মিরপুরে বাংলাদেশের হারের কারণ

ক্রীড়া প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১২ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:৩১

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে গতকাল (মঙ্গলবার) চার উইকেটে হারে বাংলাদেশ। মিরপুরে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচটিতে অবশ্য হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুই বল বাকি থাকতে হেরে যায় মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। বাংলাদেশ মূলত হারে শাই হোপের কাছে। ১৪৬ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জেতান এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। এছাড়াও বাংলাদেশের হারের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। নিচে কয়েকটি কারণ তুলে ধরা হলো।

১.ব্যাটিংয়ে ২০ রান কম: উইকেট ব্যাটিং সহায়ক ছিল। কিন্তু সেভাবে রান করতে পারেনি বাংলাদেশ। ২৫৫ রানের জায়গায় দলের স্কোর যদি ২৭০-২৮০ হতো তাহলে ম্যাচটি বাংলাদেশ হয়তো জিততে পারতো। ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ শুরুটা দারুণ করেছিল। ১৯তম ওভারে দলীয় শতরান পূরণ করেছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় উইকেট জুটিতে তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম ১১১ রানের জুটি গড়ে ভালো একটি ভিত গড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু এই দুই ব্যাটসম্যান আউট হয়ে গেলে পরের ব্যটসম্যানরা সেটি ধরে রাখতে পারেননি।

২.সাকিব-রিয়াদের সময়ক্ষেপণ: সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ফেলেন। রিয়াদ ৫১ বল খেলে ৩০ রান করেন। সাকিব শুরুতে সময় নিলেও পরে পুষিয়ে দেন। ৬২ বলে ৬৫ রান করেন তিনি।

৩.স্লগ ওভারে ভালো ব্যাট করতে না পারা: স্লগ ওভারে বাংলাদেশ ভালো ব্যাট করতে পারেনি। ৪০ ওভার শেষে দলের স্কোর ছিল তিন উইকেটে ১৯১। সেখান থেকে সাত উইকেটে ২৫৫ রান সংগ্রহ করে ইনিংস শেষ করে বাংলাদেশ। অর্থাৎ, শেষ দশ ওভার থেকে ৬৪ রান করে টাইগাররা। শেষ দশ ওভারে বাংলাদেশের চারটি উইকেট পড়ে। সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে আট বলে ছয় রান করে আউট হন সৌম্য সরকার। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ১১ বলে ছয় রান করে অপরাজিত থাকেন। ১০ বলে ১০ রান করে অপরাজিত থাকেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

৪.পেসারদের ব্যয়বহুল বোলিং: বাংলাদেশের তিন পেসারই ব্যয়বহুল বোলিং করেন। মাশরাফি বিন মর্তুজা ১০ ওভারে ৫২ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন। রুবেল হোসেন ৯ ওভার বল করে ৫৭ রান দিয়ে নেন দুই উইকেট। ‘কাটার মাস্টার’ মোস্তাফিজুর রহমানও ভালো বল করতে পারেননি। ১০ ওভারে ৬৩ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন তিনি। তবে স্পিনাররা তুলনামূলক ভালো বোলিং করেছেন। সাকিব আল হাসান কোনো উইকেট না পেলেও তার ইকোনোমি রেট ছিল ২.৮০। ১০ ওভার বল করে ২৮ রান দেন তিনি। মেহেদী হাসান মিরাজের বোলিং ইকোনোমি রেট ছিল ৪.৩৩।

৫.ক্যাচ মিস: ক্যাচ মিস বাংলাশের হারের অন্যতম কারণ। রুবেল হোসেনের করা ইনিংসের ৩১তম ওভারে শর্ট ফাইন লেগে শিমরন হেটমায়ারের ক্যাচ মিস করেন ইমরুল কায়েস। ৪৪তম ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে কিমো পলের ক্যাচ মিস করেন নাজমুল ইসলাম অপু। রুবেল হোসেনের করা ৪৮তম ওভারে ডিপ স্কোয়ার লেগে কিমো পলের ক্যাচ মিস করেন অপু।

৬.হোপের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি: ওপেনিংয়ে নেমে ইনিংসের শেষ ওভারে ম্যাচ শেষ করে মাঠ ছাড়েন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান শাই হোপ। ১৪৪ বলে ১৪৬ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে এটি তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। আর ওয়ানডে এটি তার তৃতীয় সেঞ্চুরি। দুর্দান্ত এই ইনিংস খেলায় ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান তিনি।

৭.৪৯তম ওভারে মোস্তাফিজের বাজে বোলিং: শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ২২ রান। এমন সময় ৪৯তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন মোস্তাফিজুর রহমান। এই ওভারে ১৬ রান দেন তিনি। মোস্তাফিজের এই ওভারে তিনটি চার মারেন শাই হোপ। শেষ ওভারে ক্যারিবীয়দের প্রয়োজন ছিল ৬ রান। এই ওভারে বোলিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দুই বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নেয় সফরকারীরা।

সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগামী ১৪ ডিসেম্বর সিরিজের শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। এই ম্যাচে যারা জয় পাবে তারা সিরিজ জিতে নিবে। তিন ম্যাচের সিরিজে এখন ১-১ সমতা রয়েছে। প্রথম ম্যাচে পাঁচ উইকেটে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।

(ঢাকাটাইমস/১২ ডিসেম্বর/এসইউএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :