রাজশাহীর তিন আসনে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি

প্রকাশ | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:০৫

রিমন রহমান, রাজশাহী

রাজশাহীতে সংসদীয় আসন ছয়টি। তবে তিনটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। আসনগুলো হলো, জেলার গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলা নিয়ে গঠিত রাজশাহী-১; পুঠিয়া ও দুর্গাপুরের রাজশাহী-৫ এবং বাঘা ও চারঘাট নিয়ে গঠিত রাজশাহী-৬।

আসনগুলোর প্রতিটিতেই রয়েছে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী। তবে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইকালে তাদের প্রার্থিতা বাতিল হলে পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে তারা প্রার্থিতা ফিরে পান। এই তিন প্রার্থীকে নির্বাচনে পেয়ে উজ্জীবিত বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি আসনটির টানা দুবারের এমপি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আমিনুল হক এ আসনের টানা তিনবারের সাবেক এমপি। নির্বাচনে তাদের লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। ফারুক চৌধুরী ২০০১ সালে প্রথম নির্বাচনে নেমে আমিনুল হকের কাছে পরাজিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় আত্মগোপনে থাকায় ব্যারিস্টার আমিনুল হক প্রার্থী হতে পারেননি। তার ভাই এম এনামুল হককে পরাজিত করে এমপি হন ফারুক চৌধুরী। পরের নির্বাচনেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হন তিনি।

এবার পুরনো দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আবার মুখোমুখি। তাই জমজমাট লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা। দুই দিন আগেও পরিস্থিতি এমন ছিল না। মনোনয়ন চাওয়াকে কেন্দ্র করে ঐক্যবদ্ধভাবে এমপির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ছিলেন গোদাগাড়ী-তানোরের নয়জন আওয়ামী লীগ নেতা। বৃহস্পতিবার বিকালে দলীয় এক জনসভায় তারা একমঞ্চে হয়েছেন। নৌকার বিজয়ে তারা ঐক্যবদ্ধভাবেই মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন।

রাজশাহী-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মনসুর রহমান। নিজের প্রথম নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির টানা দুবারের সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফা। রাজশাহী-১ আসনের প্রার্থী আমিনুল হকের মতো নাদিমও পলাতক ছিলেন বলে ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। ফলে সেবার হাতছাড়া হয় আসনটি। এবার তা পুনরুদ্ধারে নেমেছেন নাদিম মোস্তফা।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. মনসুর নতুন মুখ হলেও তাকে নিয়ে দলের ভেতর কোনো বিভেদ নেই। তাই সংসদ নির্বাচনে এখানেও ধানের শীষ আর নৌকার লড়াই হবে জমজমাট।

রাজশাহী-৬ আসনে টানা তৃতীয় জয়ের জন্য নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহরিয়ার আলম। দীর্ঘদিন ধরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ স্থানীয় আওয়ামী লীগ, জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের আবু সাঈদ চাঁদ প্রথম নির্বাচন করলেও তার রয়েছে বিশাল কর্মী-সমর্থক। তাই এখানেও লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি।

বিএনপির আবু সাঈদ চাঁদের বিরুদ্ধে দুই ডজনের বেশি মামলা চলমান। গত সেপ্টেম্বর থেকে তিনি কারাগারে। সম্প্রতি তার জামিনের আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। তাই কারাগারে থেকেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন চাঁদ। তার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন ছেলে রাকিবুল হাসান অলিভ।

জেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগের শাসন থেকে মুক্তি পেতে চায়। তাই নির্বাচন সুষ্ঠু হলে রাজশাহীর ছয়টি আসনেই ধানের শীষের বিজয় হবে। তবে রাজশাহী-১, ৫ ও ৬ আসনে আমাদের প্রার্থীকে পরাজিত করা কঠিন। এসব নেতাকে প্রার্থী হিসেবে  পাওয়ায় বিএনপির হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক নিজের জীবন দিয়ে হলেও ভোট রক্ষা করতে প্রস্তুত।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজশাহী-১ আসনের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি বলেন, ‘গত ১০ বছরে রাজশাহীসহ সমগ্র দেশে আওয়ামী লীগ সরকার যে উন্নয়ন করেছে তার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্যই জনগণ আবার আমাদের সুযোগ দেবে।’