সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট চান কর্মজীবী নারীরা

প্রকাশ | ১১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৯:০৫

দীপান্বিতা রায়
ফাইল ছবি: ভোট দিতে লাইনে দাড়িয়ে আছেন নারীরা

দিন কুড়ি পর ভোট। শুরু হচ্ছে প্রার্থীদের প্রচার। সমাজের আর সব ভোটারের মতো ভোট নিয়ে ভাবছেন কর্মজীবী নারীরাও। আসন্ন সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে, পাশাপাশি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর উন্নয়নে আরও স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করবেনÑএমনই প্রত্যাশা তাদের।

গোপালগঞ্জের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নাজমা নাইম ও ব্র্যাক ব্যাংকের এক নারী কর্মকর্তা দৃঢ়ভাবে বিশ^াস করেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবেই সম্পন্ন হবে।

নাজমা নাইমের দাবি, ‘সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন বাড়াতে হবে এবং নির্বাচনের পরে আমাদের নারীনেত্রীরা যেন নারীর উন্নয়নে আরও স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করেন।’

তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ নারী সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে এ দাবিগুলো করে আসছে। আমার ব্যক্তিগত প্রত্যাশা হচ্ছে, এগুলো পূরণ হোক।’

সরকারি দল ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন দেওয়ায় কোনো সমস্যা নেই বলে মনে করেন ব্র্যাক ব্যাংকের এক নারী কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠুই হবে। বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা চলে গেলে কী ঘটে, সেটা তো আমরা আগেই দেখেছি। সরকার এবার আর ঝুঁকি না নিয়ে ভালো করেছে।’

তবে এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন পানি উন্নয়ন বোর্ডে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী। তিনি বলছেন, ‘কী আর বলব, সরকার নিজের হাতে ক্ষমতা ধরে রাখলে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করি কী করে? তবু বিএনপি ভোটে এসেছে, এটাই আশার কথা। এই নির্বাচনে অংশ না নিলে তো পাঁচ বছর পরে বিএনপির নাম-নিশানাও থাকবে না। দলটি এবার তাই সুবুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে।’

শিক্ষিকা নাজমা নাইম মনে করছেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে দেশের অনেক উন্নতি হয়েছে, ফের ক্ষমতায় এলে আরও উন্নয়ন ঘটবে। সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় যাবে।’

কিছু আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি ভালো উদ্যোগ। এই মেশিনে কারচুপির আশঙ্কা থাকবে না।’

এদিকে দেশের রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের নিয়ে হতাশাও রয়েছে কর্মজীবী নারীদের মধ্যে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত নাসরিন সুলতানা। ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন হোক আর যা-ই হোক, রাজনৈতিক সংকটের কোনো সমাধান নেই। যে দলই জিতুক না কেন, রাজনীতির গুণগত মানের কোনো পরিবর্তন হবে না। কারণ রাজনীতিবিদেরা সাধারণ মানুষের কথা ভাবেন না। যে দল ক্ষমতায় আসে, তারাই ক্ষমতা ধরে রাখতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালায়।’

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নারী মনে করেন, ‘নির্বাচন আসবে, হরতাল, সংঘর্ষ, মারামারি, আগুন দেওয়াÑএসব হবে। তারপর এক দলের জয়, অন্য দলের পরাজয় ঘটবে। রাজনীতি হলো ক্ষমতায় যাওয়ার প্রতিযোগিতা। এর সঙ্গে সাধারণ মানুষের কোনো যোগসূত্র নেই। যদি থাকত, তাহলে হরতাল হতো না, সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আসত না।’ এর পরও আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হোক, এটাই চাওয়া কর্মজীবী নারীদের।