এবার ১২ পুলিশের বিরুদ্ধে রিজভীর অভিযোগ

প্রকাশ | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৬:৩৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আগামী জাতীয় নির্বাচনে কারচুপি করতে ১২ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়ার তথ্য পেয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এরা কোন পদমর্যাদার, সেটি উল্লেখ করলেও কারো নাম বলেননি তিনি।

গতকাল রাজধানীতে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিএনপির মুখপাত্র। সম্প্রতি অফিসার্স ক্লাবে প্রশাসন ও পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বৈঠক করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন রিজভী। এমনকি সেখানে কী আলোচনা হয়েছে সেটিও জানার দাবি করেন তিনি।

এই অভিযোগ তোলার পর কয়েকজন সচিবের পক্ষ থেকে রিজভীকে উকিল নোটিশ পাঠানো হয়। নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ কয়েকজন আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেন। এরপর আর বিএনপির পক্ষ থেকে এই বিষয়টি নিয়ে কিছু বলা হয়নি।

রিজভী বলেন, ‘ভোটে কারচুপির জন্য জোন ভাগ করে পুলিশের ১২ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ঢাকা মহানগর, ঢাকা বিভাগ, ময়মনসিংহ বিভাগে এডিশনাল আইজি, ডিআইজি ও এআইজি র‌্যাংকের অফিসারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

‘রাজশাহী ও রংপুর জোনে র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ডিআইজি ও এআইজি পদমর্যাদার অফিসারদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। খুলনা ও বরিশাল জোনেও একইভাবে এসবির অতিরিক্ত আইজি, ডিআইজি এবং সমন্বয়কের দায়িত্বে আছেন পুলিশ সদর দপ্তরের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট জোনগুলোর বৈঠক সম্পন্ন করেছেন।’

‘পুলিশের এই ১২ কর্মকর্তা ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রভিত্তিক আওয়ামী লীগ-বিএনপির তালিকা, কেন্দ্রভিত্তিক হিন্দু ভোটারদের অবস্থান, কেন্দ্রভিত্তিক বিএনপির অবস্থান, কেন্দ্রভিত্তিক বিএনপির প্রভাবশালীদের নামের তালিকা প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।’

রিজভী বলেন, ‘আরও বিভিন্ন বিষয়ে জানা যাচ্ছে যে, গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইকে পর্যবেক্ষকদের তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে গোয়েন্দা সংস্থাটি ইলেকশন ওয়ার্কিং ফোরাম নামে ইসির নিবন্ধিত ২০ সংস্থার ব্যানারে একটি মোর্চা গঠন করেছে। এই মোর্চার অধীন ২০ হাজার দেশীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের তালিকা প্রস্তুত করছে; যারা নির্বাচনের দিন আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোটকেন্দ্রে থাকবেন।’

তিন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে সংশয়

নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন এবং কবিতা খানমকে নিয়েও অভিযোগ তুরেছেন রিজভী। বলেন, ‘এই তিন নির্বাচন কমিশনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তবে তাদের ভূমিকা ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থের পক্ষে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।’

‘প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম নিয়মিত তাদের সঙ্গে ফোনে নির্বাচনের বিভিন্ন ধরনের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে থাকেন বলেও নানা কথা ভেসে বেড়াচ্ছে। সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব তাদের (তিন নির্বাচন কমিশনার) মধ্যে সিনিয়র একজনকে দেয়া হয়েছে।’

‘এই কমিশনারের মাধ্যমে ইসিকে এইচ টি ইমাম (আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান) সব ধরনের নির্দেশনা দেন।’

‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রতিদিন সিইসির (প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা) নিকট বার্তা বাহকের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা পাঠানো হয়।’

সিইসির দপ্তর থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করার দাবি করেন রিজভী। বলেন, ‘রিটার্নিং অফিসারদের নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সেল স্থাপন করা হয়েছে। গত ২ ডিসেম্বর মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট সেলের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়।’

(ঢাকাটাইমস/০৭ডিসেম্বর/বিইউ/ডব্লিউবি)