জাবির বটতলায় ১২০ পদের ভর্তা

প্রকাশ | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৫৫

রাইয়ান বিন আমিন, ঢাকাটাইমস

‘১২০ পদের ভর্তা, গরু, মুরগি, হাঁস, শিং মাছ, রুই মাছ, ইলিশের ভাজি’ প্রতিদিন দুপুরে দোকানিদের এমন হাঁকডাকে সরব হয়ে ওঠে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা। 

তবে ১২০ পদের ভর্তা প্রতিদিন না মিললেও বটতলার ‘ভর্তা উৎসবে’ ভর্তার যে কয় পদ থাকে তা নেহাত কম নয়। বাদাম ভর্তা, ইলিশ ভর্তা, রুই মাছ ভর্তা, মরিচ ভর্তা, চিকেন ভর্তা, কালো জিরা ভর্তা, শুঁটকি ভর্তা, আলু ভর্তা, পেঁপে ভর্তা, ডাল ভর্তা, সরিষা ভর্তা, ধনে পাতা ভর্তা, শিম ভর্তা,  চিংড়ি মাছের ভর্তা, টাকি মাছের ভর্তা, রুই মাছের ভর্তা, রসুন ভর্তা, লইটা শুঁটকিসহ প্রায় ২৫-৩০ পদের ভর্তা মেলে। প্রতিটি ভর্তার দাম মাত্র ৫ টাকা।

বাংলাদেশের প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বল্প মূল্যে খাবারের একমাত্র জায়গা হচ্ছে হলের ক্যান্টিন অথবা ডাইনিং। কিন্তু ব্যতিক্রম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে হলের ক্যান্টিন ছাড়াও বটতলাতে স্বল্পমূল্যে হরেক রকমের সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়। ছোট বড় মিলিয়ে এখানে প্রায় ৫৫টি দোকান আছে। ভর্তার পাশাপাশি এসব দোকানে বিরিয়ানি, তেহারি, খিচুড়ি, খাসির মাংস ও মগজ, গরুর মাংস, হাঁসের মাংস, দুই-তিন পদের মুরগির মাংস, রুই মাছ, ইলিশ মাছ, বোয়াল মাছ, পুঁটি মাছ, শিং মাছ, পাঙ্গাস মাছ, তেলাপিয়া মাছসহ বিভিন্ন রকম সবজি পাওয়া যায়।

এ ছাড়া সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সিঙাড়া, পুরি, পিয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি এবং জিলাপি পাওয়া যায়।

এই বটতলার নামকরণ কবে বা কীভাবে হয়েছে তা জানা না গেলেও লোক মুখে শোনা যায়, আগে এখানে বড় বট গাছ ছিল। সেখান থেকেই এই বটতলার নামকরণ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজধানীখ্যাত ‘বটতলা’ শিক্ষার্থীদের মিলন মেলা। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শিক্ষাথী ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত থাকে এই বটতলা। সেই সঙ্গে চলে গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা। এটিই বটতলার প্রাণ। শুধু শিক্ষার্থীরাই না, বাহিরের দর্শনার্থীরা অন্তত একবারের জন্য হলেও এখান থেকে খেয়ে যান। না হলে এ ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসাটা যেন তাদের অতৃপ্তই থেকে যায়। জাহাঙ্গীরনগরে ঘুরতে এসেছেন অথচ বটতলায় খাননি এমন লোক হয়ত খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাজমুস পিয়াস ও তার দুই বন্ধু প্রথমবারের মতো এখানে ঘুরতে এসেছিলেন। দুপুর হয়ে যাওয়াতে খাওয়া-দাওয়াটাও সেরে ফেললেন। ঢাকা টাইমসকে বললেন, ‘এখানকার নাম অনেক শুনেছি। আজকে ভর্তাসহ অন্যান্য খাবারের স্বাদ উপভোগ করলাম। খাবার অনেক ভালো, দামও অনেক কম। অনেক ভালো লাগল খেয়ে’।

এত কিছুর পরও বটতলার খাবারের মান নিয়ে প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। এখানকার খাবারে মসলার পরিমাণ বেশি দেয়। মাঝে মাঝে বাসি খাবার পরিবেশন করার অভিযোগ উঠে। অন্যদিকে, দর্শনার্থীদের কাছ থেকে ক্ষেত্র বিশেষে দুই থেকে তিন গুণ পর্যন্ত দাম বেশি রাখা হয়। 

বটতলার এসব দোকান আ ফ ম কামালউদ্দিন, মওলানা ভাসানী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের অধীনে। বর্তমানে হল কর্তৃপক্ষ এবং কনজ্যুমার ইউথ অ্যাসোসিয়েশনের নিয়মিত তদাররির ফলে বটতলা এখন অনেকটাই বদলে গেছে। 

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বট তলার ভর্তার স্বাদ নিতে হলো আপনাকে ঢুঁ মারতে হবে ‘বাংলার স্বাদ’, ‘জিসান হোটেল’ কিংবা ‘নূরজাহান হোটেলে’।

(ঢাকাটাইমস/১৬ডিসেম্বর/এজেড)