নজরুলময় এক বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশ | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:১২

মেহেদি জামান লিজন, ঢাকাটাইমস

ময়মনসিংহ শহরের অদূরে ত্রিশাল উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের বিদ্রোহী ও জাতীয় কবি কাজী নজরুলের স্মৃতিবহ নামাপাড়া গ্রামে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি জায়গায় রয়েছে কবি নজরুলের স্মৃতি কিংবা কবির উপস্থিতি। বিশ্ববিদ্যালয়টি সংলগ্ন রয়েছে বটতলা। ক্যাম্পাসের এক কোনে প্রাচীন ও সুবিশাল বটগাছ। কথিত আছে এই গাছের নিচে বসেই কবি বাজাতেন বাঁশি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে আছে কবির ম্যুরাল, ছবি, তার গান আর কবিতার বাণী। এখানে স্মৃতিস্তম্ভের নাম ‘চির উন্নত মম শির’, ক্যাফেটেরিয়ার নাম চক্রবাক। অগ্নিবীণা আর দোলনচাঁপা আবাসিক হলের নাম। শিক্ষার্থীদের বাসের নাম প্রভাতি ‘ঝিঙেফুল’, ‘বিদ্রোহী’ ‘প্রলয়শিখা’। মঞ্চের নাম ‘চুরুলিয়া’ ‘গাহি সাম্যের গান’। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মাত্র মেডিকেলের নাম ‘ব্যথার দান’।

এই ক্যাম্পাসে চলতে-ফিরতে, উঠতে-বসতে কবির নাম, ছবি আর তার অমর সাহিত্যকর্মের সঙ্গে প্রতিনিয়ত নতুন করে পরিচিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সকাল হলেই নজরুলের গানের সুর শোনা যায়। ক্যাম্পাসে বসে নজরুলের গানেরচর্চা, ধ্যানে থাকেন নজরুলপ্রেমী শিক্ষার্থীরা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে নজরুলকে জানার ও বোঝার নানা সুযোগ রয়েছে। প্রতিটি বিভাগেই বাধ্যতামূলক কোর্স হিসেবে নজরুল স্টাডিজ পড়তে হয়। নজরুলকে নিয়ে উচ্চতর গবেষণার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইনস্টিটিউট অব নজরুল স্টাডিজ। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে নজরুলের বই নিয়ে আছে আলাদা কর্নার।

দুই বাংলার নজরুলপ্রেমী, নজরুলের গানের শিল্পী, কবি আর নজরুল বিশেষজ্ঞদের পদচারণে ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হয় নজরুল উৎসব। ক্যাম্পাসজুড়ে নজরুল-মুগ্ধতার রং আর সুর ছড়ানো থাকে। এক মঞ্চে যখন নজরুলের জীবন আর কর্ম নিয়ে আলোচনা চলছে, আরেক মঞ্চে তখন নজরুলের গান। গ্যালারিতে চলে শিল্পকর্মের প্রদর্শনী। ত্রিশালে নজরুলকেন্দ্রিক উন্নয়ন পরিবর্তন গোটা এলাকার শিক্ষা ও যোগাযোগ অবকাঠামোসহ ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ নজরুলপ্রেমিক ভক্ত অনুরাগী ও গবেষকদের কাছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় এখন নজরুল গবেষণার চারণভূমি ও পর্যটনের তীর্থস্থান।

(ঢাকাটাইমস/১৬ডিসেম্বর/এজেড)