কক্ষে বিকেল পাঁচটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালাকে দুটি ভাগে ভাগ করে দুইজন অ্যামেচার রেডিও অপারেটর পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। এছাড়াও আলোচনা হয় পরীক্ষার সিলেবাস নিয়েও।
কর্মশালাতে বিভিন্ন পেশার দেড় শতাধিক পরীক্ষার্থী এবং ৩৫ জন কল সাইনপ্রাপ্ত হ্যাম উপস্থিত ছিলেন।
এআরএসবি অ্যামেচার রেডিও পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি গ্রুপ পরিচালনা করেন। পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য, প্রশ্নের সমাধান এবং গাণিতিক সমস্যা সমাধানের উপায় ভিডিওর মাধ্যমে গ্রুপে প্রকাশ করা হবে বলেও জানান এআরএসবির আহ্বায়ক অনুপ কুমার ভৌমিক।
১৯৯১ সালে সাবেক বাংলাদেশ তরঙ্গ ও বেতার বোর্ডের ১৮ তম সভায় এদেশে প্রথম অ্যামেচার রেডিও সার্ভিস প্রবর্তণের জন্য লাইসেন্স প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরপর ১৯৯৫ সালে প্রথম অ্যামেচার রেডিও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে বিটিআরসি হতে ২০০৩, ২০০৮, ২০১৩ এবং সর্বশেষ ২০১৭ সালে অ্যামেচার রেডিও পরীক্ষা নেয়।
২০১৩ সালের পরীক্ষায় ১৬৬ জন অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে ১৪৭ জন পরীক্ষার্থী কৃতকার্য হন। ২০১৭ সালে ২১০ জন পরীক্ষা দেন। যাদের মধ্যে ১৭৭ জন পাশ করেন।
অ্যামেচার রেডিও সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পরিক্ষার্থীগণকে বিটিআরসি হতে অ্যামেচার রেডিও সার্ভিস সার্টিফিকেট দেয়া হয়। পরবর্তীতে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের অনুকূলে কল সাইনসহ অ্যামেচার রেডিও লাইসেন্স দেয়া হয়। এরপর তারা রেডিও সেট কেনার জন্য বিটিআরসির কাছ থেকে অনাপত্তিপত্র সংগ্রহ করে রেডিও সংগ্রহ করেন। সাধারণত হ্যাম রেডিও সেট বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
অ্যামেচার রেডিও সাধারণত নির্দিষ্ট বেতার তরঙ্গে অবাণিজ্যিকভাবে তথ্য আদান প্রদান, গবেষণা, ব্যক্তিগত প্রশিক্ষণ এবং জরুরি অবস্থায় ব্যবহৃত একটি টেলিযোগাযোগ সার্ভিস। ‘অ্যামেচার’ শব্দটি সাধারণত আর্থিক সংশ্লিষ্টতাবিহীন সম্পূর্ণ ব্যক্তিগতভাবে প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ে আগ্রহী ব্যবহারকারীকে বাণিজ্যিক ব্রডকাস্টিং, জননিরাপত্তা প্রদানকারী সংস্থা অথবা পেশাদার টু-ওয়ে সার্ভিস হতে পৃথক করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
প্রাকৃতিক দূর্যোগ কিংবা জরুরি অবস্থায় অ্যামেচার রেডিও সার্ভিস টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে ভূমিকা রাখে। অ্যামেচার রেডিও অপারেটরদের হ্যাম বলা হয়।
(ঢাকাটাইমস/১ডিসেম্বর/এজেড)