নারীযাত্রী জিম্মি ও অপহরণ করে মুক্তিপণ নিত ওরা

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:৫৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বাসে নারীযাত্রীদের জিম্মি ও অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় চক্রের মূল হোতাসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তারা মুক্তিপণ আদায়ে নারীযাত্রীদের জিম্মি করে শারীরিক নির্যাতন ও মোবাইল ফোনে ভিডিও করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিতেন।

ভুক্তভোগী এক নারীর অভিযোগের পর চক্রটিকে ধরতে অভিযানে নামে র‌্যাব-১। শনিবার রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর ও আশুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

রবিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ইমরান, জিহাদ আলী, শুভ, রকিবুল হাসান, নাঈম মিয়া, জুলহাস হোসেন, বাবুল হোসেন, হাবিবুর রহমান ও রকিবুল ইসলাম। তাদের কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, একটি ম্যাগজিন, দুই রাউন্ড গুলি, পাঁচটি ধারালো অস্ত্র ও ডাকাতির কাছে ব্যবহৃত আসমানি ও মৌমিতা পরিবহনের দুটি বাস জব্দ করা হয়েছে।

মুফতি জানান, চক্রটি আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া সড়কে যাত্রীবেশে অপহরণ করত। তারা নারীযাত্রীদের শারীরিক নির্যাতন করে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করত। কয়েকদিন আগে যানবাহনে নারীযাত্রীদের শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ আসার পর তদন্তে নামে র‌্যাব। পরে আব্দুল্লাহপুর, কামারপাড়া ও আশুলিয়া এলাকা থেকে চক্রের প্রধান ইমরানসহ ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরো জানান, অপহরণে চক্রটির ১০/১৫ জন সদস্য অংশ নিতেন। তাদের কয়েকজন যাত্রীবেশে বাসের মধ্যে আগে থেকে থাকতেন। আর বাকিরা বিভিন্ন স্ট্যান্ড থেকে বাসে উঠতেন। যেসব সাধারণ যাত্রী বাসে উঠতেন, তাদেরকে জিম্মি ও মারধর করে অর্থ আদায় করা হত। কেউ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে নির্জন স্থানে ফেলে দেওয়া হত। অপহৃতের মোবাইল ফোন দিয়ে পরিবারের সদস্যদের ফোন করেও অর্থ আদায় করতেন তারা।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, জব্দ করা আসমানি পরিবহনের বাসটি নারায়ণগঞ্জের মদনপুর থেকে উত্তরা-আব্দুল্লাহপুর এবং মৌমিতা পরিবহনের বাসটি নারায়ণঞ্জের চাষারা থেকে গাজীপুরের চন্দ্রা পর্যন্ত চলাচল করত। সাধারণত রাত আটটার পর তারা এই দুই বাস নিয়ে ডাকাতি ও অপহরণের কাজে নেমে পড়তেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চক্রটির মূল হোতা ইমরান বলে জানা গেছে। তিনি চার বছর ধরে ডাকাতি ও অপহরণে যুক্ত। বন্ধু বশিরের মাধ্যমে তিনি এই পেশায় প্রবেশ করে ধীরে ধীরে নিজে দলনেতা হয়ে ওঠেন। চুরির মামলায় ছয় মাস জেলে খেটেছেন।

চার বছরে ত্রিশটির বেশি অপহরণ ও ডাকাতির কথা স্বীকার করেছেন ইমরান বলেও জানান র‌্যাবের কর্মকর্তা মুফতি।

(ঢাকাটাইমস/০২ডিসেম্বর/এসএস/ইএস/এআর)