চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনন্য এক সংগ্রহশালা

প্রকাশ | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:০০

নবাব আব্দুর রহিম, ঢাকাটাইমস

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। ২১০০ একরের পাহাড়ি আর সমতলে গড়ে ওঠা ছায়া সুনিবিড় ক্যাম্পাস। শিক্ষায়, সংস্কৃতিতে বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠ। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পরিধিকে বিস্তৃত করতে এখানে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জাদুঘর।

১৯৭৩ সালে মধ্যযুগের চারটি কামান নিয়ে শুরু হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরের পথচলা। এ ছাড়াও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের পাঠক্রমের সহায়তায় একটি প্রাণিবিদ্যা জাদুঘর এবং সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের সহায়ক হিসেবে একটি সমুদ্রসম্পদ জাদুঘরও রয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।

উপমহাদেশের অসংখ্য নিদর্শনে সমৃদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জাদুঘর। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জাদুঘর বা সংগ্রহশালার যাত্রা এটির মাধ্যমেই। জাদুঘর ভবনটি পাঁচটি গ্যালারিতে বিভক্ত। যেখানে রয়েছে -সমসাময়িক আর্ট গ্যালারি, লোকশিল্প আর্ট গ্যালারি, প্রাগৈতিহাসিক ও প্রতœতাত্ত্বিক আর্ট গ্যালারি, ভাস্কর্য গ্যালারি এবং ইসলামিক আর্ট গ্যালারি।

বর্তমানে এখানে বেলে পাথরের একাধিক ভাস্কর্যসহ বেশকিছু প্রাচীন পাথরের ভাস্কর্য এবং দুটি কামান রয়েছে। জাদুঘরের প্রবেশপথে রয়েছে সম্রাট শাহজাহানের ব্যবহৃত একটি কামান এবং দুটি মুকুটসহ বিচিত্র একটি সিংহাসন। এটি জাদুঘরের সর্বশেষ সংযোজন।

আর্ট গ্যালারিতে রয়েছে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন, কামরুল হাসান, রশিদ চৌধুরী, জিয়া উদ্দীন চৌধুরী ও নিতুন কুন্ডু চৌধুরীর চিত্রকর্ম এবং সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদের ভাস্কর্য।

প্রাগৈতিহাসিক এবং প্রতœতাত্ত্বিক আর্ট গ্যালারিতে প্রাচীনকালের চিত্রকর্ম, জীবাশ্ম, মাটির মূর্তি আছে। আর অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কালের কাঠের মূর্তি, বিষ্ণুমূর্তি, শিবলিঙ্গ প্রভৃতি নিয়ে সজ্জিত ভাস্কর্য গ্যালারিটি।

লোকশিল্প গ্যালারিতে রয়েছে সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতকের তামা, পিতল ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈজসপত্র, বেতের ঝুড়ি, মাটির ভাস্কর্য, মাটির পুতুল প্রভৃতির বিশাল সম্ভার।

আর ইসলামিক আর্ট গ্যালারিতে স্থান পেয়েছে মোঘল আমলের কামান, স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা, হস্তলিখিত কোরআন, মধ্যযুগীয় অস্ত্র, প্রাচীন মসজিদ এবং এগুলোর ধ্বংসাবশেষের ছবি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাদিয়া কানিজ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কেন্দ্রীয় জাদুঘর দেখে আমরা খুব সহজেই প্রাচীন, প্রাগৈতিহাসিক বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারছি। বাঙালি জীবনের নানা ইতিহাস এখানে সংরক্ষিত আছে। যা আমাদের জ্ঞান তৃষ্ণাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।’

কেন্দ্রীয় জাদুঘরটির পরিচালক (কিউরেটর) প্রফেসর ভূঁইয়া ইকবাল ঢাকা টাইমসকে বলেন, উপমহাদেশের নানা দুষ্প্রাপ্য নিদর্শন এখানে সংরক্ষিত আছে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এই জাদুঘরটি গৌরবজনক একটি সংগ্রহশালা।

(ঢাকাটাইমস/১৬ডিসেম্বর/এজেড)