বোলিংয়ে মিরাজ, ব্যাটিংয়ে তামিম-সৌম্য
বোলিংয়ে আলো ছড়ালেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ব্যাটিংয়ে ঝলক দেখালেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। যার সুবাদে বড় জয় পেল বাংলাদেশ। সিলেটে শুক্রবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে আট উইকেটে হারিয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। এই জয়ের ফলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পেয়েছিল পাঁচ উইকেটে। দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয় পায় চার উইকেটে। ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের এটি চতুর্থ সিরিজ জয়।
শুক্রবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেয়া ১৯৯ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৩৮.৩ ওভারে দুই উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ। ওপেনার তামিম ইকবাল ৮১ রান করে অপরাজিত থাকেন। ৮০ রান করে আউট হন সৌম্য সরকার। লিটন দাস করেন ২৩ রান। ১৬ রান করে অপরাজিত থাকেন মুশফিকুর রহিম।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টের পর ওয়ানডেতেও ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছন অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। শুক্রবার ১০ ওভারে ২৯ রান দিয়ে চার উইকেট শিকার করেন তিনি। দশ ওভারের মধ্যে এক ওভারে মেডেন করেন তিনি। তার বোলিং ইকোনোমি রেট ২.৯০। ওয়ানডেতে এটি তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২২তম ম্যাচে দারুণ এই পারফরম্যান্স উপহার দিলেন তিনি। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এর আগে তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ছিল ৩/৪৬। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে কয়েক দিন আগে ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫৮ রান দিয়ে সাত উইকেট শিকার করেছিলেন মিরাজ। টেস্টে এটি তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। ঢাকা থেকে সিলেটে এসেও ঝলক দেখালেন মিরাজ।
সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে এদিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৯৮ রান সংগ্রহ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৪৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলা ক্যারিবীয় ওপেনার শাই হোপ শুক্রবার ১০৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। ওয়ানডেতে এটি তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। সফরকারীদের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ রান করেন মারলন স্যামুয়েলস।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে মিরাজ ছাড়াও অন্যরা ভালো বোলিং করেছেন। টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ৯ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে দুইটি উইকেট নেন। একটি মেডেন ওভার করেন তিনি। তার বোলিং ইকোনোমি রেট ৩.৭৭। সাকিব আল হাসান ৯ ওভারে ৪০ রান দিয়ে নেন দুইটি উইকেট। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৯ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। মোস্তাফিজুর রহমান উইকেট না পেলেও ভালো বোলিং করেছেন। ১০ ওভারে ৩৩ রান দেন তিনি। এর মধ্যে এক ওভার মেডেন করেন তিনি।
শুক্রবার সিলেটের এই ভেন্যুটির ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয়। সিলেটের অভিষেক দিনে বাংলাদেশের প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন মিরাজ। এরপর তার উপরই বেশি আস্থা রাখেন অধিনায়ক মাশরাফি। পুরোপুরি ১০ ওভারই বোলিং করান তাকে দিয়ে। তবে মিরাজের উপর অধিনায়ক কতোটা আস্থা রেখেছেন তা স্কোরকার্ডে চোখ বুলালেই বোঝা যায়। কারণ উইন্ডিজদের ২৪ ওভার বাকি থাকতেই মেহেদী হাসান মিরাজের স্পেল শেষ করান অধিনায়ক।
অবশ্য সেই আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন মিরাজ। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে প্রথম উইকেট শিকার করেন তিনি। ৯ রান করা ওপেনার হেমরাজকে মিথুনের হাতে ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন এই স্পিনার। এরপর ১৪তম ওভারে সরাসরি বোল্ড করে সাজঘরের পথ দেখান ড্যারেন ব্রাভোকে।
২৪তম ওভারে শিমরন হেটমায়ারকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন তিনি। ছয় বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি হেটমায়ার। মজার বিষয় হলো দুই টেস্টে চার ইনিংসসহ এই নিয়ে চলতি সিরিজে মোট ছয়বার হেটমায়ারকে আউট করলেন মিরাজ। নিজের কোটার শেষ ওভারে ক্যারিবীয় অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েলকেও টিকতে দেননি মিরাজ। এক রানে তাকে সাজঘরে ফিরিয়ে নিজের ক্যারিয়ার সেরা চার উইকেট তুলে নেন ২১ বছর বয়সী এই স্পিনার। দুর্দান্ত বোলিং করায় ম্যাচসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পান মেহেদী হাসান মিরাজ। আর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করার সিরিজ সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পান ওয়েস্ট ইন্ডিজের শাই হোপ।
(ঢাকাটাইমস/১৪ ডিসেম্বর/এইচএ/এসইউএল)