কুষ্টিয়া হানাদার মুক্ত দিবস কাল

প্রকাশ | ১০ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৪:৫১

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

আজ ১১ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে কুষ্টিয়াকে মুক্ত করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২২টি যুদ্ধ শেষে ১১ ডিসেম্বর বৃহত্তর কুষ্টিয়া মুক্ত হয়েছিল। মুক্তিবাহিনী, ভারতীয় মিত্রবাহিনী কুষ্টিয়া শহর দখলে নিতে শহরতলী চৌড়হাসে পৌঁছালে পাকিস্তান বাহিনীর অ্যাম্বুশে পড়ে। পরে ত্রিমুখী যুদ্ধে পড়ে পাকিস্তান বাহিনী পালিয়ে যায়। মুক্ত হয় কুষ্টিয়া।  

পাকিস্তান বাহিনীর অপারেশন সার্চলাইটের আওতায় ২৫ মার্চ রাত সাড়ে ১১টায় যশোর থেকে পাকবাহিনী এসে কুষ্টিয়া দখল করে নেয়। টানা ৩০ ঘণ্টার জন্য সান্ধ্য আইন জারি করে সশস্ত্র অবস্থায় কুষ্টিয়া শহরে টহল দিতে থাকে। সান্ধ্য আইন ভেঙে মুক্তিকামী মানুষ বেরিয়ে পড়েন রাস্তায়। তৈরি করেন বেরিকেড। বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ ইট-পাটকেল, গাছের গুঁড়ি, ঘরের চাল নিয়ে এসে সেনাবাহিনীর চলাচলে বেরিকেড তৈরি করেন। সেনাবাহিনী সেগুলো সরিয়ে মারমুখী হয়ে যায়। পাকিস্তান বাহিনীর সাথে সাধারণ মানুষের শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ। 

৪ ডিসেম্বর খোকসা, ৭ ডিসেম্বর মিরপুরের আমলা সদরপুর, ৮ ডিসেম্বর দৌলতপুর, মিরপুর, ভেড়ামারা, ৯ ডিসেম্বর কুমারখালী এবং ১১ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া মুক্ত হয়। ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় বিজয় দিবসের পাঁচ দিন আগেই শত্রুমুক্ত হয় এই জনপদ। 

সদর উপজেলা বংশীতলাযুদ্ধসহ ২২টি যুদ্ধ শেষে মুক্তি ও মিত্রবাহিনী কুষ্টিয়া দখল নিতে আসছিল। ঠিক তখন ১০ ডিসেম্বর সকালে কুষ্টিয়া শহরের দক্ষিণে চৌড়হাস এই বিমান চত্বরে মেইন রাস্তার উপর পাক বাহিনীর অ্যাম্বুশে পড়ে তারা। শুরু হয় ত্রিমুখী যুদ্ধ। এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। এখানে মিত্র বাহিনীর ৭০ জন শহীদ হন। ১০ ডিসেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলার সব এলাকা স্বাধীন ও শত্রুমুক্ত হয়। 

১১ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া শহর স্বাধীন ও শত্রুমুক্ত হয়। তাই এ দিন আনন্দের হলেও বেদনারও দিন। কুষ্টিয়া শহরের মিলপাড়ার কহিনূর ভিলায় ১৮ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে নৃশংস হত্যাকা- হয়। এখানে শিশুসহ হত্যা করা হয় মোট ১৬ জনকে। 

বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলা ৮নং সেক্টরের অধীন ছিল। মেজর আবু ওসমান চৌধুরী ৮ নং সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। 

কুষ্টিয়ায় তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদের জোনাল চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ চৌধুরী কালেক্টরেট চত্বরে অফিসিয়ালি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পরে জোনাল কাউন্সিলের সেক্রেটারি এম শামসুল হককে জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বভার দেন তিনি। 

(ঢাকাটাইমস/১০ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)