জামালপুর-৫

দুই প্রার্থী নিয়ে বিপাকে আওয়ামী লীগ

সাইমুম সাব্বির শোভন, জামালপুর
 | প্রকাশিত : ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৫:৪৬

জামালপুর-৫ (সদর) আসনে দুইজন প্রার্থী নিয়ে বিভ্রান্তিতে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা। দ্রুত একজনকে বেছে নেয়ার দাবি আছে তাদের। বলছেন, প্রার্থী নিশ্চিত না হওয়ায় মাঠে নামতে দ্বিধায় রয়েছেন বহু নেতাকর্মী।

দেশের যে কয়টি আসনে আওয়ামী লীগ বিকল্প প্রার্থী রেখেছে তার মধ্যে আছে এটিও। চারবারের সংসদ সদস্য রেজাউল করিম হীরার পাশাপাশি প্রকৌশলী মোজাফফর হোসেনকেও মনোনয়নের চিঠি দিয়েছে দল। দুটি মনোনয়নপত্রই বৈধ ঘোষিত হয়েছে।

আগামী ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হওয়ার আগেই একজনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হবে। আর এ কারণে উৎকণ্ঠিত দুই নেতার সমর্থকরাই। শেষ পর্যন্ত কে নৌকা পাবেন, সেটা জানতেই এখন চলছে নানা চেষ্টা।

১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে নির্বাচনী প্রচার। কিন্তু এরই মধ্যে সারাদেশেই বলতে গেলে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নানাভাবে পরোক্ষ জনসংযোগ শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু জামালপুরে নিশ্চিত না হয়ে পুরোদমে মাঠে নামছে না কোনো পক্ষই।

এই আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্গই বলা যায়। প্রবীণ রাজনীতিক হীরা বারবার নিজের জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিয়েছেন এখানে। ২০০৮ সালে বিএনপির প্রার্থী সিরাজুল হককে এক লাখ ১৭ হাজার ভোট হারিয়ে চতুর্থ দফা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এই সংগঠক।

আওয়ামী লীগের টানা দুই মেয়াদের প্রথম আমলে মন্ত্রিসভাতেও স্থান পান হীরা। দায়িত্ব পালন করেন ভূমিমন্ত্রী হিসেবে।

জামালপুরে পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত হীরা। ২০ বছর ধরে জনপ্রতিনিধি থাকাকালে দুর্নীতির অভিযোগ নেই বলে দাবি তার সমর্থকদের।

রাজনীতিক হিসেবেও তিনি দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছেন বহু আগে থেকেই। আশির দশকে জামালপুর জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে মহকুমা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করে আসছেন।

জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, অর্থনৈতিক অঞ্চল, তিনটি বাইপাস সড়ক নির্মাণসহ এলাকার নানা উন্নয়ন হয়েছে তার আমলেই।

তবে এবার আওয়ামী লীগেই প্রার্থী পাল্টানোর দাবি উঠেছে। দলের একটি অংশ প্রকাশ্যেই হীরার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ঢাকায় গণভবনের সামনেও তারা নানা কর্মসূচি পালন করে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন।

এই পরিস্থিতিতে শিল্পপতি মোজাফফর হোসেনকেও দেয়া হয়েছে মনোনয়নের চিঠি। তবে তিনি এলাকায় থাকেন কম। ঢাকাতেই অবস্থান করেন বছরের সিংহভাগ সময়। যদিও ভোটের আগে তিনি এবার বেশ সক্রিয়।

দুই প্রার্থীর চূড়ান্ত মনোনয়নের বিষয়ে আশাবাদী। ঢাকা টাইমসকে হীরা বলেন, ‘আমি চারবারের এমপি, একবার মন্ত্রী ছিলাম। এলাকার উন্নয়ন করেছি। আমি শতভাগ আশাবাদী দল আমাকেই মনোনয়ন দেবে। আর আসনটি ধরে রাখতে হলে আমার বিকল্প নেই।’

একই আশায় মোজাফফরও। তিনি বলেন, ‘আমি এখনও শতভাগ আশাবাদী মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে। আর মার্কা পেলে দুই একজনের যদি রাগক্ষোভ থাকেও, তারপরও তারা আমার পক্ষে কাজ করবে দলের স্বার্থে। এমনকি রেজাউল করিম হীরা সাহেবকেও আমি পাশে পাব।’

জামালপুর সদর আসনের দুই প্রার্থী নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বিশিষ্ট আইনজীবী মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ ঢাকা টাইমসকে বলেন, তিনি নিজেও এবার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু দলের সমর্থন পাননি। আর দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাঁচটি আসনেই দলের প্রার্থীদের বিজয়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

এই নেতা বলেন, ‘যেহেতু সদর আসনটি জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন, সেজন্য এখানে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির যোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন পাবেন বলে আমরা আশা করি।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :